একাত্তরে মানবতাবিরোধী অপরাধে ফাঁসি কার্যকর হওয়া বিএনপি নেতা সালাহউদ্দিন কাদের চৌধুরীর ছোট ছেলে হুম্মাম কাদের চৌধুরীকে পুলিশের গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) সদস্যরা তুলে নিয়ে গেছেন বলে অভিযোগ করেছেন তাঁর আইনজীবীরা।হুম্মাম কাদের চৌধুরীর আইনজীবী আমিনুল গণী টিটোর সহকারী আইনজীবী চৌধুরী মো. গালিব রাগীব বলেন, মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ২০১৩ সালের ১ অক্টোবর সালাহউদ্দিন কাদেরকে মৃত্যুদন্ডাদেশ দেওয়া হয়। এই রায় ফাঁস করার মামলার শুনানিতে হাজিরা দিতে বৃহস্পতিবার দুপুর পৌনে ১২টার দিকে প্রাইভেট কারে ঢাকার মহানগর দায়েরা জজ আদালতের সামনের রাস্তায় আসেন হুম্মাম। তখন তিন-চারজন লোক নিজেদের ডিবি পরিচয়ে হুম্মামকে বলেন, তাঁর বিরুদ্ধে অন্য মামলার গ্রেপ্তারি পরোয়ানা রয়েছে। এ সময় হুম্মাম তাঁদের কাছে পরোয়ানা দেখতে চান। এরপর তাঁকে একটি সাদা মাইক্রোবাসে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়।
হুম্মামের আইনজীবী চৌধুরী মো. গালিব রাগীব বলেন, হুম্মামকে তুলে নিয়ে যাওয়ার বিষয়টি তিনি ঢাকার সাইবার ট্রাইব্যুনালে লিখিতভাবে জানিয়েছেন।তবে হুম্মামকে আটক করা বা গ্রেপ্তারের বিষয়ে কোনো তথ্য নেই বলে প্র জানান ঢাকা মহানগর পুলিশের উপকমিশনার (তথ্য ও জনসংযোগ) মাসুদুর রহমান।তাদের অন্যতম আইনজীবী চৌধুরী মো. গালীব রাগীব বলছেন, সাকা চৌধুরীর স্ত্রী ফারহাত কাদের চৌধুরী ও ছেলে হুম্মাম বৃহস্পতিবার তথ্য-প্রযুক্তি আইনের মামলায় হাজিরা দিতে আদালতে যান। কিন্তু গাড়ি থেকে নামার পরপরই ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালত ভবনের নিচ থেকে ডিবি পুলিশ পরিচয়ে হুম্মামকে নিয়ে যাওয়া হয়।
ফারহাত কাদের চৌধুরীকে তারা বলেছে – আপনি কোনো কথা বলবেন না, আমাদেরকে আমাদের কাজ করতে দিন।পরে ফারহাত কাদের ওই মামলায় হাজিরা দেন বলে জানান রাগীব।সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর যুদ্ধাপরাধের রায় ফাঁসের অভিযোগে দায়ের করা এ মামলায় যুক্তিতর্ক উপস্থাপনের দ্বিতীয় দিন ছিল বৃহস্পতিবার।আসামিপক্ষের প্রধান আইজীবী আমিনুল গণী টিটো বলেন, এ ঘটনাটি ঘটেছে… আমি জানি। বিচারককে এ বিষয়ে আমি অভিযোগ জানাব।তবে হুম্মামকে পুলিশ আটক করেছে কি না, আটক করা হলে তাকে কোথায় নেওয়া হয়েছে, এসব বিষয়ে পুলিশের কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।এ বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে ঢাকা মহানগর পুলিশের উপকমিশনার (গণমাধ্যম) মো. মাসুদুর রহমান ফোন ধরেননি। এসএমএস করে তথ্য চাইলে জবাবে পাল্টা এসএমএসে তিনি বলেন, তিনি মিটিংয়ে আছেন।
উপকমিশনার মারুফ হোসেন সরদারের কাছ থেকেও এ বিষয়ে কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি।যুদ্ধাপরাধের অভিযোগে ২০১৩ সালের ১ অক্টোবর সাকা চৌধুরির ফাঁসির রায় দেয় ট্রাইব্যুনাল। কিন্তু তার আগেই ইন্টারনেটে সেই রায় প্রকাশ হয়ে যায়।এই ঘটনায় সাকার স্ত্রী ফারহাত কাদের চৌধুরি, ছেলে হুম্মাম কাদের চৌধুরি, সাকা চৌধুরির আইনজীবী ফখরুল ইসলাম সহ সাত জনের বিরুদ্ধে তথ্য প্রযুক্তি আইনে মামলার করে ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউশন বিভাগ।
মিন্টো রোডে গোয়েন্দা পুলিশ কার্যালয়ে হুম্মামদের পারিবারিক বন্ধু পরিচয় দিয়ে সায়েম নামের একজন বলেন, তিনিও ওই গাড়িতে ছিলেন।ছয়জন গাড়ির গতিরোধ করে। হুম্মামকে গাড়ি থেকে নামিয়ে ডিবির পরিচয় দেয়।হুম্মামকে ডিবি কার্যালয়েই রাখা হয়েছে বলে দাবি করেন সায়েম।