10-08-16-Bangladesh Bank-1

বিশ্ব ব্যাংকের নবনিযুক্ত কান্ট্রি ডিরেক্টর কিমিয়াও ফ্যানের নেতৃত্বে ৮ সদস্যের একটি উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধি দল বুধবার বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের ঊর্ধত্বন কর্মকর্তাদের সাথে সৌজন্য বৈঠকে অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর জনাব এস.কে সুর চৌধুরী।এছাড়া আরো উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ ব্যাংকের চেঞ্জ ম্যানেজমেন্ট এডভাইজর জনাব আল্লাহ মালিক কাজেমী, প্রধান অর্থনীতিবিদ ডঃ বিরূপাক্ষ পাল, সিনিয়র অর্থনৈতিক উপদেষ্টা ডঃ ফয়সাল আহমেদ, সোনালী ব্যাংকের ভারপ্রাপ্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক, এসোসিয়েশন অব ব্যাংকার্স বাংলাদেশের সভাপতি ও মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এবং ষ্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংকের বাংলাদেশ কার্যালয়ের প্রধান নির্বাহী। বৈঠকের শুরুতে ডেপুটি গভর্নর জনাব এস.কে সুর চৌধুরী বিশ্ব ব্যাংকের প্রতিনিধি দলকে বাংলাদেশ ব্যাংকে স্বাগত জানান এবং দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে বিশ^ব্যাংকের অবদানের কথা স্মরণ করে ভবিষ্যতে অর্থিক খাতের পাশাপাশি অন্যান্য খাতেও অবদান রাখার উদ্দাত আহবান জানান। বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রধান অর্থনীতিবিদ ডঃ বিরূপাক্ষ পাল দেশের সামষ্টিক আর্থিক সূচকসমূহের একটি চিত্র উপস্থাপন করেন। বিশ্বব্যাংকের কান্ট্রি ডিরেক্টর মিঃ কিমিয়াও তাঁর বক্তব্যে বাংলাদেশ ব্যাংকের ও বাংলাদেশ সরকারের সাথে বিশ^ব্যাংকের দীর্ঘ সম্পর্ক ও উন্নয়ন অংশীদারীত্বের প্রসঙ্গ তুলে ধরে বিভিন্ন সেক্টরে বাংলাদেশের উন্নয়ন কর্মকান্ডে বিশ্বব্যাংকের ভূমিকা এবং অদূর ভবিষ্যতে বিভিন্ন খাতে বিশ্ব ব্যাংকের সহায়তা প্রদানের সম্ভাব্যতা বর্ননা করেন।

সভায় ষ্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংকের প্রধান নির্বাহী তাঁর বক্তব্যে পূজিঁ বাজার পুনর্গঠন, স্থানীয় মুদ্রায় দীর্ঘ মেয়াদী অর্থায়ন সুবিধা চালু এবং মুদ্রাপাচার প্রতিরোধ সংক্রান্ত ঝুঁকি ব্যবস্থাপনায় আরো নিয়ন্ত্রণ আরোপ ও নজর দেয়ার বিষয়ে গুরুত্ব ধরেন। সোনালী ব্যাংকের ভারপ্রাপ্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক রাষ্ট্রায়াত্ব ব্যাংক সমূহের আধুনিকায়ন এবং তথ্য প্রযুক্তি উন্নয়ন কার্যক্রমের উপর গৃহীত পদক্ষেণপ ও ইতোমধ্যে অর্জিত অগ্রগতি বর্ননা করেন। এছাড়া এসোসিয়েশন অব ব্যাংকার্স বাংলাদেশের সভাপতি ও মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক দেশের যোগাযোগ ব্যাবস্থার আধুনিকায়ন, অবকাঠামোগত উন্নয়নে বিশ্বব্যাংকের অংশগ্রহনের আহবান জানান। বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের সাথে সাথে দেশের শিল্পায়ন, নগরায়ন, প্রযুক্তি ও জনসংখ্যার বিভিন্ন পরিবর্তনের কথা উল্লেখপূর্বক বাংলাদেশ ব্যাংকের সিনিয়র অর্থনৈতিক উপদেষ্টা ডঃ ফয়সাল আহমেদ এসব খতে বিশ^ব্যাংকের কার্যকর ও সুচিন্তিত অংশগ্রহণ কামনা করেন। চেঞ্জ ম্যানেজমেন্ট এডভাইজর জনাব কাজেমী উৎপাদন খাতে পরিবেশগত ঝুঁকি মোকাবেলা, তথ্য প্রযুক্তি নিরাপত্তা এবং সরকারের বাজেট সহায়তার ক্ষেত্রে বিশ্বব্যাংকের আরো সহায়তা বৃদ্ধির বিষয়ে বক্তব্য প্রদান করেন। বিশ্ব ব্যাংকের মূখ্য অর্থনীতিবিদ ডঃ জাহিদ হোসেন বৈশ্বিক অর্থনৈতিক গতিধারা ও বাংলাদেশের বহিঃখাত এবং সম্প্রতি ঘটে যাওয়া কিছু বিয়োগান্তক ঘটনার প্রেক্ষিতে ভবিষ্যতে অর্থনীতির উপর সাম্ভব্য প্রভাব মোকাবেলায় কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহনের জন্য বাংলাদেশ ব্যাংককে আহবান জানান। ডেপুটি গর্ভনর মহোদয় সরকারী আর্থিক প্রতিষ্ঠানসমূহের আধুনিরকায়ন, দীর্ঘমেয়াদী পেনশন ফান্ড গঠন, পূজিঁ বাজার উন্নয়ন, শ্রমজীবীদের আবাসন ব্যবস্থাপর উন্নয়ন এবং অন্যান্য বিষয়ে বিশ্ব ব্যাংকের সহযোগীতা কামনা করেন।

বিশ্ব ব্যাংকের কান্ট্রি ডিরেক্টর মিঃ কিমিয়াও তাঁর বক্তব্যে বাংলাদেশকে একটি অভিঘাতসহনশীল জাতি হিসাবে উল্লেখপূর্বক খাদ্য নিরাপত্তা, সামাজিক ও আর্থিক সূচকে অর্জিত অগ্রগতির প্রশংসা করেন এবং বর্তমানে বাংলাদেশ বিশ^ ব্যাংকের সহযোগী প্রতিষ্ঠান আইডিএ-এর সর্বোচ্চ অর্থায়ন সুবিধা ভোগকারী দেশ হিসেবে উল্লেখ করেন। দেশের আর্থিক খাত উন্নয়নে বিশ্ব ব্যাংকের বিদ্যমান সহায়তার পাশাপাশি পরিবহন, শিক্ষা, ভৌত অবকাঠামো, যোগাযোগ ব্যবস্থা জ্বালানী, পূজিঁ বাজার উন্নয়ন, আর্থিক সেবা ব্যবহারের সুযোগ বৃদ্ধি প্রভৃতি খাতে বিশ্বব্যাংকের আর্থিক সহায়তা অব্যহত রাখার বিষয়ে আগ্রহ প্রকাশ করেন। সভা শেষে ডেপুটি গভর্নর জনাব এস.কে সুর বাংলাদেশের উন্নয়ন কর্মকান্ডে দীর্ঘদিনের পরীক্ষিত উন্নয়ন অংশিদার ও বন্ধু হিসাবে বিশ্ব ব্যাংকের সাথে বাংলাদেশের সম্পর্ক আরো সুদৃঢ় হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন।