পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষে বাংলাদেশ রেলওয়ে যাত্রীদের যাতায়াতের সুবিধার্থে আগামী ২৯ আগস্ট সোমবার থেকে অগ্রিম টিকেট বিক্রি শুরু করবে।ঢাকার কমলাপুর ও চট্টগ্রাম রেলওয়ে স্টেশন থেকে সকাল ৮টায় অগ্রিম টিকেট বিক্রি শুরু হবে। একজন যাত্রীকে সর্বাধিক ৪টি টিকেট দেয়া হবে।বাংলাদেশ রেলওয়ের যুগ্ম-মহাপরিচালক (অপারেশন) এস এম মুরাদ হোসেন বাসসকে জানান, অগ্রিম টিকেট বিক্রির জন্য সকল প্রস্তুতি ইতোমধ্যেই সম্পন্ন হয়েছে। তিনি জানান, টিকেট কালোবাজারি রোধে ব্যাপক নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।বাংলাদেশ রেলওয়ে আগামী ৭ সেপ্টেম্বরের যাত্রার টিকেট ২৯ আগস্ট, ৮ সেপ্টেম্বরের যাত্রার টিকেট ৩০ আগস্ট, ৯ সেপ্টেম্বরের যাত্রার টিকেট ৩১ আগস্ট, ১০ সেপ্টেম্বরের যাত্রার টিকেট ১ সেপ্টেম্বর এবং ১১ সেপ্টেম্বরের যাত্রার টিকেট ২ সেপ্টেম্বর বিক্রি করবে।বাংলাদেশ রেলওয়ে ঢাকা ও চট্টগ্রাম রেলওয়ে স্টেশন থেকে কর্মকর্তাদের তত্ত্বাবধানে অগ্রিম টিকেট বিক্রি করবে।পবিত্র ঈদুল আজহা শেষে যাত্রীদের যাতায়াতের সুবিধার্থে বাংলাদেশ রেলওয়ে রাজশাহী, খুলনা, রংপুর, দিনাজপুর ও লালমনিরহাট রেল স্টেশন থেকে বিশেষ ব্যবস্থাপনায় অগ্রিম টিকেট বিক্রি শুরু করবে। ১৪ সেপ্টেম্বরের যাত্রার টিকেট ৫ সেপ্টেম্বর, ১৫ সেপ্টেম্বরের যাত্রার টিকেট ৬ সেপ্টেম্বর, ১৬ সেপ্টেম্বরের যাত্রার টিকেট ৭ সেপ্টেম্বর, ১৭ সেপ্টেম্বরের যাত্রার টিকেট ৮ সেপ্টেম্বর এবং ১৮ সেপ্টেম্বরের যাত্রার টিকেট ৯ সেপ্টেম্বর বিক্রি হবে।
এদিকে,ঈদে দক্ষিণাঞ্চলের নৌ পথে ঘরে ফেরা যাত্রীদের জন্য অগ্রিম টিকেট বিক্রি শুরু হবে বৃহস্পতিবার (০১ সেপ্টেম্বর) থেকে। পবিত্র ঈদুল আযহা উপলক্ষে ইতোমধ্যে সড়কপথে ও ট্রেনে ঈদের অগ্রিম টিকেট বিক্রি শুরু হলেও নৌপথে এখনো বিক্রি শুরু হয়নি। শনিবার (২৭ আগস্ট) সকালে বিআইডাব্লিউটিএ সদরঘাটের নৌ-নিরাপত্তা ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা বিভাগের যুগ্ম পরিচালক জয়নাল আবেদিন এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।তিনি বলেন, নৌপথে ঘরে ফেরা যাত্রীদেরকে অবশ্যই নৌযানে ওঠার আগে টিকেট সংগ্রহ করতে হবে।জয়নাল আবেদিন বলেন, গত ঈদ থেকে নৌপথে যাত্রীদের জন্য এ টিকিট সার্ভিস চালু করা হয়েছে। লঞ্চে উঠতে যাত্রীদেরকে আগে অবশ্যই টিকিট সংগ্রহ করতে হবে। টিকিট ছাড়া কোনো যাত্রীকে লঞ্চে উঠতে দেওয়া হবে না।
সদরঘাট নৌ-টার্মিনালের পশ্চিমপাশে নির্মাণাধীন নতুন ভবনে ঈদে ঘরে ফেরা যাত্রীদের জন্য টিকিট কাউন্টার খোলা হবে। আর এ অগ্রিম টিকিট কাউন্টার যাত্রীদের জন্য উন্মূক্ত করা হবে ০১ সেপ্টেম্বর (বৃহস্পতিবার)।তিনি আরো বলেন, কাউন্টার থেকে লঞ্চের মালিকরা নিজেদের সুবিধামতো ঈদের অগ্রিম টিকিট বিক্রি করবেন। যতক্ষণ টিকিট থাকবে লঞ্চের মালিকরা ততক্ষণ বিক্রি করতে পারবে। এছাড়া ঈদে ঘরে ফেরা যাত্রীদের নিরাপত্তা দিতে সব ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হবে জানিয়ে এ কর্মকর্তা আরও বলেন, যাত্রীরা যেন কোনো ধরনের হয়রানির শিকার না হয় সে বিষয়টিও বিশেষ নজরদারিতে রাখা হবে।
