রাজশাহীর তানোরে হঠাৎ ডায়রিয়ার প্রকোপ দেখে দিয়েছে। চলতি মাসের ১২ তারিখ মঙ্গলবার থেকে গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত ৩ দিনে প্রায় দুই শতাধিক মানুষ ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। এঅঞ্চলে হঠাৎ করে ডায়রিয়া ছড়িয়ে পড়ায় উপজেলা জুড়ে সাধারণ মানুষের মাঝে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে।
এনিয়ে তানোর পৌর কর্তৃপক্ষ ও উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের উদ্যোগে মেডিকেল টিম মহামারিতে আক্রান্ত তানোর পৌর এলাকার গোকুল ও মথুরা নামের দুটি মহল্লায় বৃহস্পতিবার দুপুরে পরিদর্শন করেছে। এদিকে, স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পর্যাপ্ত বেডের অভাবে প্রায় রোগী মেঝেতে চিকিৎসা নিচ্ছেন। তবে, চিকিৎসা নিতে আসা ভুক্তভোগী রোগীদের অভিযোগ হাসপাতাল থেকে ওষুধ তো দূরের কথা খাবার স্যালাইনও মিলছে না। ফলে নিরুপাই হয়ে বাইরে থেকে ওষুধ কিনে রোগীদের চিকিৎসা নিতে হচ্ছে।
বৃহস্পতিবার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স হাসপাতালে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, তানোর পৌর এলাকার গোকুল-মথুরা মহল্লার রাসেদুল, লুৎফর, সাইদুর, মোজাম ডায়রিয়া রোগে আক্রান্ত হয়ে গত মঙ্গলবার স্বাস্থ্য কেন্দ্রে ভর্তি হয়েছেন। তাদের মতো ওই মহল্লার আরও ৪০ জন রোগী ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসা নিচ্ছেন। তবে, এসব রোগীর মধ্যে শুধু পুরুষরাই আক্রান্ত হয়েছেন বেশি। তাদের মহল্লার আরও দেড় শতাধিক মানুষ ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে কেউ হাসপাতালে আবার কেউ বিভিন্ন ক্লিনিক ও বাসা বাড়িতে চিকিৎসা নিচ্ছেন।
এছাড়া তানোর পৌর এলাকার চাপড়া, বুরুজ, জিওল-চাঁদপুর, তালন্দ উপরপাড়াসহ উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় এ রোগের প্রকোপ মহামারি আকার ধারণ করেছে। ফলে আতঙ্কে দিন কাটছে হাজারো মানুষের। অবস্থা থেকে পরিত্রাণ পেতে সাধারণ মানুষ সরকারের দ্রুত সহায়তা কামনা করেছেন।
হঠাৎ এ রোগের কেন প্রাদূভাব ঘটেছে এসম্পর্কে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের টিএইচও ইসমাত আরা কোন তথ্য জানাতে পারেন নি। রোগীদের মাঝে ওষুধ ও স্যালাইন সরবরাহের ব্যাপারে তিনি জানান, ডায়রিয়ার ওষুধ সরকারী ভাবে হাসপাতালে সরবরাহ নেই। কিন্তু খাবার স্যালাইন রোগীদের দেয়া হচ্ছে না সঠিক নয়। তবে, স্যালাইন সংকটের কারণে পৌর কর্তৃপক্ষকে বলা হয়েছে বলেও জানান তিনি।
এ ব্যাপারে তানোর পৌরসভার মেয়র মিজানুর রহমান মিজান জানান, বিষয়টি নিয়ে পৌরসভা পরিষদে আলোচনা হয়েছে। একইসঙ্গে তদন্ত করে দ্রুত ব্যবস্থা নেয়ার জন্য পৌর স্বাস্থ্য কর্মকর্তাকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে।#