রাষ্ট্রদ্রোহিতা ও নাশকতার অভিযোগে দায়ের করা নয়টি মামলায় জামিন পেয়েছেন বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। এসব মামলায় শুনানির জন্য ১০ অক্টোবর দিন ধার্য করা হয়েছে। আজ বুধবার দুপুরে শুনানি শেষে এ আদেশ দেন মহানগর দায়রা জজ কামরুল হোসেন মোল্লা। মামলায় রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন আবদুল্লাহ আবু। আর খালেদা জিয়ার পক্ষে ছিলেন খন্দকার মাহবুব হোসেন, ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন, ব্যারিস্টার জমির উদ্দিন সরকার, এ জে মোহাম্মদ আলী, সানাউল্লাহ মিয়া ও মাসুদ আহমেদ তালুকদার।
খালেদা জিয়ার আইনজীবীরা আদালতে জামিনের আবেদন জানান। আদালত জামিন মঞ্জুর করেন। অপরদিকে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী অভিযোগ আমলে নেওয়ার কথা বলেন এবং জামিনের বিরোধিতা করেন।নয়টি মামলায় জামিন পাওয়ার পর বড়পুকুরিয়ায় দুর্নীতি মামলায় হাজিরা দিতে বিচারক হোসনে আরা বেগমের আদালতে যান খালেদা জিয়া। এর আগে ১২ মামলায় হাজিরা দিতে বেলা ১১টা ৪০ মিনিটে আদালতে পৌঁছান খালেদা জিয়া। এ সময় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও দলীয় নেতাকর্মীরা তাঁকে ঘিরে রাখেন।
রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা : ২০১৫ সালের ২১ ডিসেম্বর রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনে জাতীয়তাবাদী মুক্তিযোদ্ধা দল আয়োজিত এক আলোচনা সভায় বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া বলেন, ‘আজকে বলা হয় এত লক্ষ শহীদ হয়েছে, এটা নিয়েও অনেক বিতর্ক আছে।’ তিনি আরো বলেন, ‘তিনি (বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান) বাংলাদেশের স্বাধীনতা চাননি। তিনি পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী হতে চেয়েছিলেন। জিয়াউর রহমান স্বাধীনতার ঘোষণা না দিলে মুক্তিযুদ্ধ হতো না।’
এরপর একই বছরের ২৩ ডিসেম্বর বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার বক্তব্যে ‘দেশদ্রোহী’ মনোভাব পাওয়া যাচ্ছে অভিযোগ করে তা প্রত্যাহার করতে উকিল নোটিশ পাঠান সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সাবেক সম্পাদক ড. মোমতাজ উদ্দিন আহমদ মেহেদী। নোটিশের জবাব না পাওয়ায় ফৌজদারি কার্যবিধির ১৯৬ ধারা মোতাবেক রাষ্ট্রদ্রোহ মামলার অনুমোদনের জন্য স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে আবেদন জানান তিনি।
চলতি বছরের ২১ জানুয়ারি রাষ্ট্রদ্রোহ মামলার অনুমোদন দেয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। এরপর ২৫ জানুয়ারি ঢাকা মহানগর হাকিম রাশেদ তালুকদারের আদালতে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী সমিতির সাবেক সম্পাদক ড. মোমতাজ উদ্দিন আহমদ মেহেদী ১২৩-এর ‘ক’, ১২৪-এর ‘ক’ ও ৫০৫ ধারায় পিটিশন মামলা করেন। এ মামলায় ৩ মার্চ আদালতে হাজির হওয়ার জন্য সমন জারি করেন আদালত। ৫ এপ্রিল এ মামলায় খালেদা জিয়া আত্মসমর্পণ করে জানিন নেন। আজ এ মামলায় খালেদা জিয়া পূর্বশর্তে জামিনের আবেদন করেন।
নাশকতার মামলা : ২০১৫ সালের জানুয়ারিতে বিএনপির হরতাল-অবরোধ চলাকালে রাজধানীর দারুস সালাম থানা এলাকায় নাশকতার অভিযোগে এ মামলাগুলো দায়ের করে পুলিশ। পরে ২০১৬ সালের মে, জুন মাসের বিভিন্ন তারিখে খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়। এসব মামলায় তাঁকে পলাতক দেখিয়ে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির আবেদন করেন তদন্তকারী কর্মকর্তারা। খালেদা জিয়াকে হুকুমের আসামি করা হয়।
খালেদা জিয়ার আইনজীবী সৈয়দ জয়নুল আবেদিন মেজবা জানান, এসব মামলার শুনানি শেষে খালেদা জিয়া নাইকো দুর্নীতি ও বড়পুকুরিয়া কয়লাখনির দুর্নীতির মামলার অভিযোগ গঠনের শুনানিতে অংশ নিতে যান।