BGB1

মানবতাবিরোধী অপরাধে মৃত্যুদন্ডপ্রাপ্ত মীর কাসেম আলীর ফাঁসি কার্যকরের আগে নিরাপত্তা জোরদারের অংশ হিসেবে রাজধানী ঢাকা ও গাজীপুরে বর্ডার গার্ড অব বাংলাদেশ (বিজিবি) মোতায়েন করা হয়েছে। বিজিবির জনসংযোগ কর্মকর্তা মোহসীন রেজা শনিবার এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। মোহসীন রেজা বলেন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষার স্বার্থে সন্ধ্যার পরপরই রাজধানীতে ছয় প্লাটুন বিজিবি মোতায়েন করা হয়েছে। আর গাজীপুর জেলা প্রশাসনের চাহিদা মোতাবেক সেখানে চার প্লাটুন বিজিবি পাঠানো হয়েছে।এদিকে শনিবার সকাল থেকে কাশিমপুর কারাগারের চারপাশে এবং কারা ফটকের সামনে বাড়তি নিরাপত্তা ব্যবস্থা দেখা গেছে। সেই সঙ্গে শনিবার সকাল থেকে অন্যান্য আসামির স্বজন ও দর্শনার্থীদের ভেতরে ঢোকার ব্যাপারে বাড়তি তল্লাশি এবং কড়াকড়ি আরোপ করা হয়েছে।

কাশিমপুর কারাগারের সামনে থেকে: সর্বোচ্চ সতর্কতা জারি করা হয়েছে গাজীপুরের কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগারে। চার প্লাটুন বর্ডার গার্ড বিজিবি মোতায়েন করা হয়েছে কারাফটক ও এর আশপাশের এলাকাসহ পুরো গাজীপুরে।এখানকার চারটির মধ্যে কাশিমপুর কারাগার-২ এ মানবতাবিরোধী অপরাধে ফাঁসি কার্যকর করা হবে জামায়াত নেতা মীর কাসেম আলীর।মীর কাসেম আলীর ফাঁসি কার্যকরের চূড়ান্ত প্রস্তুতির মধ্যে শনিবার (০৩ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় গাজীপুরজুড়ে টহল দিতে শুরু করেন চার প্লাটুন বিজিবি সদস্য। বিজিবি সদর দফতরের জনসংযোগ কর্মকর্তা মো. মোহসিন রেজা জানান, গাজীপুরের জেলা প্রশাসকের চাহিদা অনুসারে বিজিবি সদস্যদের পাঠানো হয়েছে।

এর আগে দুপুর দুইটা ৩৫ মিনিটে কারারক্ষীদের নিজস্ব নিরাপত্তা ব্যবস্থার পাশাপাশি মোতায়েন করা হয় ৠাব সদস্যদেরও। তিনটি গাড়িতে করে এসে কারাগারের আরপি গেটের (চার কারাগারের মূল ফটক) সামনে অবস্থান নিয়েছেন ৠাব সদস্যরা।দুই স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থার দ্বিতীয় স্তরে রয়েছেন কারারক্ষীরা। কারাগারে প্রবেশের আগে রাস্তার মুখে সমদূরত্বে তৈরি করা হয়েছে দু’টি পুলিশ বেষ্টনীও (ব্লক রেড)। দুপুর দেড়টার দিকে কাশিমপুর কারাগার-২ এর ভেতরে ঢুকেছেন অতিরিক্ত কারা মহাপরিদর্শক (অতিরিক্ত আইজি প্রিজন) কর্নেল ইকবাল হাসান।

কাশিমপুর কারাগার-২ এর জেলার নাশির আহমেদ বলেন, শুক্রবার (০২ সেপ্টেম্বর) বিকেলে রাষ্ট্রপতির কাছে প্রাণভিক্ষা চাইবেন না বলে জানান মীর কাসেম আলী। এর পর থেকেই ফাঁসি কার্যকরের চূড়ান্ত প্রস্তুতি নিচ্ছি। কাশিমপুর কারাগার-২ এর ফাঁসির মঞ্চে শনিবার বিকেলে কারাগারের ভেতরে মঞ্চে ফাঁসির চূড়ান্ত মহড়ায় অংশ নেন চার জল্লাদ। তারা হলেন- প্রধান জল্লাদ শাহজাহান, দ্বীন ইসলাম, রিপন ও শাহীন। শুক্রবার ও বৃহস্পতিবারও (০১ সেপ্টেম্বর) দু’দফায় ফাঁসির মহড়া দেওয়া হয়েছে।স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ফাঁসির নির্বাহী আদেশ এসেছে দুপুরেই। সেই আদেশ অনুসারে মীর কাসেমকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদন্ড কার্যকর করা হবে।শুক্রবার সন্ধ্যা থেকেই কারাগার এলাকার দোকানপাট বন্ধ করে দেওয়াসহ কারাগারের নিরাপত্তা জোরদার রয়েছে। কারাগারে প্রবেশ করে জলকামানও।

এদিকে ফাঁসির আগে স্বজনদের সঙ্গে শেষবারের মতো সাক্ষাত করছেন মীর কাসেম আলী। শনিবার বিকেল সোয়া চারটায় সাক্ষাৎ করতে কাশিমপুর কারাগারের ভেতরে ঢুকেন মীর কাসেমের স্ত্রী, দুই মেয়ে, দুই পুত্রবধূসহ পরিবারের ৩৮ জন সদস্য।সন্ধা ৬৩৫ মিনিটে তারা যখন বেরিয়ে আসেন , গাজীপুরে তখন বৃষ্টি হচ্ছে । কারা ফটক থেকে বের হওয়ার পরপরই গাড়িতে উঠে চলে যান তারা।