শাজনীন হত্যায় শহীদের মৃত্যুদণ্ড বহাল ট্রান্সকম গ্রুপের মালিক লতিফুর রহমানের কন্যা শাজনীন তাসনিম রহমান হত্যা মামলায় বাড়ির কাজের লোক শহীদুল ইসলাম ওরফে শহীদের মৃত্যুদণ্ড বহাল রেখেছে আপিল বিভাগ। মৃত্যুদণ্ড পাওয়া অপর চার আসামিকে বেসুর খালাস দেয়া হয়েছে। তারা হলেন, সৈয়দ সাজ্জাদ মইনুদ্দিন হাসান, হাসানের সহকারী বাদল এবং গৃহপরিচারিকা দুই বোন এস্তেমা খাতুন (মিনু) ও পারভীন। মঙ্গলবার (০২ আগস্ট) প্রধান বিচারপতি এসকে সিনহার নেতৃত্বে আপিল বিভাগের পাঁচ সদস্যের বেঞ্চ এ রায় দেন।

১৯৯৮ সালের শাজনীন হত্যাকাণ্ডের প্রায় ১৮ বছর পর গত ২৯ মার্চ প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগের তিন সদস্যের বেঞ্চে ধর্ষণ ও হত্যার দায়ে ফাঁসির আদেশ পাওয়া পাঁচ আসামির আপিলের শুনানি শুরু হয়। গত ৫ এপ্রিল বিচারপতি নাজমুন আরা সুলতানা ও বিচারপতি মোহাম্মদ ইমান আলীকে যুক্ত করে পাঁচ সদস্যের বৃহত্তর বেঞ্চ গঠন করে শুনানি নেয়া হয়। ১১ মে ওই বৃহত্তর বেঞ্চেই আসামিদের আপিল শুনানি শেষে রায় অপেক্ষমাণ (সিএভি) রাখা হয়। বাদিপক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী নজরুল ইসলাম চৌধুরী। অপরদিকে আসামিপক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী খন্দকার মাহবুব হোসেন ও এস এম শাহজাহান। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম।

মামলার বিবরণ থেকে জানা যায়, ১৯৯৮ সালের ২৩ এপ্রিল রাতে গুলশানে নিজ বাড়িতে খুন হন সেই সময়ের স্কলাসটিকা স্কুলের নবম শ্রেণির ছাত্রী শাজনীন তাসনিম রহমান। পরদিন শাজনীনের বাবা লতিফুর রহমান গুলশান থানায় দণ্ডবিধির ৩০২ ধারায় একটি হত্যা মামলা করেন। সে মামলার দীর্ঘ প্রক্রিয়া শেষে আজ আপিল বিভাগের চুড়ান্ত রায় ঘোষণা করা হলো। এর আগে ২০০৩ সালের ২ সেপ্টেম্বর ঢাকার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন বিশেষ ট্রাইব্যুনালের বিচারক কাজী রহমতউল্লাহ শাজনীনকে ধর্ষণ ও খুনের পরিকল্পনা এবং সহযোগিতার দায়ে হাসান, শহীদ, বাদল, এস্তেমা খাতুন, পারভীন ও কাঠমিস্ত্রি শনিরাম মণ্ডলকে মৃত্যুদণ্ড দেন।

বিচারিক আদালতের দেয়া ওই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করেন আসামিপক্ষ। আপিলের শুনানি শেষে ২০০৬ সালের ১০ জুলাই হাইকোর্ট হাসান, শহীদ, বাদল, মিনু ও পারভীনের ফাঁসির আদেশ বহাল রেখে আসামি শনিরাম মণ্ডলকে খালাস দেন। হাইকোর্টের ওই রায়ের বিরুদ্ধে আপিলের অনুমতি চেয়ে আবেদন (লিভ টু আপিল) করেন মৃত্যুদণ্ড বহাল থাকা চার আসামি মইনুদ্দিন হাসান, বাদল, মিনু ও পারভীন। ২০০৯ সালের ২৬ এপ্রিল এই চার আসামিকে আপিলের অনুমতি দেয় সর্বোচ্চ আদালত।

মৃত্যুদণ্ড পাওয়া অপর আসামি শহীদুল জেল আপিল করেন। সাত বছর পর গত ২৯ মার্চ আপিলের ওপর শুনানি শুরু হয়ে ১১ মে শেষ হয়। ওইদিন মামলাটি রায় ঘোষণার জন্য অপেক্ষমাণ (সিএভি) রাখে আপিল বিভাগ। এছাড়া হাই কোর্টে শনিরাম মণ্ডলের খালাসের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করা হলে তা আগেই খারিজ হয়ে যায়।