প্রবাদের ভাষায় কথায় আছে টাকায় যখন কথা বলে, তখন সব সত্য চুপ করে থাকে। নির্বাচন কমিশনের ক্ষেত্রে এমনটি ঘটেছে বলে অভিযোগ করেছেন ঝিনাইদহের শৈলকুপার আবাইপুর ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের প্রার্থী মুক্তার আহম্মেদ মৃধা। তিনি জানান, যার কালো টাকা ও সন্ত্রসের কাছে পরাস্থ হয়ে নৌকার প্রার্থী হিসেবে আমি নির্বাচন থেকে সরে দাড়াতে বাধ্য হয়েছিলাম সেই সতন্ত্র প্রার্থী হেলাল উদ্দীনকেই নির্বাচন কমিশন আওয়ামী লীগের দলীয় প্রার্থী হিসেবে গেজেটে নাম প্রকাশ করেছে।
অভিযোগের সত্যতা জানতে রোববার ঝিনাইদহ জেলা নির্বাচন অফিস থেকে সরকারী গেজেট সংগ্রহ করা হয়। সরকারী গেজেটে রিটার্নিং অফিসার জাহিদুল ইসলামের নামযুক্ত তালিকায় আওয়ামী লীগের দলীয় প্রার্থী হিসেবে স্বতন্ত্র প্রার্থী হেলালকে দেখানো হয়েছে।
জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা জাহাঙ্গীর হোসেন জানান, শৈলকুপা উপজেলার ১৪ টি ইউনিয়নে ১০টিতে আওয়ামী লীগের দলীয় প্রার্থী চেয়ারম্যন হিসেবে নির্বাচিত হন। বাকী চারটি ইউনিয়নে স্বতন্ত্র প্রার্থী জয়লাভ করেন।
নির্বাচন কর্মকর্তা জাহাঙ্গীর হোসেন আরো জানান, সরকারী গেজেট তিনিও দেখে হতাশ হয়েছেন। গেজেট প্রকাশের সময় এটা ছাপার ভুল হয়েছে দাবী করে তিনি বলেন, ২/১ দিনের মধ্যে ভুলটি সংশোধন করা হবে।
শৈলকুপার রিটার্নিং অফিসার জাহিদুল ইসলাম জানান, নির্বাচন কমিশনের ছাপা খানা থেকে এটা ভুল করেছে। আমরা সংশোধন করে রোববার বিকালে পাঠিয়ে দিয়েছি। খুব দ্রুত সংশোধিত গেজেট পাওয়া যাবে। এদিকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হেলাল উদ্দীনকে আওয়ামীলীগের দলীয় প্রার্থী হিসেবে সরকারী গেজেটে নাম দেখে আবাইপুর ইউনিয়নে ক্ষোভ এবং অসন্তোষ ছড়িয়ে পড়েছে।
মুক্তার আহম্মেদ মৃধার ছেলে এড সুমন মৃধা ক্ষোভ প্রকাশ করে জানিয়েছেন, যে ব্যক্তি জীবনে একদিনও আওয়ামীলীগ করেনি, তাকে সরকারী গেজেটে দলীয় চেয়ারম্যান হিসেবে দেখানো হয়েছে টাকার বিনিময়ে।
তিনি অভিযোগ করেন, নির্বাচনের সময় কোটি কোটি টাকার বিনিময়ে আওয়ামীলীগের নেতাদের ম্যানেজ করে হেলাল ১১ নং আবাইপুর ইউনিয়নে আওয়ামীলীগের প্রার্থী হতে চেয়েছিলেন। কিন্তুু মুক্তার আহমেদ মৃধা শেখ হাসিনার সাথে দেখা করে দলীয় মনোনয়ন নিয়ে আসেন।
মনোনয়ন পাওয়ার পর যেসব নেতারা টাকা নিয়েছিল সেই সব নেতারা হেলালকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসাবে দাড় করিয়ে পুলিশের দাপট খাটিয়ে আওয়ামীলীগ নেতা কর্মীদের উপর এক ভয়াবহ নির্যাতন শুরু করে। যার ফলে নির্বাচনের একদিন আগে অসহায় হয়ে নির্বাচন বয়কট করেন দলীয় প্রার্থী মুক্তার আহম্মেদ।
সরকারী গেজেটে স্বতন্ত্র প্রার্থী হেলালের নাম দেখে আবাইপুর ইউনিয়নের মানুষ বলাবলি করছে, এখানেও টাকার খেলা চলেছে। আসলে টাকাই সব। এ ব্যাপারে স্বতন্ত্র প্রার্থী হেলাল উদ্দীন জানান, তিনিও গেজেট দেখে অবাক হয়েছেন। বিষয়টি সংশোধনের জন্য তিনি শৈলকুপা রিটার্নিং অফিসারের সাথে কথা বলেছেন বলেও চেয়ারম্যান হেলাল জানান।
জাহিদুর রহমান তারিক, ঝিনাইদহ প্রতিনিধি