%e0%a6%ac%e0%a6%b0%e0%a6%bf%e0%a6%b6%e0%a6%be%e0%a6%b2%e0%a7%87%e0%a6%b0-%e0%a6%a1%e0%a7%81%e0%a6%ac%e0%a7%87-%e0%a6%af%e0%a6%be%e0%a6%93%e0%a7%9f%e0%a6%be-%e0%a6%b2%e0%a6%9e%e0%a7%8d%e0%a6%9a

বরিশালের বানারীপাড়া উপজেলায় সন্ধ্যা নদীতে ডুবে যাওয়া লঞ্চটি উদ্ধার করা হয়েছে। ভেতরে পাওয়া গেছে চার শিশুর লাশ। এ নিয়ে মোট ১৭ জনের লাশ উদ্ধার করা হলো।বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে আটটার দিকে লঞ্চটি উদ্ধার করা হয়। বুধবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে এমএল ঐশী নামের ছোট লঞ্চটি ডুবে যায়। ওই দিন রাত নয়টা পর্যন্ত ১৩ জনের লাশ উদ্ধার করা হয়।

উদ্ধার হওয়া চার শিশু হলো মো. সাফুয়ান (৩), মো রিয়াদ (৬ ), মো. রাব্বি (৫) ও ১৪ মাস বয়সের মাইশা। বুধবার উদ্ধার হওয়া ১৩ জনের মধ্যে নয়জনের পরিচয় মিলেছে। তাঁরা হলেন বানারীপাড়া উপজেলার সাতবাড়িয়া ইউনিয়নের সাগর মির (২৫), ফিরোজা বেগম (৫০); উত্তর হাড়তা গ্রামের সুখদেব মল্লিক (৪০), মোজাম্মেল মোল্লা (৬০); স্বরূপকাঠি ইউনিয়নের রাবেয়া খাতুন (৪৫); জিরাকাঠি ইউনিয়নের রেহানা বেগম (৩০), জয়নাল হাওলাদার (৬০); মজিবাড়িয়া গ্রামের কোহিনূর বেগম (৪৫) ও শান্তা (৭)। অন্যদের পরিচয় মেলেনি। এর আগে বুধবার শাফোয়ানের (৩) বাবা মিলন ঘরামীর (৪০) লাশ উদ্ধার করা হয়।বানারীপাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জিয়াউল আহসান চারজনের লাশ উদ্ধারের তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে নয়টার দিকে অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মো. জাকির হোসেন জানান, লঞ্চ উদ্ধার অভিযান শেষ হয়েছে।

বরিশাল ফায়ার সার্ভিসের সহকারী পরিচালক মো. ফারুক হোসেন শিকদার বলেন, এখনো কয়েকজন নিখোঁজ রয়েছেন। তাঁদের উদ্ধারের চেষ্টা চলছে।বুধবার প্রায় ৫০ জন যাত্রী নিয়ে একটি লঞ্চ সন্ধ্যা নদীতে ডুবে যায়। ঘটনাস্থলে উদ্ধার অভিযান চালায় ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স এবং বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ)। তবে নদীতে প্রবল ¯্রােতের কারণে উদ্ধারকাজ ব্যাহত হয়।দুর্ঘটনাকবলিত লঞ্চের বেঁচে যাওয়া যাত্রীরা বলেন, বুধবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে এমএল ঐশী নামের ছোট আকারের লঞ্চটি বানারীপাড়া থেকে প্রায় ৫০ জন যাত্রী নিয়ে উজিরপুর উপজেলার হাড়তার দিকে যাচ্ছিল। পথে সৈয়দকাঠি ইউনিয়নের দাসেরহাট ঘাটে যাত্রী নামাতে যাওয়ার পথে তীরের কাছাকাছি গিয়ে লঞ্চটি ডুবে যায়।

লঞ্চটি ডুবে যাওয়ার পর সাঁতরে তীরে ওঠা আলেয়া বেগম বলেন, বানারীপাড়া থেকে স্বামীর সঙ্গে লঞ্চে ওঠেন তিনি। দাসেরহাট ঘাটে ভিড়তে গিয়ে নদীর পাড়ের একটি বড় অংশজুড়ে মাটি ভেঙে পড়লে সেখানে ঘূর্ণিপাকের সৃষ্টি হয়। এতে ¯্রােতের তোড়ে লঞ্চটি ডুবে যায়। তিনি সাঁতরে তীরে উঠতে পারলেও তাঁর স্বামী নিখোঁজ রয়েছেন।সৈয়দকাঠি ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান আবদুল মান্নান মৃধা বলেন, যাত্রী নামাতে দাসেরহাট ঘাটে ভিড়ছিল লঞ্চটি। এ সময় হঠাৎ করে নদীর পাড়ের অনেকটা মাটি ভেঙে পানিতে পড়ে। এতে লঞ্চটি ভারসাম্য হারিয়ে ফেলে এবং ¯্রােতের তোড়ে ডুবে যায়।

বরিশালে ডুবন্ত লঞ্চ টেনে তোলার পর আরও চারজনের লাশ পাওয়া গেছে; নিহতের সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ১৮ জন। সমাপ্ত ঘোষণা করা হয়েছে উদ্ধার অভিযান।বিআইডব্লিউটিএর বরিশাল বন্দর কর্মকর্তা মোস্তাফিজুর রহমান জানান, বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ৮টার দিকে সন্ধ্যা নদীতে ডুবন্ত লঞ্চটি টেনে ওপরে তোলা হয়।

বুধবার দুপুরে বানারীপাড়া উপজেলার দাশেরহাটের মসজিদবাড়ি ঘাটে যাত্রী ওঠানোর সময় এমএল ঐশী নামের লঞ্চটি ডুবে যায়।দিনভর তল্লাশি চালিয়ে প্রথম দিন ১৪ জনের লাশ উদ্ধার করা হয়। আরও ২৫ জন নিখোঁজ থাকার কথা জানানো হয় পুলিশের পক্ষ থেকে।বন্দর কর্মকর্তা মোস্তাফিজুর বলেন, বৃহস্পতিবার ভোরে উদ্ধারকারী যান নির্ভীক ঘটনাস্থলে এসে ডুবন্ত লঞ্চটি টেনে তোলার কাজ শুরু করে।প্রায় তিন ঘণ্টার চেষ্টায় লঞ্চটি টেনে তোলার পর ভেতরে তল্লাশি চালিয়ে চার শিশুর লাশ পাওয়া যায়।টেনে তোলার পর লঞ্চটি নির্ভীকের সঙ্গে বেঁধে রাখা হয়েছে।এরপর সকাল সোয়া ১০টায় অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট জাকির হোসেন উদ্ধার অভিযান সমাপ্ত ঘোষণা করেন। বন্দর কর্মকর্তা মোস্তাফিজুর এর আগে বলেছিলেন, একটি ট্রলারের কাঠামো পাল্টে লঞ্চটি তৈরি করা হয়েছে।ঘটনা তদন্তে অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট জাকির হোসেনকে প্রধান করে ৯ সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়েছে বলে বরিশালের জেলা প্রশাসক গাজী মো. সাইফুজ্জামান জানিয়েছেন।