যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের ব্যাপারে অটল থাকবেন বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেছেন, ‘আমি ক্ষমতা বা জীবন হারাতে ভয় পাই না। তাছাড়া ক্ষমতা আমার কাছে ভোগ করার নয়, সেবার জন্য।’বুধবার প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় শাপলায় অসহায়, আর্থিক অস্বচ্ছল, অসুস্থ ও গুণী সাংবাদিকদের আর্থিক অনুদান প্রধান অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্টের পক্ষ থেকে অনুদানের এ চেক হস্তান্তর করেন প্রধানমন্ত্রী।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘যুদ্ধাপরাধীদের বিচার ও রায় বাস্তবায়নে অনেক বাধা-বিপত্তি এসেছে। তাদের অনেক টাকা। কারণ ২১ বছর তারা ক্ষমতায় ছিল। তারপরও মানবতাবিরোধী ও যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের বিষয়ে আমি অটল। আমরা মুক্তিযুদ্ধের চেতনা নিয়ে দেশকে এগিয়ে নিতে চাই। ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সবার স্থান হবে এই বাংলাদেশে।’
বিএনপির নবগঠিত কেন্দ্রীয় কমিটির সমালোচনা করে তিনি বলেন, ‘বিএনপি একটা দল করেছে ৫’শ কতজনের একটা তালিকা দিয়ে সেখানে কারা স্থান পেয়েছে? যারা যুদ্ধাপরাধী, মানবতাবিরোধী, স্বাধীনতায় বিশ্বাস করে না, হত্যা, লুটপাট, ধর্ষণ ও পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীকে সহযোগিতা করেছিল তাদের পরিবারের সদস্যরা স্থান পেয়েছে। যারা অপরাধী, অপরাধীদের প্রশ্রয় দেয় তারা কিসে বিশ্বাস করে। যুদ্ধাপরাধীদের পরিবারের সদস্যদের দিয়ে যদি বিএনপি কমিটি করে তারা কি মুক্তিযুদ্ধের চতেনায়, স্বাধীনতা, উন্নয়নে বিশ্বাস করে? এটাই বাস্তবতা। জনগণের কাছে তা স্পষ্ট হওয়া উচতি।’ সাংবাদিক নেতারা প্রধানমন্ত্রীর কাছে বিভিন্ন দাবি উত্থাপন করলে শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমার কাছে দাবি উত্থাপন করতে হয় না। আমি নিজের তাগিদেই করি।’
তিনি বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুও সাংবাদিকতা করতো। পত্রিকায় কাজ করেছেন। সেদিক থেকে আমিও আপনাদের পরিবারের দূরের কেউ নই। আমার নিজের তাগিদে সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্ট করেছি। স্থায়ী বন্দোবস্ত করে আইন করে ট্রাস্ট করেছি। আপনাদের ভেতরে সম্পদশালী অনেক লোক রয়েছেন কেউ একটি পয়সাও এ ট্রাস্টে অনুদান দেননি।’ তিনি বিত্তবান মিডিয়া মালিকদের সবাইকে এই ট্রাস্টে অনুদানের দিতে আহ্বান জানিয়েছেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘দেশের মানুষ আনন্দে থাকলে সেটাই আমার কাছে সবচেয়ে আনন্দের সংবাদ। আমি মনে করি তাহলে বাবার আত্মাও শান্তি পাবে।’ সাংবাদিক হত্যার বিচার চেয়ে সাংবাদিক নেতাদের বক্তব্যের জবাবে শেখ হাসিনা বলেন, ‘সব সাংবাদিক হত্যার বিচার আমরা করবো। সেখানে সাংবাদিকদের সহযোগিতা প্রয়োজন।’
তিনি বলনে, ‘বাবা, মা, ভাইসহ পরিবারের সকলের হত্যার বিচার পেতে আমাকে ৩৫ বছর অপেক্ষা করতে হয়েছে।’