gulshan-7গুলশানের হলি আর্টিজান বেকারিতে হামলাকারী ছিল পাঁচ জঙ্গি। আর তাদের সবাই কমান্ডো অভিযানে নিহত হয়েছে। এছাড়া রেস্টুরেন্টের ভেতরে বাবুর্চির সহকারী শাওনের সঙ্গে জঙ্গিদের যোশসাজশ থাকার বিষয়টিও নিশ্চিত হয়েছে গোয়েন্দা পুলিশ। হলি আর্টিজানের সিসিটিভিতে ধারণকৃত ভিডিও ফুটেজ থেকে এই তথ্য নিশ্চিত হওয়া গেছে বলে জানায় গোয়েন্দা পুলিশের দায়িত্বশীল সূত্র। এছাড়া তারা আরও নিশ্চিত হয়েছেন, ঘটনার আগে জঙ্গিরা অন্তত দুই দফা রেস্টুরেন্টটিতে যায়। প্রতিবারেই তিনজন করে সেখানে যায়।
হামলার দুই দিন আগে সবশেষ তিন জনের একটি দল আর্টিজানে যায়। সেখানে তারা বাবুর্চির সহকারী শাওনের সঙ্গে কথা বলে এমন দৃশ্যও রয়েছে ভিডিও ফুটেজে।  নাম প্রকাশ না করে একাধিক গোয়েন্দা জানান, শুরু থেকেই শাওনকে সন্দেহে রাখা হয়েছিলো, যা ভিডিও ফুটেজে স্পষ্ট হয়েছে। শাওন অবশ্য পরে চিকিত্সাধীন অবস্থায় মারা যান।
গোয়েন্দা সূত্রটি জানায়, হামলাকারীদের সংখ্যা নিয়ে কখনো সাত কখনো আট জন বলা হলেও ভিডিও ফুটেজ থেকে নিশ্চিত হওয়া গেছে পাঁচজন হামলাকারীই বেকারিতে ঢুকেছিল। যাদের সবাই কমান্ডো অভিযানে গুলিতে মারা যায়। এদিকে, তদন্তে আরও বেরিয়ে এসেছে, হামলার প্রায় দুই মাস আগে বনানীতে একজন প্রভাবশালী ব্যক্তির বাড়ির একটি ফ্ল্যাট ভাড়া নেয় এই হামলাকারীরা। সেখান থেকেই তারা হামলার ছক কষে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
তদন্তের স্বার্থে নাম প্রকাশ না করা হলেও তদন্ত সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, এই প্রভাবশালী এখন নজরদারীতে রয়েছেন। এবং তার সঙ্গে কথাও হয়েছে। ফ্ল্যাট ভাড়া দেওয়ার বিষয়ে তিনি অবশ্য দায়ী করেছেন বাড়ির কেয়ারটেকারকে। গোয়েন্দারা জানিয়েছেন, কেয়ারটেকারকেও জিজ্ঞাসাবাদ করেছেন তারা। তবে তার কাছ থেকে সুনির্দিষ্ট কোনো তথ্য মেলেনি।
গোয়েন্দারা আরও নিশ্চিত হয়েছেন, বিদেশিদের হত্যা করাই ছিলো হামলাকারীদের মূল উদ্দেশ্য। আর সে কারণে গত দুই মাস তারা গুলশান বনানী এলাকায় ঘুরে ঘুরে হলি আর্টিজানের বিষয়েই সিদ্ধান্ত নেয়। এখানে সবচেয়ে বেশি সংখ্যক বিদেশি একসঙ্গে পাওয়া যাবে বলেই এই সিদ্ধান্ত বলে ধারনা গোয়েন্দাদের। গত দুই মাসে একই যুককদের আরও দুই-তিনটি রেস্টুরেন্ট রেকি করতে দেখা যায়, যার মধ্যে একটি পাঁচ তারকা হোটেলও রয়েছে বলে জানায় তদন্তসূত্র।
এদিকে, সিসিটিভিতে ধরা পড়েছে গুলশানে হামলাকারীদের একজনের গত মার্চে একটি কম্পিউটার কেনার দৃশ্যও। এই জঙ্গিটি ছিলেন ইমতিয়াজ খান বাবুলের ছেলে রোহান ইবনে ইমতিয়াজ। তদন্তসূত্র জানায়, গত মার্চের শেষ দিকে আগারগাঁওয়ে কম্পিউটার সিটিতে গিয়েছিলেন রোহান ইবনে ইমতিয়াজ একটি কম্পিউটার কিনতে যায়। এর অনেক আগে থেকেই নিখোঁজ ছিলো জঙ্গি রোহান। সূত্র জানায়, তাকে একটি দোকানে দেখতে পেয়ে বাবুলকে ফোন করেছিলেন তার এক প্রতিবেশী। পরে বাবুল সেখানে যানও কিন্তু রোহানকে খুঁজে পাননি। তদন্তকারীরা জানান, কম্পিউটার সিটির সিসিটিভির ফুটেজে রোহানের কম্পিউটার কিনে বের হওয়ার দৃশ্য রয়েছে।