14-10-16-bd-president_china-prisedent-at-bangabhaban-3

রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ বর্তমান ভারসাম্যহীনতা হ্রাসে চীনের বাজারে বাংলাদেশের সকল পণ্যের শুল্ক ও কোটামুক্ত প্রবেশাধিকার কামনা করেছেন।শুক্রবার সন্ধ্যায় বঙ্গভবনে চীনের সফররত প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং-এর সঙ্গে বৈঠকে রাষ্ট্রপতি হামিদ বলেন, বর্তমান বাণিজ্যিক ভারসাম্যহীনতা হ্রাসে আমরা চীনের বাজারে বাংলাদেশের সকল পণ্যের শুল্ক ও কোটামুক্ত প্রবেশাধিকারের অনুমতির জন্য অনুরোধ জানাচ্ছি।

সন্ধ্যা ৬টা ৪৫ মিনিট থেকে দেড় ঘন্টা স্থায়ী এ বৈঠকে শি জিনপিং বলেন, বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের অংশীদার হিসেবে চীন তার সহযোগিতা অব্যাহত রাখবে।তিনি বলেন, চীনে বাংলাদেশের রফতানি বৃদ্ধির বিষয়টি তাঁর দেশ গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করবে।আবদুল হামিদ বলেন, চীন বাংলাদেশের বৃহত্তম বাণিজ্যিক অংশীদার এবং দু’দেশের মধ্যে বাণিজ্য দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে। তিনি বলেন, আমি মনে করি, আপনার এই সফরের মধ্যদিয়ে আমাদের ঘনিষ্ঠ সার্বিক সহযোগিতার অংশীদারিত্বে এক নতুন যুগের সূচনা হবে।রাষ্ট্রপতি হামিদ বলেন, বাংলাদেশ ও চীনের মধ্যে চমৎকার দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক বিরাজ করছে এবং দু’দেশের বন্ধুত্ব ও সহযোগিতা সময়ের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ।তিনি বলেন, আপনার চীনা স্বপ্নের মতো আমরাও রূপকল্প-২০২১ ও ২০৪১ গ্রহণ করেছি। এর লক্ষ্য হচ্ছেÑ ২০২১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে মধ্যম আয়ের এবং ২০৪১ সালের মধ্যে একটি উন্নত দেশে পরিণত করা। এ ক্ষেত্রে চীনকে আমরা বিশ্বস্ত অংশীদার হিসেবে বিবেচনা করি।

চীনের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের কথা তুলে ধরে আবদুল হামিদ বলেন, পারস্পরিক অক্ষ-তা ও সার্বভৌমত্ব, অনাক্রমণ, একে-অপরের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ না করা, সমতা, পারস্পরিক কল্যাণে সহযোগিতা এবং শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানের শ্রদ্ধার নীতির ভিত্তিতে এ সম্পর্ক প্রতিষ্ঠিত।রাষ্ট্রপতি বলেন, আমরা সবসময়ই চীনের জাতীয় স্বার্থে সে দেশের গুরুত্বপূর্ণ ইস্যুগুলো বিশেষ করে এক-চীন নীতির প্রতি সমর্থন জানিয়ে আসছি।তিনি বলেন, অবকাঠামো উন্নয়ন, বাণিজ্য, বিনিয়োগ, কৃষি, জ্বালানি, বিদ্যুৎ, আইসিটি ও টেলিযোগাযোগ খাতে চীনের সহযোগিতাকে আমরা খুবই গুরুত্ব দিয়ে থাকি। কারণ, এগুলো আমাদের আর্থ-সামাজিক অগ্রগতিকে ইতিবাচক প্রভাব ফেলছে।

বৈঠকে চীনের প্রেসিডেন্ট প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে তাঁর বৈঠকের কথা উল্লেখ করে বলেন, দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক জোরদারে তাঁরা একটি মাস্টার প্লান গ্রহণের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। তিনি বলেন, বাণিজ্য ও কৃষিসহ বিভিন্ন খাতে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক সম্প্রসারণের সুযোগ রয়েছে।৬ বছর আগে ঢাকা সফরের কথা উল্লেখ করে শি জিনপিং বলেন, বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক খাতে বর্তমানে চমৎকার পরিবর্তন এসেছে। বর্তমানে বাংলাদেশ দক্ষিণ এশিয়ার একটি গুরুত্বপূর্ণ দেশ এবং আমাদের দু’দেশের মধ্যে সম্পর্ক আরো জোরদার হবে।বৈঠকে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ এইচ মাহমুদ আলী, পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম, পররাষ্ট্র সচিব, রাষ্ট্রপতির সামরিক সচিব এবং সচিববৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।পরে শি জিনপিং রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ আয়োজিত ভোজসভায় যোগ দেন। ভোজসভায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সাবেক রাষ্ট্রপতি হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ, স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী, প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা, মন্ত্রিসভার সদস্য এবং বিভিন্ন দেশের কূটনীতিকরা যোগ দেন।