মোসাদ্দেক আলী ফালু।

বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যানের পদ থেকে পদত্যাগ করেছেন মোসাদ্দেক আলী ফালু। পদপ্রাপ্তির সাড়ে ৪ ঘণ্টার মাথায় পদত্যাগ করলেন তিনি। বিদায়ী কমিটিতে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ছিলেন তিনি। বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া বরাবর লেখা এ পদত্যাগপত্রটি শনিবার (৬ আগস্ট) বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে দলের নয়াপল্টনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে পৌঁছে দেয়া হয়েছে। বিএনপির দলীয় কার্যালয়ের একটি সূত্র এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। পদত্যাগপত্রে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান পদে মনোনীত করায় খালেদা জিয়ার প্রতি গভীর কৃতজ্ঞতা জানিয়ে ফালু লেখেন, ‘সম্পূর্ণ ব্যক্তিগত ও শারীরিক কারণে আমার পক্ষে ওইপদে থাকা সম্ভব হচ্ছে না। তাই নতুন কমিটির ভাইস চেয়ারম্যান পদ থেকে পদত্যাগের সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’

পদত্যাগপত্রটি গ্রহণ করে ভাইস চেয়ারম্যানের পদ থেকে অব্যাহতি দেয়ার জন্য বিএনপি চেয়ারপারসনের প্রতি বিশেষ অনুরোধ জানিয়েছেন মোসাদ্দেক আলী ফালু। সত্তরের দশকে সামান্য কর্মচারী থেকে বিএনপির রাজনীতিতে প্রভাবশালী চরিত্র হিসেবে আবির্ভূত হন মোসাদ্দেক আলী ফালু। এরশাদ বিরোধী আন্দোলনে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার পাশে পাশে ছিলেন তিনি। এরপর সংসদ সদস্য, দেশের অন্যতম বড় ব্যবসায়ী হয়ে ওঠেন। ২০০১ সালে বিএনপি ক্ষমতায় আসার পর প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার রাজনৈতিক সচিব হন ফালু। এ সময় তিনি বিএনপির কেন্দ্রীয় ও মাঠ পর্যায়ের নেতাদের নজরে আসেন।

অধ্যাপক একিউএম বদরুদ্দোজা চৌধুরী রাষ্ট্রপতির পদ থেকে সরে যাওয়ার পর তার সঙ্গে চলে যান বিএনপির এমপি মেজর (অব.) আবদুল মান্নান ও মাহী বি চৌধুরী। তারা সংসদ সদস্য পদ থেকে পদত্যাগ করেন। মেজর (অব.) মান্নানের ছেড়ে দেয়া আসন তেজগাঁও এ উপনির্বাচন করে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন ফালু। এই প্রথম এমপি হন তিনি। পরে একাধিক মিডিয়া প্রতিষ্ঠা করেন। খালেদা জিয়ার ঘনিষ্ট হওয়ায় দূতাবাসগুলোতেও তার ভালো যোগাযোগ রয়েছে। শেয়ার ব্যবসা করেও আলোচিত হয়েছেন ফালু। শেয়ারবাজার কেলেঙ্কারির হোতাদের তালিকায় তারও নাম রয়েছে।

আওয়ামী লীগের শাসনামলে টেলিভিশনের মালিকরা ‘টেলিভিশন ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন বাংলাদেশ’ গঠন করে। কিন্তু সভাপতি হন এনটিভির মালিক মোসাদ্দেক আলী ফালু। অথচ এই কমিটিতে সদস্য হিসেবে রয়েছেন: কামাল আহমদ মজুমদার এমপি, সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর, গোলাম দস্তগীর গাজী, একে আজাদ, প্রধানমন্ত্রীর ঘনিষ্ঠজনখ্যাত ড, মাহফুজুর রহমান প্রমুখ।

পুঁজিবাজার থেকে শত শত কোটি টাকা আত্মসাতে ফালুর জড়িত থাকার অভিযোগের বিষয়ে তদন্ত করছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। একই সঙ্গে বিপুল পরিমাণ অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগও অনুসন্ধান করবে সংস্থাটি।