12-07-16-PM_ECNEC Meeting-1

সাতশো কোটি ১২ লাখ টাকা ব্যয়ে ৫টি উন্নয়ন প্রকল্পের চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক)।মঙ্গলবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে পরিকল্পনা কমিশনের এনইসি-২ সম্মেলন কেন্দ্রে বৈঠক শেষে সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান পরিকল্পনামন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন একনেক চেয়ারপারসন ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বৈঠক শেষে পরিকল্পনামন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল প্রেস ব্রিফিংয়ে প্রকল্পগুলোর বিষয়ে বিস্তারিত তুলে ধরেন। বিশেষ কোনো কারণ ছাড়া অহেতুক প্রকল্পের ব্যয় ও সময় বৃদ্ধি করা যাবে না বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।প্রধানমন্ত্রী বলেন, প্রকল্প গ্রহণের আগেই সমস্ত দিক বিবেচনা করে প্রকল্প গ্রহণ করতে হবে। প্রকল্প বাস্তবায়নের মাঝপথে এসে নতুন নতুন অঙ্গ যোগ করা যাবে না। প্রকল্প বাস্তবায়নের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত কি পরিমাণে ব্যয় বাড়তে পারে- সে কথা বিবেচনা করে প্রকল্প গ্রহণের জন্য সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়কে নির্দেশ দেন তিনি।

বৈঠক শেষে পরিকল্পনামন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেন, নির্দিষ্ট সময়ে প্রকল্প বাস্তবায়ন করার জন্য প্রধানমন্ত্রী নির্দেশ দিয়েছেন। মাঝপথে এসে প্রকল্পের ব্যয় ও সময় যাতে না বাড়ে সেই নির্দেশনা দিয়েছেন।প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনার কথা উল্লেখ করে মন্ত্রী আরও বলেন, এ পর্যন্ত প্রধানমন্ত্রী যতোগুলো অনুশাসন দিয়েছেন তার মধ্যে এটি অন্যতম। প্রকল্পের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত নির্মাণ সামগ্রীর কি পরিমাণে দাম বাড়তে পারে সেসব বিষয় বিবেচনা করে প্রকল্প গ্রহণ করতে বলেছেন। যাতে করে একই প্রকল্প সংশোধনের জন্য একনেক বৈঠকে ফের উপস্থাপন না করা হয়।চূড়ান্ত অনুমোদনের জন্য ই-জুডিশিয়ারি পাইল’ প্রকল্প একনেক সভায় উপস্থাপন করা হয়। প্রকল্পের প্রস্তাবিত ব্যয় ছিল ৩২৭ কোটি ৪৬ লাখ টাকা। প্রকল্প এলাকা ঢাকা, কুমিল্লা, রংপুর, চট্টগ্রাম, সিলেট, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, গোপালগঞ্জ, নাটোর, যশোর ও মৌলভীবাজার। প্রকল্পের প্রধান উদ্দেশ্য ছিল, ডিজিটাল ব্যবস্থা প্রবর্তনের মাধ্যমে দ্রুত ও স্বচ্ছতার সঙ্গে বিচার কার্যক্রম পরিচালনা করা। প্রকল্পটি একনেক বৈঠকে অনুমোদন দেওয়া হয়নি।

পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, ভার্চুয়াল কোর্ট স্থাপনের নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। ভার্চুয়াল কোর্ট স্থাপিত হলে যেসব আসামিকে জেলখানা থেকে কোর্টে আনতে সমস্যা মনে হবে, তাদের সেখান থেকেই বিচার পরিচালনা করা সম্ভব হবে। বৈঠকে বাংলাদেশ কোস্টগার্ডের জন্য বিভিন্ন ধরনের জলযান নির্মাণ’ প্রকল্পটি ৪৪৫ কোটি ৪২ লাখ টাকা ব্যয় ধরে অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। অনুমোদিত জেলা সদর ও ব্যাটালিয়ন সদরের আনসার ও ভিডিপির ব্যারাকগুলোর ভৌত সুবিধাদি সম্প্রসারণ প্রকল্পের প্রস্তাবিত ব্যয় ৫২ কোটি ৭১ লাখ টাকা।

কোস্টগার্ড প্রকল্পের মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে, এ বাহিনীর সক্ষমতা বৃদ্ধি করা। ১৯৯৫ সালের ১৪ ফেব্র“য়ারি আনুষ্ঠানিকভাবে বাংলাদেশ কোস্টগার্ড প্রতিষ্ঠিত হয় এবং ১৯৯৫ সালের ডিসেম্বর মাসে নৌ-বাহিনী থেকে ধার নেওয়া দু’টি টহল জাহাজের সমন্বয়ে তাদের কার্যক্রম শুরু করে। এরপর গত ২০ বছরে উপকূলীয় অঞ্চলের চোরাচালান, ডাকাতি, মাদক থেকে শুরু করে মানবপাচার প্রতিরোধে সংস্থাটি নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। কার্যক্রম সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার ক্ষেত্রে ভৌত স্থাপনা, যান ও উপকরণের ঘাটতি রয়েছে সংস্থাটির।প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে এ ঘাটতি কমবে। প্রকল্পের আওতায় বিভিন্ন ১৪টি আধুনিক জলযান কেনা হবে।

৮৭ কোটি ৪৬ লাখ টাকা ব্যয়ে সিরাজগঞ্জের কাজিপুরে বেগম আমিনা মনসুর টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং ইনস্টিটিউট’ প্রকল্পেরও অনুমোদন দেওয়া হয়েছে বৈঠকে। ভৈরব বিসিক শিল্পনগরী’ প্রকল্পেরর ব্যয় ধরা হয়েছে ৭২ কোটি ৯১ লাখ টাকা। এছাড়া নরসিংদীর মাধবদীতে অবস্থিত কাপড় প্রক্রিয়াজাতকরণ সেন্টারের আধুনিকায়ন, সংস্কার (বিএমআরই)’ প্রকল্পেরও অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এর ব্যয় ধরা হয়েছে ৪১ কোটি ৫৮ লাখ টাকা।