ভারত নিয়ন্ত্রিত জম্মু-কাশ্মীরের অশান্ত অবস্থা অব্যাহত রয়েছে। সেনাবাহিনীর গুলিতে হিজবুল মুজাহিদিন সদস্য বুরহান ওয়ানি নিহত হওয়ার পর থেকেই রীতিমতো রণক্ষেত্রে পরিণত হয়েছে জম্মু-কাশ্মীর। দফায় দফায় এখনো চলছে পুলিশ-জনতা সংঘর্ষ। এখন পর্যন্ত নিহতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৩২ জনে। রাজ্যটির নিরাপত্তারক্ষী ও সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোর ওপর হামলা অব্যাহত রয়েছে। আজ মঙ্গলবার সকাল থেকেই কাশ্মীরের বিভিন্ন স্থান থেকে বিচ্ছিন্ন সংঘর্ষের খবর আসছে।
জম্মু-কাশ্মীরে ক্রমে উত্তাল হতে থাকা এ পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখে ভারতের কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিংয়ের সঙ্গে জরুরি বৈঠক করেছেন ভারতের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত দোভাল। দেশটির প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে আফ্রিকা সফরে গিয়েছিলেন দোভাল। তবে কাশ্মীরের অশান্ত পরিস্থিতির কারণে সফর অসমাপ্ত রেখেই দেশে ফিরে আসেন তিনি। দিল্লিতে নেমেই রাজনাথ সিংয়ের সঙ্গে বৈঠকে বসেন তিনি। এ সময় আরো উপস্থিত ছিলেন স্বরাষ্ট্র সচিব রাজিম মহর্ষি এবং কেন্দ্রীয় ইন্টেলিজেন্স ব্যুরোপ্রধান। বৈঠক শেষে অজিত দোভাল জানান, কাশ্মীরের সমস্যার খুব শিগগির সমাধান হয়ে যাবে।
অন্যদিকে, কাশ্মীরে অশান্তির কারণে আজ সকালেই আফ্রিকা সফর শেষ করে দেশে ফিরেছেন নরেন্দ্র মোদি। কাশ্মীর সমস্যা সমাধানে আজই তাঁর বৈঠক করার কথা রয়েছে। কাশ্মীর সমস্যায় আসন্ন যুক্তরাষ্ট্র সফরও বাতিল করেছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিং। সরকারি একটি সূত্র জানিয়েছে, জম্মু-কাশ্মীরে বিক্ষোভকারীদের শান্ত করতে নিরাপত্তারক্ষীরা সর্বোচ্চ সংযম দেখালেও যারা নিরাপত্তারক্ষীদের ওপর হামলা চালাচ্ছে, তাদের ছাড় দেওয়া হবে না।
ভারতের একাধিক গণমাধ্যম জানিয়েছে, মাস দুয়েক আগে দোভালের নেতৃত্বে কেন্দ্রের শীর্ষ নিরাপত্তা কর্মকর্তাদের সঙ্গে এক বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, হিজবুল মুজাহিদিনের শীর্ষ জঙ্গিদের হত্যা করা হবে। এরই মধ্যে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ মারা যান বুরহান ওয়ানি। কিন্তু তাঁর মৃত্যুর পরেই অশান্ত হতে শুরু করে উপত্যকা, যা কমার কোনো লক্ষণ এখন পর্যন্ত দেখা যাচ্ছে না। জম্মু-কাশ্মীরে নিরাপত্তা কঠোর করার নির্দেশ দিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিং।
এদিকে, জম্মু-কাশ্মীর পরিস্থিতিতে ভারতের কংগ্রেস সভানেত্রী সোনিয়া গান্ধী এক বিবৃতিতে বলেছেন, জাতীয় নিরাপত্তার প্রশ্নে কোনোরকম সমঝোতা করা হবে না। জম্মু-কাশ্মীরের রাজধানী শ্রীনগরসহ বিভিন্ন স্থানে কারফিউ জারি সত্ত্বেও আজ আবারও বনধের ডাক দিয়েছে একাধিক বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন।