জাবেদ ইমাম

মাদক মামলায় দন্ডিত জ্যেষ্ঠ সহকারী জজ জাবেদ ইমাম আপিল বিভাগের নির্দেশে বিচারিক আদালতে আত্মসমর্পণ করেছেন। পরে জামিনের আবেদন করেছেন তিনি।রোববার ঢাকার দ্বিতীয় অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ সামছুন নাহারের আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিনের আবেদন করেন জাবেদ।সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের দেওয়া আদেশের অনুলিপি পাওয়া সাপেক্ষে ২৪ আগস্ট জাবেদের আত্মসমর্পণ এবং জামিন আবেদনের বিষয়ে শুনানির তারিখ ধার্য করেছেন বিচারিক আদালত। সে পর্যন্ত জাবেদ এখন যে অবস্থায় আছেন, সেই অবস্থায় থাকবেন।

বিচারিক আদালতে দন্ডিত জাবেদের সাজা বাতিল করে হাইকোর্টের দেওয়া রায় ৭ আগস্ট স্থগিত করেন আপিল বিভাগ। একই সঙ্গে জাবেদকে এক সপ্তাহের মধ্যে বিচারিক আদালতে আত্মসমর্পণের নির্দেশ দেন সর্বোচ্চ আদালত। ওই নির্দেশে আজ আত্মসমর্পণ করেন তিনি।২০১৩ সালের ২৭ আগস্ট ভোলার সাময়িক বরখাস্ত হওয়া জ্যেষ্ঠ সহকারী জজ জাবেদ ইমামকে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনের একটি মামলায় চার বছরের কারাদন্ড দেন আদালত। এ ছাড়া আসামিকে আরও ১০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।

বিচারিক আদালতের ওই রায়ের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে আপিল করেন জাবেদ।ওই আপিলের শুনানি শেষে গত বছরের ১১ ফেব্র“য়ারি হাইকোর্ট জাবেদের সাজা বাতিল করে তাঁকে বেকসুর খালাসের রায় দেন। হাইকোর্টের ওই খালাসের রায়ের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষ লিভ টু আপিল করে। ৭ আগস্ট ওই আবেদন মঞ্জুর করে আদেশ দেন আপিল বিভাগ। ফেনসিডিল বহনের দায়ে চার বছরের কারাদন্ডপ্রাপ্ত ভোলার সাবেক জ্যেষ্ঠ সহকারী জজ জাবেদ ইমাম আপিল বিভাগের নির্দেশে আদালতে আত্মসমর্পণ করে নতুন করে জামিনের আবেদন করেছেন।

তবে আপিল বিভাগের আদেশের অনুলিপি না পাওয়ায় ঢাকার হাকিম আদালত তার জামিন শুনানির জন্য ২৪ অগাস্ট দিন ঠিক করে দিয়ে বলেছে, জাবেদ ওইদিন পর্যন্ত মুক্তই থাকবেন। মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনের মামলায় নিম্ন আদালতে জাবেদকে দেওয়া দন্ড গতবছর হাই কোর্ট বাতিল করে দেয়। ওই রায়ের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষের লিভ টু আপিল মঞ্জুর করে গত ৭ অগাস্ট প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহার নেতৃত্বাধীন আপিল বেঞ্চ এক সপ্তাহের মধ্যে তাকে বিচারিক আদালতে আত্মসমর্পণের নির্দেশ দেয়। সে অনুযায়ী রোববার ঢাকার হাকিম আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিনের আবেদন করেন সাময়িক বরখাস্ত এই বিচারক।

২০১২ সালের ১ ডিসেম্বর রাজধানীর ইডেন কলেজের সামনে গাড়িতে ব্যাগভর্তি ফেনসিডিলসহ গ্রেপ্তার হন ভোলার তৎকালীন সহকারী জজ জাবেদ।পুলিশ ওইদিনই নিউ মার্কেট থানায় তার বিরুদ্ধে মামলা করে। মামলার পরপরই তাকে চাকরি থেকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়।ওই বছর ২০ ডিসেম্বর জাবেদ ইমামের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দেয় পুলিশ। সেখানে বলা হয়, তিনি ৩৪২ বোতল নিষিদ্ধ ফেনসিডিল বহন করছিলেন।

ওই মামলার রায়ে ২০১৩ সালের ২৭ আগস্ট ঢাকার দ্বিতীয় অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ আদালত জাবেদ ইমামকে চার বছরের কারাদন্ড ও দশ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও দুই মাসের কারাদ- দেয়।ওই সাজার বিরুদ্ধে তিনি আপিল করলে ২০১৫ সালের ১১ ফেব্র“য়ারি হাই কোর্ট নিম্ন আদালতের রায় বাতিল করে জাবেদ ইমামকে খালাস দেয়।হাই কোর্টের ওই রায়ের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষ এরপর লিভ টু আপিল করে, যার শুনানি নিয়ে গত সপ্তাহে সর্বোচ্চ আদালত জাবেদকে আত্মসমর্পণ করতে বলে।২০০৪ সালে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আইন বিষয়ে স্নাতকোত্তর শেষ করে ২০০৮ সালের মে মাসে সহকারী জজ হিসাবে চাকরি শুরু করেন জাবেদ ইমাম। তার গ্রামের বাড়ী ঝিনাইদহ সদরের আমদলিয়ায়।