হাইকোর্টে তারেক রহমানের সাজা হওয়ার প্রতিবাদে বিএনপি ঘোষিত কর্মসূচি বানচাল করার জন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা নেতাকর্মীদের বাড়িতে জঙ্গিদের মতো হামলা চালাচ্ছে বলে অভিযোগ দলটির। শনিবার দুপুরে রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে দলের সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী এ অভিযোগ করেন।
পূর্ব ঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী, বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে হাইকোর্ট সাজা দেয়ার প্রতিবাদে আজ শনিবার ঢাকা মহানগরীসহ দেশের সকল মহানগর ও জেলা শহরে বিক্ষোভ সমাবেশ ও প্রতিবাদ মিছিল হওয়ার কথা রয়েছে। রিজভী বলেন, ‘তারেক রহমানকে সাজা দেয়ার প্রতিবাদে বিএনপি ঘোষিত কর্মসূচি বানচাল করার জন্য সরকারের পেটোয়া বাহিনীতে পরিণত আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সদস্যরা গতকাল (২২ জুলাই) রাত থেকে দেশের বিভিন্ন এলাকায় দলের নেতাকর্মীদের বাড়িতে জঙ্গিদের মতো হামলা চালাচ্ছে। এই হামলা চালিয়ে বাড়ি-ঘরে লুটতরাজ, ভাঙচুর এবং ধরপাকড়ের এক বিভীষিকাময় পরিস্থিতির সৃষ্টি করেছে।’
তিনি দাবি করে বলেন, ‘বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার জাতীয় ঐক্যের আহ্বান, দেশের শান্তি ও স্থিতি, জঙ্গিদের সহিংস দানবীয় কর্মকাণ্ড দমন এবং মৃত্যুভয়ে সন্ত্রস্ত জনগণকে নিরাপত্তা বিধান সরকারের মুখ্য লক্ষ্য নয়। সরকার বিদ্যমান জঙ্গি তৎপরতা টিকিয়ে রেখে অরাজকতার পরাক্রম থেকে দেশবাসীকে নিস্তার দিতে ইচ্ছুক নয়। কারণ, এই পরিস্থিতি একটি অবৈধ সরকারের জন্য পরমপ্রাপ্তি।’
বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘সরকার দৃঢ়ভাবে মনে করে, এই পরিস্থিতি বজায় থাকলেই অনির্বাচিত সরকারের বিরুদ্ধে জনগণের দৃষ্টি ভিন্নখাতে প্রবাহমান থাকবে। জঙ্গিবাদ টিকে থাকলে বিরোধী দলের ওপর ক্রমাগত দায় চাপিয়ে যেতে পারলে এই ভোটারবিহীন অবৈধ সরকারের জন্য লাভজনক। তাই জঙ্গি দমনে সরকারের কোনো কার্যকর পদক্ষেপ কখনো ছিল না এবং তারা নিজেদের ব্যর্থতাও কখনো স্বীকার করেনি। তাদের এই নির্লিপ্ততায় উগ্রবাদিরা আরো বলশালী হয়েছে এবং শিকড় আরো গভীরে গেছে।’
তিনি বলেন, ‘সরকারের সকল অপকৌশল অকার্যকর হয়ে জঙ্গি পরিস্থিতির দরুণ দেশে-বিদেশে এই বেআইনি সরকারের বিরুদ্ধে ব্যর্থতার অভিযোগ আরো তীব্র হয়ে উঠেছে। দেশ-বিদেশের মানুষ আরো মনে করে যে, বাংলাদেশের সরকার ও সরকার প্রধানের কোনো বক্তব্যেরই তল-অতল পাওয়া ভার। এটি বিভ্রান্তি তৈরির এক অভিনব কৌশল।’
রুহুল কবির রিজভী দাবি করে বলেন, ‘উগ্রবাদী জঙ্গিগোষ্ঠী নিয়ে সরকারের রহস্যজনক আচরণে মানুষের মনে তীব্র সন্দেহ এবং প্রশ্ন জন্ম নিয়েছে। সেটিকে ঢেকে দিতেই তারেক রহমানকে ষড়যন্ত্রমূলকভাবে মুদ্রাপাচারের মিথ্যা মামলায় সাজা দেয়া হয়েছে। বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যানকে এই সাজা দেয়া সরকারের অন্ধহিংসার বহিঃপ্রকাশ।’
সংবাদ সম্মেলনে আরো উপস্থিত ছিলেন- বিএনপির যুগ্ম-মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, গণশিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট সানাউল্লাহ মিয়া, ধর্মবিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট মাসুদ আহমেদ তালুকদার, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট আব্দুস সালাম আজাদ, আব্দুল আউয়াল খান, স্বেচ্ছাসেবক দলের সিনিয়র সহ-সভাপতি মুনীর হোসেন, যুগ্ম-সম্পাদক আমিনুল ইসলাম প্রমুখ।