ইভটিজিংচাঁপাইনবাবগঞ্জের নাচোলে ইভটিজিংকারীরা বেপরোয়া হয়ে উঠেছে।ফলে স্কুল ,কলেজ গামী ছাত্রীরা আতংকিত অবস্থায় রয়েছে।কিন্তু উপজেলা প্রশ্সান ব্যবস্থা নিতে পারছে না উত্যাক্তকারীদের বিরুদ্ধে। সম্প্রতি গত ১ সপ্তাহের ব্যবধানে পরপর ৩ টি ঘটনায় স্কুল ,কলেজ গামী ছাত্রীরা সহ অভিভাবকরা ও রয়েছে নানা উৎকন্ঠায়।সংশ্লিষ্ট সুত্রে জানা গেছে , গত বৃহস্পতিবার বিকালে উপজেলার খেসবা গ্রামের ফিরোজের জনৈক মেয়ে সহ কয়েএকজন খেসবা দাখিল মাদ্রাসার ১০ম শ্রেনীর ছাত্রীরা প্রাইভেট পড়ে ভ্যানযোগে বাসা ফিরছিল এমন সময় রেলষ্টেশন এলাকার হযরত আলীর ছেলে হাসেম (২২) ,আমিরের ছেলে রিদয় (২০) আহাদুলের ছেলে দিপু (২০) ,এবং কাকলীর ছেলে নয়ন(২২)ছাত্রীদের প্রথমে কু প্রস্তাব দেয় । কিন্তু ছাত্রীরা বখাটেদের কু প্রস্তাবে রাজি না হলে বখাটেরা দেওপাড়া রাস্তায় তাদের উপর শারীরিক নির্যাতন করতে থাকলে খেসবা গ্রামের আঃ রাজ্জাক নাচোল বাজার যাওয়ার সময় বিষয়টি জানতে পেরে বখাটেদের ধাওয়া করলে তারা দ্রুত পালিয়ে যায়। পরে ছাত্রীদের অভিভাবকরা বিষয়টি জানতে পেরে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় নাচোল থানায় বখাটেদের বিরুদ্ধে একটি অভিযোগ দ্বায়ের করেন। কিন্তু ২৪ ঘন্টা পার হয়ে গেলেও নাচোল থানা পুলিশ কাউকে এখনও আটক করতে না পারায় ঐ পরিবারের লোকজন নানা উৎকন্ঠায় রয়েছে।

অন্যদিকে গত ১৭ আগষ্ট দুপুর বারটায় উপজেলার নেজামপুর ইউনিয়নের আনারুল ইসলামের জনৈক কলেজ পড়–য়া মেয়ে (১৭) এশিয়ান স্কুল এন্ড কলেজ থেকে বাড়ি যাওয়ার পথে নাচোল বাসস্ট্যান্ডে একই এলাকার আঃ মাতেনের ছেলে এলাহী (১৭) ঐ কলেজ পড়–য়া ছাত্রীকে প্রেম প্রস্তাব দেয়। কিন্তু কলেজ পড়–য়া ঐ ছাত্রী বখাটে এলাহীর প্রেম প্রস্তাবে রাজি না হলে নাচোল বাসষ্ট্যান্ড এলাকায় কলেজ পড়–য়া ঐ ছাত্রীর শরীরে হাত উঠায় বখাটে।।বিষয়টি নাচোল মহিলা কলেজের এক প্রভাষক জানতে পেরে নাচোল থানা পুলিশ কে খবর দিলে ঘটনাস্থল থেকেই বখাটে এলাহী কে আটক করে।পরে ভ্রাম্যমান আদালতের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সরকার অসীম কুমারের আদালতে হাজির করলে বখাটের বয়স ১৭ বছর হওয়ায় নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সরকার অসীম কুমার ঐ বখাটের বিরুদ্ধে নাচোল থানা পুলিশ কে নিয়মিত মামলা করার নির্দেশ দেন। কিন্তু দুখের বিষয় ঘটনার ঐ রাতেই স্থানীয় প্রভাবশালীদের সহায়তায় ছাড়া পেয়ে যায় বখাটে এলাহী ।

