সরকার বিচারবহির্ভূতভাবে সন্দেহভাজন জঙ্গিদের হত্যা করছে অভিযোগ তুলে এধরনের ঘটনাকে মানবতাবিরোধী অপরাধের সঙ্গে তুলনা করেছেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান খন্দকার মাহবুব হোসেন। জাতীয় প্রেস ক্লাবের ভিআইপি লাউঞ্জে ‘অল কমিউনিটি ফোরাম’ এর উদ্যোগে সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীসহ আটক নেতাকর্মীদের মুক্তির দাবিতে আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
শনিবার গাজীপুর, আশুলিয়া ও টাঙ্গাইলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অভিযানে ১১ জঙ্গি নিহত হওয়ার প্রসঙ্গে খন্দকার মাহবুব হোসেন বলেন, এর পেছনে যে রহস্য রয়েছে, সেই রহস্য উৎঘাটন না করে অকাতরে যেভাবে হত্যা-গুম করা হচ্ছে, একজন আইনজীবী হিসেবে আমি মনে করি, এটা মানবতাবিরোধী অপরাধ হচ্ছে।হয়তোবা এমনও দিন আসতে পারে, এই নির্বিচারে হত্যাকান্ড, এই বিনাবিচারে হত্যাকান্ড, এই সংবিধানের পরিপন্থি হত্যাকা-ের জন্য তাদের আন্তর্জাতিক আদালতে বিচারের সম্মুখীন হতে হবে।
শনিবার গাজীপুর সিটি করপোরেশনের নোয়াগাঁও পাতারটেক এলাকায় পুলিশ ও সোয়াটের অভিযানে সন্দেহভাজন সাত জঙ্গি ও হাড়িনাল পশ্চিমপাড়ার লেবুবাগানে র্যাবের অভিযানে দুইজনের মৃত্যু হয়। এছাড়া একই দিন আশুলিয়ায় একজন ও টাঙ্গাইলে দুই সন্দেহভাজন জঙ্গি র্যাবের অভিযানে মারা যায়।এভাবে জঙ্গিদের হত্যার পেছনে সরকারের উদ্দেশ্য নিয়ে প্রশ্ন তোলেন তিনি। কেন এদের হত্যা করা হলো? তারা কী এতই শক্তিশালী যে তাদেরকে জীবিত আমাদের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী গ্রেপ্তার করতে পারলেন না। তাদের উদ্দেশ্যটা কী?এর উদ্দেশ্য সরকার একটা নাটক সৃষ্টি করতেছে। এই নাটক সৃষ্টি করে মানুষের মনে ধোঁকা দিয়ে দেখাচ্ছে তারা জঙ্গি নির্মূল করছে।
খন্দকার মাহবুব হোসেন অভিযোগ করে বলেন, জঙ্গিদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে এমন লোকজনের সম্পৃক্ততা বেরিয়ে আসতে পারে, যা সরকারের জন্য বিব্রতকর হবে; এ কারণে জঙ্গিদের মেরে ফেলা হচ্ছে।তিনি বলেন, সন্দেহভাজন যেসব জঙ্গির খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে, তাদেরই মেরে ফেলা হচ্ছে। তারা আত্মহত্যা করছে কি নাÑসেটিও পরিষ্কার নয়। তাদের মেরে ফেলা হলে জঙ্গিবাদের মূলে যাওয়ার সূত্র পাওয়া যাবে না। তিনি বলেন, মানুষ সন্দেহ করছে জঙ্গিদের মেরে ফেলার কারণÑতাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে হয়তো এমন লোকজনের সম্পৃক্ততা বেরিয়ে আসবে, যা সরকারের জন্য বিব্রতকর হতে পারে। ইতিমধ্যে আওয়ামী পরিবারের লোকজনের নাম এসেছে।বিএনপির এই নেতা সমূলে জঙ্গিবাদ উৎখাত করার আহ্বান জানান। তিনি দাবি করেন, আওয়ামী লীগের আমলে জঙ্গিবাদের উত্থান হয়। বিএনপি জঙ্গিবাদ দমনে সফল ছিল।
খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে দায়ের বিভিন্ন মামলার প্রসঙ্গ টেনে এই জ্যেষ্ঠ আইনজীবী বলেন, আমি সর্তক করে দিচ্ছি, বেগম খালেদা জিয়া, তারেক রহমানসহ বিরোধীদলের নেতানেত্রীদেরকে যদি তারা সাজা দেওয়ার ব্যবস্থা করে থাকেন, তার পরিণতি শুভ হবে না। এটা হলে দেশে একটা ভয়াবহ অবস্থার সৃষ্টি হবে।
অল কমিউনিটি ফোরামের’ সভাপতি আশরাফ উদ্দিন বকুলের সভাপতিত্বে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা জয়নুল আবদীন ফারুক, যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল প্রমুখ আলোচনায় অংশ নেন।