রাজধানীর সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনাল থেকে দেশের ৪১টি নৌপথে লঞ্চ ছেড়ে যায়। বর্তমানে এসব রুটে ১৮০টির মতো লঞ্চ চলাচল করলেও ঈদের সময় তা বেড়ে দাঁড়ায় দ্বিগুনেরও বেশি। সঙ্গে বরাবরের মতো নতুন লঞ্চতো থাকছেই। এছাড়া নতুন লঞ্চগুলো ফিটনেস, টাইম ও রুটপারমিট পেলেই ঈদযাত্রায় যাত্রী সেবায় যুক্ত হবে।অন্যদিকে,ঈদুল আজহা উপলক্ষে ৮-১০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত বাসের অগ্রিম টিকিট বিক্রি শেষ হয়ে গেছে। বিক্রি শেষ হলেও ওই দিনগুলোর টিকিকের জন্য কাউন্টারে ঘুরপাক করছেন যাত্রীরা।শনিবার সকালে শ্যামলী ও কল্যাণপুর বাসস্ট্যান্ড ঘুরে এ চিত্র দেখা গেছে।মঙ্গলবার থেকে অগ্রিম টিকিট বিক্রি শুরু হয়। বিক্রেতারা বলছেন, এর প্রায় দুই দিনের মধ্যেই ৯-১০ তারিখের টিকিট বিক্রি হয়ে গেছে। ওই তারিখের টিকিটের চাহিদা থাকলেও আপাতত কিছু করার নেই। তবে রাস্তায় যানজট না থাকলে কোনো কোনো কোম্পানি এসব দিনে অতিরিক্ত বাস নামাতে পারেন।চাঁদ দেখা সাপেক্ষে আগামী ১২ অথবা ১৩ সেপ্টেম্বর পবিত্র ঈদুল আজহা উদযাপিত হবে বলে ধারনা করা হচ্ছে। সে অনুযায়ী ১১ সেপ্টেম্বর (রোববার) থেকে ঈদের ছুটি শুরু হবে। এর আগের দুই দিন শুক্র ও শনিবার সাপ্তাহিক ছুটি রয়েছে। তাই এই ঈদে স্বাভাবিকভাবেই টানা পাঁচদিন ছুটি থাকতে পারে।
এদিকে আগামী ৬ সেপ্টেম্বর থেকে বাসের টিকিটের বর্ধিত ভাড়া ধরা হয়েছে। ফেরত টিকিটেও এ ভাড়া বহাল থাকবে। তবে ঈদের পর কতোদিন সে ভাড়া বহাল রাখা হবে সে বিষয়েও এখনো সিদ্ধান্ত নেয়নি কর্তৃপক্ষ।সরেজমিনে বাস কাউন্টারগুলো ঘুরে দেখা যায়, সকাল থেকেই অলস সময় কাটাচ্ছেন কাউন্টার ম্যানেজাররা। তারা জানান, ১ সেপ্টেম্বরেরও অগ্রিম টিকিট দেওয়া হচ্ছে। তবে ১-৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত টিকিটে তেমন কোনো চাপ নেই। বলতে গেলে ফাঁকাই রয়েছে।ঢাকা-সাতক্ষীরা রুটের কে লাইন পরিবহনের টিকিট বিক্রেতা মুজিবুর রহমান বলেন, ‘অগ্রিম টিকিট দেওয়ার পর থেকে দু’দিন প্রচ- চাপ ছিল। ৮-১০ সেপ্টেম্বরের অগ্রিম টিকিট শেষ হয়ে যাওয়ায় এখন চাপ নেই বললেই চলে।আগামী ৬ সেপ্টেম্বর থেকে যাত্রীদের ঈদের বর্ধিত ভাড়া দিতে হবে জানিয়ে ঢাকা-পঞ্চগড় রুটের হক এন্টারপ্রাইজের কাউন্টার ম্যানেজার শামীম আহমেদ বলেন, আগামী ৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ঢাকা-পঞ্চগড়ের স্বাভাবিক ভাড়া (চেয়ার কোচে) ৬শ টাকা, তবে ৬ তারিখ থেকে যাত্রীদের ৮শ ৫০ টাকা করে দিতে হবে।
ঈদের পর ক’দিন এই বর্ধিত ভাড়া বহাল থাকবে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এ বিষয়ে কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে এখন পর্যন্ত কোনো নির্দেশনা পাইনি।কল্যাণপুরের এসপি গোল্ডেন লাইন বাস কাউন্টারের কর্মচারী ইয়াসিন কবীর বলেন, ৮-১০ তারিখের টিকিট শেষ হয়ে গেলেও যাত্রীরা এখনো এই লাইনের টিকিটের খোঁজে আসছেন। সাধারণতঃ যাত্রীদের চাপ বুঝে অতিরিক্ত গাড়ি নামানো হয়। তবে সেটা নির্ভর করে রাস্তার পরিবেশ বুঝে।