অন্যদিকে গত ২৪ আগস্ট সকাল ১১ টায় কলেজ পড়–য়া এক ছাত্রী (১৮) নাচোল বাসস্ট্যান্ড থেকে বাসযোগে বাড়ি যাওয়ার সময় কয়েএক জন বখাটে ঐ কলেজ ছাত্রীর ওড়না ধরে টান দেয়। পরে কলেজ পড়–য়া ঐ ছাত্রী চাঁপাইনবাবগঞ্জ পুলিশ সুপার মোজাহিদুল ইসলাম সাহেব কে ফোনে বিষয়টি অবহিত করলে পুলিশ সুপার নাচোল থানা পুলিশ কে উত্যাক্তকারীদের ধরার জন্য নির্দেশ দিলে নাচোল থানা পুলিশ ঘটনাস্থল থেকেই ৮ জন কে আটক করে । আটকৃতরা হলো উপজেলার হাকরইল গ্রামের ইয়াইহার ছেলে আরিপ আলী (১৮) ,মুর্শিদা গ্রামের মকবুল হোসেন ডাবলুর ছেলে সাখাওয়াত হোসেন সডি( ১৭) ও একই গ্রামের ইদ্রিস আলির ছেলে সাহাদাত হোসেন (১৭) ,বেনীপুর গ্রামের মতিউর রহমানের ছেলে জাকিরুল ইসলাম (১৭) ,পূর্ব মির্জাপুর গ্রামের মাহাতাব উদ্দিনেরছেলে মাসুদ রানা (১৭) ,নাচোল মধ্যবাজার পাড়ার আনোয়ারের ছেলে রিদয় (১৭) ,একই এলাকার ইসমাইলের ছেলে মুন্না (১৭) এবং নাচোল মাষ্টার পাড়ার অমল বর্মনের ছেলে ধনপতি বর্মন (১৭)।
আটকের পর আটককৃতদের বয়স কম হওয়ায় প্রথম বারের মতো সতর্ক করে পিতামাতার কাছে মুচলেকা দিয়ে তাদের ছেড়ে দেয় নাচোল থানা পুলিশ।

এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহাম্মদ রাশেদ ওয়াসিফ এর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, উত্যাক্তকারীদের বয়স কম হওয়ায় এ অপরাধ টি কিশোর অপরাধের মধ্যে সীমাবদ্ধ ,যার কারনে আমরা ভ্রাম্যমান করতে পারিনা। তিনি এ বিষয়ে উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তার সাথে যোগাযোগ করতে বলেন। এ ব্যাপারে উপজেলা সমাজ সেবা কর্মকর্তা জিয়াউর রহমানের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, উত্যাক্তকারীদের বয়স যদি কম হয় তাহলে এ ধরনের অপরাধ কিশোর অপরাধের মধ্যে পড়ে। এ ধরনের অপরাধের ক্ষেত্রে প্রথমে পুলিশ অপরাধীদের কে কোর্টে প্রেরন করতে পারবে ,২য়ত পিতা মাতার কাছে থেকে মুচলেকা দিয়ে অপরাধীদের প্রথম বারের মতো সতর্ক করতে পারেন।

এ বিষয়ে নাচোল থানার ওসি ফাছির উদ্দিনের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, অপরাধীদের ধরতে পুলিশ অভিযান অব্যহত রেখেছে। উপজেলার সচেতন মহলের দাবি নাচোলে গত এক সপ্তাহের ব্যবধানে পরপর ৩ টি ঘটনা ঘটলেও উপজেলা প্রশাসন অপরাধীদের বিরুদ্ধে কোন ব্য্রবস্থা গ্রহন করতে পারিনী। অপরাধীদের বয়স যদি কম হয় তাহলে কী তারা সাজা পাবেনা। এরকম অবস্থা যদি চলতে থাকে তাহলে অভিভাবকরা হয়ত ছেলে মেয়েদের স্কুল ,কলেজে পাঠিয়ে আতংকিত অবস্থায় থাকবে।তাই অপরাধীদের সাজা প্রদানে বিকল্প ব্যবস্থা গ্রহনের দাবি জানান উপজেলা প্রশাসন কে।

মোঃ নাসিম আলী, নাচোল –চাঁপাইনবাবগঞ্জ