গুলশান হামলায় সন্দেহভাজন বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত জাপানি নাগরিক সাইফুল্লাহ ওজাকি বাংলাদেশ থেকে দুই জঙ্গিকে তুরস্ক যেতে সহায়তা করেছিলেন বলে সন্দেহ করছে সে দেশের পুলিশ। স্থানীয় পুলিশের বরাত দিয়ে জাপানি সংবাদমাধ্যম জাপান টাইমস জানিয়েছে, ওজাকি তাদেরকে জাপান হয়ে তুরস্কে পালিয়ে যেতে সহায়তা করেছিলেন। এর আগের এক প্রতিবেদনে, অসমর্থিত সূত্রের বরাত দিয়ে সাইফুল্লাহ ওজাকির তুরস্কে যাবার ব্যর্থ-চেষ্টার কথা জানিয়েছিল তারা।
উল্লেখ্য, জঙ্গি সংশ্লিষ্টতার অভিযোগে যে ১০ সন্দেহভাজনকে বাংলাদেশের পুলিশ খুঁজছে, মোহাম্মাদ সাইফুল্লাহ ওজাকি তাদেরই একজন। ২০০২ সালে উচ্চ শিক্ষার জন্য জাপানে যান সাইফুল্লাহ ওজাকি। সেখানেই তিনি ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেন। ২০১১ সালে পিএইচডি শেষ করে কিয়োটোর রিৎসুমিকান বিশ্ববিদ্যালয়ের কলেজ অব ইন্টারন্যাশনালে শিক্ষকতা শুরু করেন। তার স্ত্রী একজন জাপানি নাগরিক। ২০১৫ সালে পরিবার নিয়ে ইউরোপে পাড়ি জমান সাইফুল্লাহ। এরপর থেকেই তার খোঁজ মিলছে না। রিৎসুমিকান বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বলেছে, গত জানুয়ারি থেকে অনুমতি ছাড়াই তিনি প্রতিষ্ঠানে অনুপস্থিত ছিলেন। এ কারণে তাকে বরখাস্ত করা হয়।
জাপান টাইমস-এর শনিবারের প্রতিবেদনে বলা হয়, গত বছর দুই জঙ্গি সিরিয়ায় আইএসের সঙ্গে যোগ দিতে জাপানকে স্টপিং পয়েন্ট হিসেবে ব্যবহার করেছিল বলে ধারণা করছে জাপানের পুলিশ। বাংলাদেশ থেকে জাপান এরপর তুরস্ক এবং সেখান থেকে সিরিয়ায় পাড়ি জমিয়েছিল তারা। আর এ কাজে ওজাকির সহযোগিতা ছিল বলে মনে করছেন তারা। এর আগের এক প্রতিবেদনে জাপান টাইমস অসমর্থিত সূত্রের বরাত দিয়ে জানিয়েছিল, তুরস্কে ঢোকার চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়েছিলেন সাইফুল্লাহ ওজাকি। নিউ ইয়র্ক টাইমসের বরাত দিয়ে জাপান টাইমসের প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, ওজাকিসহ তিন ব্যক্তি বাংলাদেশের জঙ্গি ও দেশের বাইরের সংগঠকদের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষার কাজ করতেন।
এদিকে পাঁচ জেএমবি সদস্য ভারতে আছে বলে সন্দেহ প্রকাশ করে বাংলাদেশ সরকার ভারতীয় কর্তৃপক্ষের হাতে যে তালিকা তুলে দিয়েছে তাতে ওজাকির নামও রয়েছে। ভারতীয় সংবাদমাধ্যম টাইমস অব ইন্ডিয়ার খবরে বলা হয়, ভারত সফররত স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল গত বৃহস্পতিবার নয়াদিল্লিতে দেশটির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিংয়ের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় এক বৈঠকে সন্দেহভাজন ৫ জেএমবি সদস্যের ব্যাপারে আলোচনা করেন।
উল্লেখ্য, মোহাম্মদ সাইফুল্লাহ ওজাকি ওরফে সুজিত দেবনাথের বাড়ি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগর উপজেলার জিনোদপুর ইউনিয়নের কড়ইবাড়ি গ্রামে। তার বাবা জনার্দন দেবনাথ এলাকায় পরিচিত কাপড় ব্যবসায়ী। জনার্দন জানান,ধর্মান্তরিত হওয়ার পর পরিবারের সঙ্গে আর যোগাযোগ করেননি সুজিত। সূত্র: জাপান টাইমস