dapচট্টগ্রামের আনোয়ারায় সার কারখানায় অ্যামোনিয়া গ্যাস ট্যাংক লিকেজের ঘটনায় সংবাদ সম্মেলন করেছেন বাংলাদেশ কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজ করপোরেশনের (বিসিআইসি) চেয়ারম্যান মো. ইকবাল। দুর্ঘটনাস্থল পরিদর্শন শেষে মঙ্গলবার বেলা দুপুরে তিনি জানান, ট্যাংক লিকেজ নিছক একটি দুর্ঘটনা। জনগণকে গুজবে কান না দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি। সাংবাদিকদের উদ্দেশে মো. ইকবাল বলেন, ‘গুজবের ডালপালা যেন বিস্তার না হয় সেজন্য সংবাদ প্রকাশের ক্ষেত্রে সতর্ক হবেন।’

সাধারণ জনগণকে ধৈর্য ধারণ করার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘যেহেতু এটি একটি কারিগরি বিষয়। তাই তদন্ত প্রতিবেদন দেওয়ার আগ পর্যন্ত কোনও মন্তব্য করা যাবে না। দুর্ঘটনার পুনরাবৃত্তি যেন না হয় সেজন্য সব ধরনের প্রতিরোধ ও প্রতিকারমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

এ দুর্ঘটনায় ড্যাপের কোনও কর্মকর্তার অবহেলা ছিল কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে মো. ইকবাল বলেন, ‘বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। কারও অবহেলা প্রমাণিত হলে তার বিরুদ্ধে প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কোনও রকম ছাড় দেওয়া হবে না।’

সেখানে আগে থেকে কোনও ক্রটি ছিল কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘যেকোনও কেমিক্যাল ফ্যাক্টরিতে উৎপাদন প্রক্রিয়া জটিল বিষয়। তাই এই মুহূর্তে মন্তব্য করা যাবে না।’

কারখানাটি যেহেতু কর্ণফূলী নদীর কাছে তাই পানি, বাতাস ও জলজ প্রাণীর ক্ষতি হবে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘বিসিআইসি, ক্যাসকোর রসায়নবিদরা প্রতিনিয়ত বাতাস ও পানি মনিটর করছেন। কোনও অপরিশোধিত পানি নদী বা সাগরে যাবে না।’ তবে সংবাদ সম্মেলনে জেলা প্রশাসক মেজবাহ উদ্দিন বলেন, ‘এ ঘটনায় মাছের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। এই এলাকায় অনেক মাছের ঘের আছে। ইতোমধ্যে অনেক মাছ মরে ভেসে উঠেছে।’

ড্যাপ-২ এর শিফট ইনচার্জ বেলাল হোসেন সরকার এর আগে জানিয়েছিলেন, লিকেজ হওয়া রির্জাভ ট্যাংকে ৫০০ মেট্রিকটন অ্যামোনিয়া ছিল। তবে বিসিআইসির চেয়ারম্যানের দাবি করেন, ট্যাংকটিতে ২৫০ মে.টন অ্যামোনিয়া রিজার্ভ ছিল। সিভিল ডিফেন্সের মহাপরিচালক বিগ্রেডিয়ার জেনারেল মো. আলী বলেন, তাদের ৭০ জন কর্মী কাজ করেছে। এখানে অ্যামোনিয়ার নিয়ন্ত্রণের জন্য ওয়াটার স্প্রে করা হচ্ছে।

উল্লেখ্য, রবিবার রাত পৌনে ১১টার দিকে ড্যাপ (ডাইঅ্যামোনিয়াম ফসফেট) ফার্টিলাইজার কোম্পানি লিমিটেডের একটি সার কারখানার অ্যামোনিয়া গ্যাস ট্যাংক লিকেজ হয়ে আশেপাশের এলাকায় ছড়িয়ে পড়ে। এতে অসুস্থ হয়ে ৫২ জন হাসপাতালে ভর্তি হন। এ ঘটনায় জেলা প্রশাসন ও বিসিআইসির পক্ষ থেকে দুটি তদন্ত টিম গঠন করা হয়েছে।

কারাখানাটি বাংলাদেশ কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজ করপোরেশনের (বিসিআইসি) অধীনস্থ একটি প্রতিষ্ঠান। এটি কর্ণফুলী নদীর দক্ষিণ তীরবর্তী আনোয়ারা উপজেলার রাঙাদিয়ায় অবস্থিত। ২০০৬ সালের ১২ সেপ্টেম্বর কারখানাটি উৎপাদনে আসে।