১১ সিটিতে পশু কোরবানির ৩ হাজার স্থান নির্ধারণ

আগামী ঈদুল আজহার সময় পশু কোরবানির জন্য ১১টি সিটি করপোরেশনে ২৯৪৩টি স্থান নির্ধারণ করা হয়েছে। সচিবালয়ে বুধবার নির্ধারিত স্থানে কোরবানির পশু জবাই ও দ্রুত বর্জ্য অপসারণ নিশ্চিতে কর্মপরিকল্পনা প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন সভার শুরুতে স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিব আবদুল মালেক এ তথ্য জানান। স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায়মন্ত্রী খন্দকার মোশাররফ হোসেনের সভাপতিত্বে সভায় সিটি করপোরেশনের মেয়র, পৌরসভা মেয়র ও সিটি করপোরেশনগুলোর প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তারা উপস্থিত রয়েছেন।স্থানীয় সরকার সচিব বলেন, আসন্ন কোরবানিতে ১১ সিটি করপোরেশনে ২৯৪৩টি পশু জবাইয়ের স্থান, জবাইয়ের জন্য ৪৮৮৫ জন ইমাম ও মাংস প্রক্রিয়ার জন্য ১২ হাজার ৬৩৮ জন কসাই নির্ধারণ করা হয়েছে। তিনি বলেন, আমাদের ৩২৫টি পৌরসভা আছে। সেখানে আরো বেশি কোরবানি হবে। সে তালিকা অসম্পূর্ণ রয়েছে। তা আমরা ঠিক করব।

সচিব বলেন, এবার ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের সম্ভাব্য কোরবানিদাতার সংখ্যা এক লাখ এক হাজার ৪১০ জন, কোরবানির জন্য সম্ভাব্য পশুর সংখ্যাও এক লাখ এক হাজার ৪১০টি। দক্ষিণে ৫৬৭টি পশু জবাইয়ের স্থান নির্ধারণ করা হয়েছে। এ ছাড়া পশু জবাইয়ের জন্য ৭৮৫ জন ইমাম ও মাংস প্রক্রিয়ার জন্য ৪৮৪ জন কসাই থাকবেন।আবদুল মালেক বলেন, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনে সম্ভাব্য কোরবানিদাতার সংখ্যা ২ লাখ, কোরবানির জন্য সম্ভাব্য পশুর সংখ্যা ২ লাখ ৬০ হাজার। দক্ষিণে ৫৮৩টি পশু জবাইয়ের স্থান, ৮৯৩ জন ইমাম ও ৪৫৪ জন কসাই নির্ধারণ করা হয়েছে।

সিটি করপোরেশনের নির্ধারিত স্থান ছাড়া পশু জবাই করা হলে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে শাস্তি দেওয়ার বিষয়টি নিয়েও সভায় আলোচনা হবে বলে সভা সূত্রে জানা গেছে। সভায় সবাই একমত হলে এ বছর থেকেই ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করা হবে।পরিবেশ ও স্বাস্থ্যগত ক্ষতি এড়াতে সরকার নির্ধারিত এসব স্থানে পশু জবাই ও মাংস প্রক্রিয়াকরণে ঈমাম ও কসাই থাকবেন বলেও বৃহস্পতিবার জানিয়েছেন স্থানীয় সরকার মন্ত্রী খন্দকার মোশাররফ হোসেন ও সচিব আবদুল মালেক।

নির্দিষ্ট স্থানে কোরবানির পশু জবাই ও বর্জ্য অপসারণ বিষয়ে সিটি করপোরেশন ও পৌরসভার মেয়রদের নিয়ে সচিবালয়ে এক সভা শেষে মন্ত্রী মোশাররফ বলেন, জনসংখ্যা বৃদ্ধি ও অর্থনৈতিক উন্নয়নের সঙ্গে আমাদের সক্ষমতা বেড়ে যাচ্ছে, পশু কোরবানির হারও বেড়েছে। সারাদেশে ৩৫ থেকে ৪০ লাখ পশু কোরবানি হয়।এই কোরবানি নিয়ন্ত্রিতভাবে করা না হলে আমরা পরিবেশগত ও স্বাস্থ্যগতভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হাই। ধর্মীয় ব্যাপারে কাউকে বিধি-নিষেধ দেওয়াও সম্ভব না। যত্রতত্র রাস্তায় পশু জবাই করলে জনস্বাস্থ্যের ক্ষতি হওয়ার সম্ভবনা আছে। ধর্মীয় বিধিবিধান মানতে গেলে রাস্তায় আসা যাবে না- সেটাও আমরা বলতে পারি না।

সেজন্য সরকার পশু জবাইয়ের স্থান নির্ধারণ করে দিয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, সেখানে কোরবানি করেন, বর্জ্য ব্যবস্থাপনা সিটি করপোরেশন ও পৌরসভা করবে।

সচিব মালেক জানান, এবার ৮৩ হাজার ৭০০ গ্রামে গড়ে ২০টি করে পশু কোরবানি হলে ১৬ লাখের বেশি পশু কোরবানি হবে। এর বাইরে শহরাঞ্চল মিলিয়ে ৩৫ থেকে ৪০ লাখ পশু কোরবানি হতে পারে।
সরকার নির্ধারিত স্থানে পশু জবাই বাধ্যতামূলক নয় উল্লেখ করে তিনি বলেন, রাস্তার ওপর পশু জবাই না করে নির্দিষ্ট স্থানে এসে জবাই করতে আমরা সবাইকে অনুরোধ করছি।সচিব জানান, ১১টি সিটি করপোরেশনে দুই হাজার ৯৪৩টি নির্ধারিত স্থানে পশু জবাইয়ের জন্য চার হাজার ৮৮৫ জন ঈমাম এবং ১২ হাজার ৬৩৮ জন কসাই থাকবেন। জেলার নির্ধারিত পশু জবাইয়ের স্থানেও ঈমাম ও কসাই রাখা হবে। ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র আনিসুল হক, ঢাকা দক্ষিণের মেয়র সাঈদ খোকন, রংপুর সিটি করপোরেশনের মেয়র সরফুদ্দিন আহমেদ ঝন্টু, নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের মেয়র সেলিনা হায়াৎ আইভী, চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দিনসহ চারটি পৌরসভার মেয়র সভায় উপস্থিত ছিলেন।