রাজশাহীর তানোরে দাফনের ৪ মাস পর কবর থেকে শিশু জাহিদের লাশ উত্তোলন করা হয়েছে। আদালতের নির্দেশে শনিবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে এ লাশের শুধু হাড় ও মাথার খুলি উত্তোলন করে তানোর থানা পুলিশ। এসময় উপস্থিত ছিলেন আদালতের নিযুক্ত ম্যাজিস্ট্রেট সমর কুমার পাল।
লাশ উত্তোলনের সময় নিহত শিশু জাহিদের বাবা আলম অভিযোগ করে এ প্রতিবেদকে জানান, তার নিহত ছেলে জাহিদ তাদের বংশের একমাত্র পুত্র সন্তান আর এজন্যই তার আপন ভাই ও ভাবিরা তাকে সম্পত্তি থেকে বঞ্চিত করতে পরিকল্পিত ভাবে হত্যা করে দূর্ঘটনা বলে চালিয়ে দেওয়ার অপচেষ্টা করে। ছেলে হত্যার বিচার চেয়ে তার মা গত ৭ই জুন রাজশাহীর তানোর কোর্টের ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলায় আসামী দেখানো হয়েছে শাফিউল ইসলাম সাকরু, হাসেম হোসেন বাদল ও তার স্ত্রী রুনা বেগমকে ।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা তানোর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) রুবেল উদ্দীন জানান, শিশু জাহিদের রহস্যজনক মৃত্যুর পর থানা পুলিশকে না জানিয়ে স্থানীয় প্রভাবশালীদের সহায়তায় লাশ দাফন করা হয়। তবে নিহতের পিতা-মাতা এতে সন্তুষ্ট না হয়ে আদালতে মামলা করে। ফলে আদালত নির্দেশনায় লাশ উত্তোলন করে ময়না তদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে। প্রসঙ্গ, চলতি বছরের ১ এপ্রিল তানোর পৌর এলাকার চাপড়া পূর্বপাড়া গ্রামের আলমের ৭ বছরের একমাত্র পুত্র জাহিদ নিজ বাড়ির মাটির দুইতলা বিশিষ্ট ঘরের রেলিংয়ে খেলছিলো। এঅবস্থায় জাহিদকে সেখান থেকে ধাক্কা দিলে নিচে পড়ে গুরুতর আহত হয়। কিন্তু তার চাচী রুনা বেগম রেলিং থেকে জাহিদ পড়ে যায় বলে তাৎক্ষণিক অন্যদের জানান। এসময় চিকিৎসার জন্য প্রথমে উপজেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্রে ভর্তি করা হয়। পরে অবস্থার অবনতি হলে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয় স্থানীয়রা। চিকিৎসা শেষ না হতেই অর্থের অভাবে ৭ দিনের মাথাই বাড়ি নেয়ার পর জাহিদ মারা যায়।
এমন মৃত্যুর ঘটনার বেশকিছু দিন পর নিহত জাহিদের বড় বোন আলপোনা তার মাকে ঘটনার বিস্তারিত জানায়। ছেলেকে হত্যার ঘটনা জেনে মা বাদী হয়ে গত ৭ই জুন রাজশাহী চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে জাহিদের চাচা শাফিউল, বাদল ও চাচী রুনা বেগমের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়ের করে।
মিজানুর রহমান, তানোর (রাজশাহী) প্রতিনিধি