ডিএমপি কমিশনার মো. আছাদুজ্জামান মিয়া।

জাতীয় শোক দিবসে ‘বাড়তি ঝুঁকি নেই’ দাবি করে গোয়েন্দা তথ্েযর ভিত্তিতে ধানমন্ডি ৩২ নম্বরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা সাজানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন ঢাকা মহানগর পুলিশের কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়া। তিনি বলেন, জাতীয় শোক দিবসে নিরাপত্তা ঝুঁকির কথা মাথায় রেখেই রাজধানীতে নিরাপত্তা বলয় গড়ে তোলা হবে।ডিএমপি কমিশনার বলেন, সরকার জঙ্গিবাদকে ইতিমধ্যে রুখে দিতে সক্ষম হয়েছে। তারপরেও ক্ষুদ্র একটি গোষ্ঠী জনগণের মাঝে আতংক সৃষ্টি করার চেষ্টা চালাচ্ছে। তাই বাড়তি এই নিরাপত্তা বলয়।তিনি রাজধানীবাসীর নিকট পুলিশকে নিরাপত্তা কাজে সহযোগিতার অনুরোধ জানিয়েছেন।জাতীয় শোক দিবসের নিরাপত্তা বিষয়ে রাজধানীর ৩২ নম্বর রোডে শনিবার বেলা সাড়ে ১১টায় এক প্রেস ব্রিফিংয়ে ডিএমপি কমিশনার এ কথা বলেন। এসময় ডিএমপির সিনিয়র পুলিশ কর্মকর্তাগণ উপস্থিত ছিলেন।ডিএমপি কমিশনার বলেন, জাতীয় শোক দিবসে সোমবার ভোর ৪টা থেকেই মিরপুর রোডের রাসেল স্কোয়ার থেকে মেট্রো শপিং মল পর্যন্ত রাস্তার পশ্চিম পাশে সকল প্রকার যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকবে।সকল দর্শনার্থীকে নিরাপত্তা তল্লাশীর মাধ্যমে ৩২ নম্বর রোডে প্রবেশ করতে হবে। কোন প্রকার ব্যাগ, দাহ্য পদার্থ, ধারালো বস্তু, বিস্ফোরক, নারীদের হাতব্যাগ বহন না করার জন্য বলা হয়েছে। ভোরে ভিভিআইপিগণ ৩২ নং এলাকা ত্যাগ না করা পর্যন্ত দর্শনার্থীদের কলাবাগান মাঠে অপেক্ষা করতে বলা হয়েছে।

ভিভিআইপিগণ চলে যাবার পর আর্চওয়ে চেকিংয়ের মধ্যে বঙ্গবন্ধু স্মৃতি যাদুঘরে প্রবেশ করতে হবে।মিরপুর রোড (কলাবাগান বাসস্ট্যান্ড হতে সোবহানবাগ মসজিদ পর্যন্ত) এবং ধানমন্ডির আশে পাশে মোটর সাইকেল পার্কিং নিষিদ্ধ থাকবে।সুশৃঙ্খল ও সমন্বিত নিরাপত্তার পদক্ষেপের মধ্যে রয়েছে চেকপোস্ট স্থাপন, সিসিটিভি স্থাপন, সোয়াট টিম, ডগ স্কোয়াড, বোম ডিসপজাল টিম।ডিএমপি কমিশনার বলেন, নিরাপত্তার জন্য যা যা করার দরকার ডিএমপি তাইই করবে।

১৫ অগাস্ট জাতীয় শোক দিবস সামনে রেখে শনিবার রাজধানীর ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের বাড়ি ও প্রতিকৃতিসহ আশপাশের এলাকা পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে নিরাপত্তা প্রসঙ্গে জঙ্গিদের বিষয়ও আমলে নেওয়ার কথা জানান তিনি।রাজধানীর গুলশান ও কিশোরগঞ্জের শোলাকিয়ায় নজিরবিহীন জঙ্গি হামলার প্রেক্ষাপটে এবার জাতীয় শোক দিবস পালিত হতে যাচ্ছে। এ উপলক্ষে ১৫ অগাস্ট থাকবে সরকারি ছুটি। ডিএমপি কমিশনার বলেন, ১৫ অগাস্ট জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা জানাতে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীসহ নানা শ্রেণি-পেশার মানুষ আসবেন। এসব কথা বিবেচনা করে পুরো এলাকায় নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে।

তিন বলেন, ওইদিন ধানমন্ডি ৩২ নম্বর সংলগ্ন রাসেল স্কয়ার থেকে মেট্রো শপিং মল পর্যন্ত মিরপুর রোডের পশ্চিম অংশে কোনো যানবাহন চলাচল করবে না। মেট্রোর গলিসহ আশপাশের গলিতেও যান চলাচল বন্ধ থাকবে। ধানম-ি ৩২ নম্বরে প্রবেশের পথে বসানো হবে আর্চওয়ে, তল্লাশি করা হবে মেটাল ডিটেক্টর দিয়ে।

১৯৭৫ সালের ১৫ অগাস্ট সেনাবাহিনীর একদল কর্মকর্তা ও সৈনিকের হাতে ধানম-ির ৩২ নম্বরের বাড়িতে জীবন দিতে হয় বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের নেতা ও তৎকালীন রাষ্ট্রপতি শেখ মুজিব ও তার পরিবারের সদস্যদের। তার দুই মেয়ে শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানা দেশের বাইরে থাকায় প্রাণে বেঁচে যান।ডিএমপি কমিশনার জানান, জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে ধামন-ি ৩২ নম্বরের আশপাশে সিসিটিভি ক্যামেরা বসানো হয়েছে। থাকবে ডগ স্কোয়াড। সাদা পোশাকেও থাকবেন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা।১৫ অগাস্ট ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে ব্যাগ, দাহ্য পদার্থ, ধারালো কোনো অস্ত্র এবং মেয়েদের হ্যান্ডব্যাগসহ অনুরূপ কোনো কিছু নিয়ে না যাওয়ার জন্য পুলিশের পক্ষ থেকে সবার প্রতি অনুরোধ জানানো হয়েছে। আছাদুজ্জামান মিয়া বলেন, ১৫ অগাস্ট সকালে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা নিবেদনের পর ৩২ নম্বর সড়ক সর্ব সাধারণের জন্য খুলে দেওয়া হবে। সেদিন কলাবাগান থেকে সোবহানবাগ মসজিদ এবং ৩২ নম্বরের আশপাশে কোনো মটরসাইকেল বা গাড়ি পার্কিং করা যাবে না।জাতীয় শোক দিবসে সব কর্মসূচি নিরাপদে করার জন্য এসব উদ্েযাগ নেওয়া হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, বাড়তি কোনো ঝুঁকি না থাকলেও বর্তমান পরিস্থিতিতে গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে বাড়তি নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।বিপথগামী কিছু মানুষ, যারা ক্ষুদ্র গোষ্ঠীর, আতঙ্ক সৃষ্টির চেষ্টা করছে। নিরাপত্তার ক্ষেত্রে এসব বিষয় মাথায় রাখা হয়েছে। সব গোয়েন্দা সংস্থার সঙ্গে সমন্বয় করে এসব পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে বলেও জানান তিনি।