03-09-16-Bhola_Monpura-2

মৎস্য সম্পদের অভয়ারণ্য হিসেবে খ্যাত ভোলার জেলার দ্বীপ উপজেলা মনপুরার মেঘনায় জেলেদের জালে ধরা পড়ছে ঝাঁকে ঝাঁকে রূপালী ইলিশ। হঠাত মেঘনায় প্রচুর মাছ পড়তে শুরু করায় জেলেরা পূর্ণোদ্যমে মাছ শিকারের ব্যস্ত সময় পারকরছেন। মাছ বিক্রির টাকায় সংসারের অভাব অনটনের বোঝা হালকা হতে শুরু করায় মনপুরার জেলে পল্লীতে বইছে খুশীর বন্যা। আড়তদারদের মাঝেও দেখা গেছে খুশির আমেজ। মেঘনায় মাছ বৃদ্ধি পাওয়ায় জেলেরা রাত দিন মেঘনা পাড়ে চায়ের দোকানে ব্যাস্ত সময় পার করছেন। কখন সময় হবে মেঘনায় জাল ফেলার। প্রচুর মাছ পাওয়ায় জেলে ও আড়তদার এখন শুধু ব্যাস্ত।

মনপুরায় প্রায় ২০ সহস্রাধিক জেলের বসবাস হলেও মৎস্য অফিস সূত্রে জানাযায়, ১০হাজার ৫৬৬ জন জেলে নিবন্ধিত হয়েছে। লক্ষাধিক লোকের এই আবাসভূমিতে শতকরা প্রায় ৭০ জন লোক প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে মৎস্য সম্পদের উপর নির্ভরশীল। মেঘনায় প্রচুর মাছ ধরা পড়ায় সকল পেশার লোকের মাঝে আর্থিক স্বচ্ছলতা দেখা দেখা যায়। ব্যাবসায়ী থেকে শুরু করে সকলে দেনা –পাওণার হিসাব কসতে শুরু করেছেন। মেঘনায় মাছ ধরা পড়লে এখানকার মানুষের ভালভাবে বেঁচে থাকতে সক্ষম হয়। এবারের মৎস্য মৌসুমের শুরুতে জেলেদের জালে ইলিশের তেমন একটা দেখা মেলেনি। ঈদের আগ মুহুর্তে জেলেদের জাল ইলিশের ছোয়া এমনভাবে স্পর্শ করেছে যে তাদের মুখের কালো আভা দূর হয়ে রঙ্গীন হাসির ঝিলিক ফুটেছে।

সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়,জনতা বাজার,মাঝেরঘাট,হাজিরহাট ও রামনেওয়াজ মৎস্য আড়তে জেলেরা মেঘনা থেকে মাছ ধরে ঘাটে আসলে আড়তের লোকজন লাই সাজি (লাই হাজি) মাথায় করে মাছ ভর্তি করে আড়তে নিয়ে আসেন। জেলে ও আড়তদার সকলের মুখে যেন হাসির ঝিলিক বইছে। প্রতিটি ট্রলার বা নৌকায় গড়ে বড় সাইজের ইলিশ ৪/৫ হালি ও ছোট সাইজের ১৫/২০ হালি মাছ আড়তদারদের গধিঘরে দিচ্ছেন। বড় সাইজের প্রতি হালি(৪টা) গড়ে ২ হাজার টাকা ও ছোট সাইজের প্রতি হালি ৪শত টাকা করে বিক্রি করছেন। গড়ে প্রতি ট্রলার থেকে জেলেরা দৈনিক ১৪ হাজার থেকে ১৮ হাজার টাকার মাছ বিক্রি করছেন। এতে জেলেরাও ভালো টাকা পাচ্ছেন অন্যদিকে আড়তদার ও বেশ লাভবান হচ্ছেন।

মৌসুমের শুরুতেই জেলেদের জালে ইলিশ ছোয়া তেমন একটা দেখা যায়নি। তখন সংসার চালাতে হিমসিম খেতে হয়েছে জেলেদের। লক্ষ লক্ষ টাকা মেঘনায় বিনিয়োগ করে মেঘনায় মাছ না পড়ায় আড়ৎদারদের মরি মরি অবস্থা। ফলে আট সাট বেঁধে জেলেরও মেঘনায় ঝাপিয়ে পড়েছে ইলিশ ধরতে। মাইনুদ্দিন মাঝি,জসিম মাঝি,রাকিব মাঝির সাথে আলাপ করলে তারা বলেন,দীর্ঘদিন পরে হলেও আল্লাহতায়ালা আমাদের দিকে মুখ তুলে তাকিয়েছেন। আমরা প্রচুর মাছ পাচ্ছি। এভাবে মাছ পড়লে আমরা দায়দেনা পরিশোধ করতে পারব। ঈদে ছেলে-মেয়েদের সাথে ভালোভাবে ঈদ কাটাতে পারব।

আড়ততদার নিজামউদ্দিন হাওলাদার ও মোশারফ হোসেন সাথে আলাপ করলে বলেন,এভাবে অভিযানের আগ পর্যন্ত ইলিশ পাওয়া গেলে জেলেরা ভালো একটা টাকা পাবেন। অনেকেই দায়দেনা পরিশোধ করতে পারবেন। তবে ঈদের আগ মুহুর্ত হওয়ায় দাম একটু কম।