মুসলিম বিশ্বের কাছে বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ সৌদি আরবের মক্কা নগরীর কাবা শরিফের ২০ গজ দূরে অবস্থিত জমজম কূপের পানি। সাধারণত যারা হজ বা ওমরা করতে অথবা পরিদর্শনে কাবা শরিফ- যান তাদের অন্যতম লক্ষ্য থাকে জমজম কূপের পানির দিকে। খাওয়ার পাশাপাশি নিয়ে আসার চেষ্টা করেন সবাই। আর এ কাজে সহযোগিতার জন্য সেখানে স্থাপিত হয়েছে একটি ফ্যাক্টরি- কিং আবদুল্লাহ জমজম ওয়াটার ফ্যাক্টরি।
জমজম কূপ থেকে প্রাত্যহিক কত পরিমাণ পানি উঠছে তার একটা পরিসংখ্যান প্রকাশ করেছে সৌদি গেজেট। পত্রিকাটি জানিয়েছে, এখন এ কূপ থেকে প্রতি এক সেকেন্ডে উত্তোলন করা হচ্ছে ১১ থেকে ১৯ লিটার পানি। সৌদি জিওলজিক্যাল সার্ভের প্রেসিডেন্ট জুহের নওয়াব বলেছেন, জমজম কূপের কাহিনী ঐতিহাসিক। এই কূপ শুষ্ক ও মরুময় মক্ক নগরীকে করেছে জনবসতিপূর্ণ একটি শহরে। এ কূপের কাহিনী শুরু হজরত ইবরাহিম (আ.), তার স্ত্রী হজরত হাজেরা ও তাদের সন্তান হজরত ইসমাইল (আ.) কে কেন্দ্র করে। কূপটি কয়েক হাজার বছরের পুরনো। তৃষ্ণার্ত এই শহরের পিপাসা মিটানোর জন্য যথেষ্ট পানি সরবরাহ পাওয়া যায় এই কূপ থেকে। অন্যান্য অনুষঙ্গের সঙ্গে এই কূপের কারণে পবিত্র সৌদি আরব সবচেয়ে দর্শনীয় শহরের পরিণত হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, আরব উপসাগরের দক্ষিণাঞ্চলের অসংখ্য মানুষ মক্কায় আসতেন পবিত্র জমজমের পানি নিতে। এ জন্য তারা ব্যারেল পর্যন্ত নিয়ে আসতেন। সেই পানি নিয়ে তারা ফিরে যেতেন বন্ধু-বান্ধব ও পরিবারের কাছে। নওয়াব বলেন, যারা এই কূপ পরিদর্শন করতে আসেন তাদের সবাইকে জমজমের পানি ভরে দেওয়ার দায়িত্ব নেন মক্কার নির্দিষ্ট কিছু পরিবার। এই রীতি একটি পারিবারিক রীতিতে পরিণত হয়। ২০১০ সালে সৌদি আরব এই পানি পরিশোধনের জন্য একটি বড় প্রকল্প ঘোষণা করে। এতে দেওয়া হয় ৭০ কোটি রিয়ালের বাজেট।
পানি পরিশোধনাগার স্থাপন করা হয়েছে পবিত্র গ্র্যান্ড মসজিদের কাছেই, যাতে সহজে হাজী, দর্শনার্থীদের এই পানি সরবরাহ করা যায়। এই পানি পরিশোধনাগারের নাম কিং আবদুল্লাহ জমজম ওয়াটার ফ্যাক্টরি। এখান থেকে দিনে দুই লাখ বোতল পানি পরিশোধন করা হয়। তবে রমজান ও হজ মৌসুমে এ পরিমাণ বাড়িয়ে দেওয়া হয়। সারা বছরই মক্কা ও মদিনায় জমজমের পানি পৌঁছে দেওয়ার উপায় নিয়ে চিন্তাভাবনা চলছে।