বরিশালের বানারীপাড়ায় সন্ধ্যা নদীতে লঞ্চডুবির পর নারী ও শিশুসহ ১৪ জনের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে; নিখোঁজ রয়েছেন আরও বেশ কয়েকজন।বুধবার বেলা ১২টার দিকে এ দুর্ঘটনা ঘটে বলে বরিশালের এসপি এস এম আক্তারুজ্জামান জানান। বুধবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে বানারীপাড়া উপজেলার সৈয়দকাঠি ইউনিয়নের মসজিদবাড়ি গ্রামের দাসেরহাট এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে।এ ঘটনা তদন্তে বরিশাল জেলা প্রশাসন নয় সদস্যের একটি কমিটি গঠন করেছে। পুলিশের ধারণা, ১৫ থেকে ২০ জন যাত্রী নিখোঁজ রয়েছেন।
নিহতরা হলেন- সুকদেব (৪০), রাজ্জাক হাওলাদার (৬০), শান্তা আক্তার (১০), ফিরোজা বেগম (৫০), কোহিনূর বেগম (৪৫), রেহেনা বেগম (৩০), সালেহা বেগম (৬০), সাগর (২৫), মোজাম্মেল মোল্লা (৬০), রাবেয়া বেগম (৪৫), জয়নাল হাওলাদার (৫৮), মিলন ঘরামী (৪০) ও হীরা বেগম (২৫)। বানারীপাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. জিয়াউল আহসান বলেন, এমএল ঐশী নামের ছোট আকারের লঞ্চটি বানারীপাড়া থেকে প্রায় ৫০ জন যাত্রী নিয়ে উজিরপুর উপজেলার হারতার দিকে যাচ্ছিল। পথে দাসেরহাট ঘাটে যাত্রী নামাতে গিয়ে তীরের কাছাকাছি ডুবে যায়।
স্থানীয় কয়েকজন জানান, নদীর ভাঙন ও ¯্রােতের টানে লঞ্চটি ডুবে যায়। নদী থেকে নারী, শিশুসহ ১৪ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। জীবিত পাঁচজনকে উদ্ধার করা হয়েছে। নিখোঁজ অনেকে। পরে বরিশাল থেকে ফায়ার সার্ভিসের একটি দল ও ডুবুরিরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে উদ্ধারকাজে যোগ দেন।তীরে ওঠা পাঁচজনের একজন আলেয়া বেগম জানান, বানারীপাড়া থেকে স্বামীর সঙ্গে তিনি লঞ্চে ওঠেন। দাসেরহাটে ঘাটে ভিড়তে গিয়ে নদীর পাড়ের একটি বড় অংশ ভেঙে পড়ে। এতে লঞ্চটি ডুবে যায়। তবে তিনি সাঁতরে তীরে উঠতে পারলেও স্বামী এখনো নিখোঁজ।
বানারীপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. শহীদুল ইসলাম বলেন, দুর্ঘটনার পরপরই উদ্ধার অভিযান শুরু হয়েছে। তীব্র ¯্রােতের কারণে বিকেল পর্যন্ত লঞ্চটির সন্ধান পাওয়া যায়নি। উদ্ধার অভিযানে ফায়ার সার্ভিসের কর্মী ও ডুবুরিরা অংশ নিয়েছেন।নৌবাহিনীকে সংবাদ দেওয়া হয়েছে। উদ্ধারকাজ অব্যাহত আছে।এসপি আক্তারুজ্জামান বলেন, বানারীপাড়া থেকে এমএল ঐশী নামের লঞ্চটি উজিরপুরের হাবিবপুর যাচ্ছিল।সন্ধ্যা নদীর দাশেরহাটের মসজিদবাড়ি পয়েন্টে ঘাটে যাত্রী ওঠানোর সময় কাত হয়ে লঞ্চটি ডুবে যায়।তিনি বলেন, বানারীপাড়া ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরিরা উদ্ধার কাজ চালাচ্ছেন।
নৌ পুলিশের সহকারী সুপারিনটেনডেন্ট মোতালেব হোসেন জানান, এ পর্যন্ত ১৪ জনের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। এর মধ্যে ছয় জন নারী, একজন কিশোরী রয়েছে। জেলা প্রশাসক কাজী মো. সাইফুজ্জামান জানান, অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট জাকির হোসেনকে প্রধান করে নয় সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তাদের সাত কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।নিহতদের প্রতিজনের দাফন-কাফনের জন্য জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে তাদের পরিবারকে ১০ হাজার টাকা করে দেওয়া হবে বলে জানান তিনি।
বিআইডব্লিউটিএ এর বন্দর কর্মকর্তা মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ট্রলারকে কাঠামো পরিবর্তন করে লঞ্চ করা হয়েছে। তবে কর্তৃপক্ষ এ বিষয়ক কোনো কাগজপত্র দেখাতে পারেনি।