প্রেসিডেন্ট রদ্রিগো দুয়ার্তে‘বন্দুকভক্ত’ প্রেসিডেন্ট রদ্রিগো দুয়ার্তের দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকে ফিলিপাইনে মাদকবিরোধী অভিযানে এ পর্যন্ত ১৮শ জনকে হত্যা করা হয়েছে। সোমবার সিনেট কমিটিতে ফিলিপাইন ন্যাশনাল পুলিশের প্রধান রোনাল্ড ডেলা রোসা এ পরিসংখ্যান তুলে ধরেন যা ধারণার চেয়ে অনেক বেশি। এতোদিন, এমনকি রবিবার পর্যন্ত এ সংখ্যা প্রায় ৯০০ বলে উল্লেখ করেছিল ফিলিপাইন কর্তৃপক্ষ।

ফিলিপাইনে মাদকবিরোধী অভিযানে যেসব হত্যাকাণ্ড চালানো হয়েছে তা আন্তর্জাতিক আইনের আওতায় অপরাধ; জাতিসংঘের এই বিবৃতির প্রতিক্রিয়ায় রবিবার দুয়ার্তে প্রয়োজনে ওই সংস্থা থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে নতুন জোট গঠনের হুমকি দেন। দুয়ার্তের এই হুমকির একদিনের মাথায় হত্যাকাণ্ডের পরিসংখ্যান প্রকাশিত হলো।
উল্লেখ্য, বিশ্বজুড়েই বন্দুকভক্তির জন্য দুয়ার্তের পরিচিতি রয়েছে। গত মে মাসে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে নিরঙ্কুশ জয় পাওয়ার আগে মাদকের বিরুদ্ধে কঠোর হওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন তিনি। নির্বাচিত হওয়ার পর নিজের প্রথম ভাষণে দুয়ার্তে জানান, ফিলিপাইনে সন্ত্রাসী কার্যক্রমে জড়িত ব্যক্তি এবং গ্রেফতার এড়াতে পালিয়ে বেড়ানো ব্যক্তিদের গুলি করার ক্ষমতা দেওয়া হবে নিরাপত্তা বাহিনীকে। আর দায়িত্ব নেওয়ার পর ‘মাদকবিরোধী যুদ্ধ’ ঘোষণা করেন দুয়ার্তে। তিনি বলেন,‘আপনারা যদি কোনও মাদকসেবীকে চিনে থাকেন তবে তবে তাদেরকে নিজেরাই হত্যা করুন। তাদের বাবা-মাকে এ কাজটি করতে বলাটা বেশি কষ্টের।’ কঠোর এ অভিযানকে কেন্দ্র করে বিশ্বব্যাপী নিন্দার ঝড় ওঠে। বিভিন্ন দেশ ও সংগঠনের পাশাপাশি জাতিসংঘও এর নিন্দা জানায়।

এই প্রেক্ষাপটে প্রেসিডেন্ট দুয়ার্তের সমালোচক লিইলা দে লিমা দুইদিনের কংগ্রেসনাল তদন্ত শুরু করেন। ‘নজিরবিহীনভাবে’ হত্যাকাণ্ড বেড়ে যাওয়ায় শীর্ষস্থানীয় পুলিশ ও মাদকবিরোধী কর্মকর্তাদেরকে এ ব্যাপারে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। লিইলা দে লিমা বলেন, ‘সকালে নাস্তা করার পর থেকে ডানে-বামে কেবল হত্যার খবর শুনি। এতে আমি খুব ক্ষুব্ধ।’ ফিলিপাইন ন্যাশনাল পুলিশের প্রধান রোনাল্ড ডেলা রোসা সোমবার সিনেট কমিটির সামনে মাদকবিরোধী অভিযানে নিহতের পরিসংখ্যান উপস্থাপন করেন। তিনি জানান, কেবল ১ জুলাই থেকে পুলিশি অভিযানে ৭১২ জন মাদক পাচারকারী ও মাদক ব্যবহারকারী নিহত হয়েছেন। তাছাড়া আরও ১ হাজার ৬৭টি মাদক সংশ্লিষ্ট হত্যার ঘটনা পুলিশ তদন্ত করছে বলেও জানান তিনি। তবে এ ব্যাপারে বিস্তারিত জানানো হয়নি। রবিবার পর্যন্ত ফিলিপাইন কর্তৃপক্ষ থেকে নিহতের সংখ্যা ৯০০ বলে দাবি করলেও তা মে মাস থেকে অর্থাৎ দুয়ার্তের দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকে হিসেব করে বলা হয়েছিল।

অবশ্য সোমবার ফিলিপাইনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী পেরফেক্টো ইয়াসায় দাবি করেছেন, ‘জাতিসংঘের কর্মকাণ্ডের প্রতি অগণিত হতাশা থাকলেও আমরা এ আন্তর্জাতিক সংস্থার প্রতি বদ্ধপরিকর।’ সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান