বাংলাদেশের দুই স্থপতির নকশায় গড়া ঢাকার বায়তুর রউফ মসজিদ এবং গাইবান্ধার ফ্রেন্ডশিপ সেন্টার জিতে নিয়েছে সম্মানজনক আগা খান স্থাপত্য পুরস্কার।স্থপতি মেরিনা তাবাশ্যুমের করা বায়তুর রউফ মসজিদের নকশায় রয়েছে সুলতানি স্থাপত্যের অনুপ্রেরণা। আর ফ্রেন্ডশিপ সেন্টারের নকশায় স্থপতি কাশেফ মাহবুব চৌধুরী এনেছেন মহাস্থানগড়ের আবহ।
বিশ্বের ৩৪৮টি স্থাপত্যকর্ম থেকে জুরিদের বাছাই করা ১৯টি স্থাপনার সংক্ষিপ্ত তালিকায় মেরিনা আর কাশেফের নাম এসেছিল মে মাসে। চূড়ান্ত বিচার শেষে সোমবার আবু ধাবিতে এবারের ছয় বিজয়ীর নাম ঘোষণা করা হয়। বিদেশিদের নকশায় গড়া বাংলাদেশের তিনটি স্থাপত্যকর্ম এর আগে ত্রিবার্ষিক এ পুরস্কার পেলেও মেরিনা ও কাশেফ প্রথম বাংলাদেশি, যারা আগা খান স্থাপত্য পুরস্কার পেলেন। মেরিনা তাবাশ্যুম ও কাশেফ মাহবুব চৌধুরী দুজনেই বুয়েট থেকে স্থাপত্যবিদ্যায় লেখাপড়া শেষ করেছেন ১৯৯৫ সালে। পরে তারা একসঙ্গে গড়ে তোলেন আর্কিটেক্ট ফার্ম আরবানা।দীর্ঘ দিনের বন্ধুত্বের পর ১৯৯৭ সালে বিয়ে করে সংসার শুরু করেন এই স্থপতি জুটি। সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের স্বাধীনতাস্তম্ভ ও স্বাধীনতা জাদুঘরের নকশা তারা করেছেন যৌথভাবে।২০০৫ সালে বিচ্ছেদের পর আরবানা থেকেও আলাদা হয়ে যান মেরিনা। গড়ে তোলেন নিজের প্রতিষ্ঠান ‘মেরিনা তাবাশ্যুম আর্কিটেক্টস’।
বাংলাদেশের আর সব মসজিদের মত মেরিনার নকশায় গড়া বায়তুর রউফ মসজিদে গম্বুজ বা মিনার নেই। আটটি পিলারের ওপর নির্মিত এই মসজিদে আলো হাওয়া খেলার যে ব্যবস্থা তিনি রেখেছেন, তা আগা খান পুরস্কারের জুরি বোর্ডের প্রশংসা কুড়িয়েছে।আর গাইবান্ধার ফুলছড়ি উপজেলার মদনেরপাড়া গ্রামে কাশেফের নকশায় গড়ে তোলা ফ্রেন্ডশিপ সেন্টার মূলত একটি এনজিও ট্রেইনিং সেন্টার। স্থানীয়ভাবে হাতে তৈরি ইট, কাঠ আর পাথরের মিশেলে অনেকগুলো ব্লকে ভাগ করা এ স্থাপনায় সব ছপিয়ে নজর কাড়ে সবুজের সমারোহ।আগা খান ডেভেলপমেন্ট নেটওয়ার্ক তাদের ওয়েবসাইটে জানিয়েছে, আসছে নভেম্বরে আবু ধাবির ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সাইট আল জাহিলি ফোর্টে এবারের বিজয়ীদের হাতে পুরস্কার তুলে দেওয়া হবে। পুরস্কার বাবদে তারা পাবেন ১০ লাখ মার্কিন ডলার।