লর্ডসে ফিরছে পাকিস্তান, সবার নজরে আমির

বৃহস্পতিবার সিরিজের প্রথম টেস্টে লর্ডসে মুখোমুখি হচ্ছে স্বাগতিক ইংল্যান্ড ও পাকিস্তান। আর এ ম্যাচেই ২০১০ সালের স্পট ফিক্সিং কেলেংকারী ধুয়ে মুছে ফেলার আশা করবেন পাকিস্তানী পেসার মোহাম্মদ আমির।ছয় বছর আগে এই লর্ডসেই ইংল্যান্ডের বিপক্ষে একটি টেস্ট ম্যাচে একটি ট্যাবলয়েড পত্রিকার স্টিং অপারেশনের অংশ হিসেবে তৎকালীন অধিনায়ক সালমান বাটের নির্দেশে আমির এবং তার নতুন বল পার্টনার মোহাম্মদ আসিফ ইচ্ছাকৃত নো-বল করেছিলেন।ফলে তিনজনই ক্রিকেটে পাঁচ বছরের জন্য নিষিদ্ধ হন এবং তাদের স্পোর্টস এজেন্ট মাজহার মজিদসহ সকলেই জেল খাটেন।

ফলে ক্রিকেট বিশ্বে শুরু হয় তুমুল বিতর্ক। যার ফলে প্রথম ইনিংসে টিনএজ শেষসেশন আমিরের ৮৪ রানে ৬ উইকেট শিকারের কৃতিত্ব প্রায় ভুলেই গেছে ক্রিকেট বিশ্ব।সে দিনের কিশোর আজ ২৪ বছরের আমির দীর্ঘ দিন ক্রিকেটের বাইরে থাকলেও সমারসেটের বিপক্ষে পাকিস্তানের প্রথম অনুশীলন ম্যাচে ৩৬ রানে ৩ উইকেট শিকার করে নিজের বোলিং ক্ষমতার প্রমাণ দিয়েছেন।পক্ষান্তরে এ ম্যাচে ইনজুরির কারণে দেশের হয়ে সর্বোকালের সর্বোচ্চ উইকেট শিকারী জেমস এন্ডারসন এবং অলরাউন্ডার বেন স্টোকসকে দলে পাচ্ছেনা ইংল্যান্ড।এদিকে পাকিস্তানের সাবেক অধিনায়ক রমিজ রাজার মত ব্যক্তি পুনরায় আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ফেরা আমিরের প্রজ্ঞা সম্পর্কে সন্দেহ প্রকাশ করেছেন। অবশ্য উভয় দলের খেলোয়াড়রাই বর্তমান অবস্থাকে মেনে নিয়েছেন।

ইংল্যান্ড ব্যাটসম্যান জো রুট বলেন, ‘আমরা কথা বলতে পারি কিংবা আমাদের মতামত প্রকাশ করতে পারি। তবে প্রকৃত সত্য হচ্ছে চার টেস্টের পুরো সিরিজে আমাদের বিপক্ষে তাঁর (আমির) বোলিং শুরু করায় কোন পরিবর্তন হবেনা।

বাঁ-হাতি পেসার ওয়াহাব রিয়াজ ও সোহেল খান এবং লেগ স্পিনার ইয়াসির শাহকে নিয়ে পাকিস্তান বোলিং আক্রমন গঠিত হলেও ইংল্যান্ডের জন্য সবচেয়ে হুমকি হতে পারেন আমির।পুরো সিরিজেরই মুখ্য হয়ে উঠতে পারেন উভয় দলের টপ অর্ডার ব্যাটসম্যানরা।সম্প্রতি নিজ মাঠে শ্রীলংকার বিপক্ষে ২-০ ব্যবধানে জয় পাওয়া সিরিজে বার বারই ইংল্যান্ডের টপ অর্ডার ব্যার্থ হয়েছে। কিন্তু বারবারই উদ্ধার করেছেন মিডল অর্ডার ব্যাটসম্যান জনি বেয়ারস্টো।অধিনায়ক মিসবাহ উল হক, বর্ষীয়ান ইউনিস খান এবং ফর্মের তুঙ্গে থাকা আসাদ শফিককে নিয়ে গঠিত পাকিস্তানের মিডল অর্ডারও বেশ শক্তিশালী।তবে দুই পেনার মোহাম্মদ হাফিজ এবং শান মাসুদকে নিয়ে কিছুটা চিন্তিত পাকিস্তান দল। পক্ষান্তরে ইংল্যান্ড অধিনায়ক এলিস্টার কুকের সঙ্গী এখন পর্যন্ত টেস্ট ক্রিকেটে সেঞ্চুরির দেখা না পাওয়া এ্যালেক্স হেলকে নিয়ে কিছুটা চিন্তিত ইংলিশরাও।

ইংল্যান্ড ব্যাটিং অর্ডারে তিন নম্বরে উঠে আসা রুটকে লক্ষ্য বস্তুতে পরিনত করতে চান রণশীল রিয়াজ।
সিরিজের আগ মুহর্তে ইয়র্কশায়ারের এ ব্যাটসম্যানের জন্য যা ছিল ফালতু কথা। তবে রুট সম্পর্কে রিয়াজ বলেন, দলের মেরুদন্ড হচ্ছেন তিনি এবং তাকে শুরুতেই ফিরিয়ে দিতে পারলে ইংল্যান্ডকে চাপে রাখা যাবে।তিনি যদি মনে করেন এটা একদম ফালতু কথা তবে তাকে সালাম।আমিরের প্রতি দৃষ্টি ফিরিয়ে রিয়াজ বলেন, সে খুবই চতুর বোলার এব্ং খুব শক্তিশালী ছেলে.. পারফর্ম করার জন্য সে মুখিয়ে আছে।দুই পেসার জ্যাক বল অথবা টবি রোল্যান্ড জোন্স এর মধ্যে কাকে টেস্ট ক্যাপ পড়ানো হবে সে বিষয়েও সিদ্ধান্ত নিতে হবে ইংল্যান্ডকে।গত বছর বাদ পড়ার পর এ ম্যাচ দিয়েই টেস্ট ক্রিকেটে ফিরছেন ইংল্যান্ড ব্যাটসম্যান গ্যারি ব্যালেন্স।

তবে এ সকল বিষয়ে মোটেই ভাবতে না-রাজ রিয়াজ।তিনি বলেন, ইংল্যান্ড দলে কে থাকল আর কে থাকল না তা নিয়ে আমরা মোটেই চিন্তিত নই। আমরা কেবল একটা বিষয় জানি নিজ কন্ডিশনে ইংল্যান্ড একটা ভাল দল।রিয়াজ এবং অনেক পাকিস্তানীর মতেই এ সিরিজ কেবল ফলের বিষয় নিয়।তিনি বলেন, মিসবাজ নেতৃত্বাধীন বর্তমান দলটি অনেক বেশি সংগঠিত।আমরা পাকিস্তান ক্রিকেটের কঠিন সময় দেখেছি.. পাকিস্তান একটি ভাল দল-বিশ্বব্যাপী মানুষকে আমরা সেটা বুঝাতে সক্ষম হয়েছি। পাকিস্তান একটি শক্ত দল সব সময়ই আপনার বিপক্ষে কঠিন লড়াই করতে পারে।এন্ডারসন দলে না থাকাটা ইংল্যান্ডের জন্য একটা বড় ধাক্কা।