euro-2-1050x600

ইউরো ২০১৬ ফুটবল চ্যাম্পিয়নশীপের শ্রেষ্ঠত্বের মুকুট পড়ার লক্ষ্যে রোববার টুর্নামেন্টের ফাইনালে মুখোমুখি হবে স্বাগতিক ফ্রান্স ও পর্তগাল। প্যারিসের স্টেড ডি ফ্রান্স স্টেডিয়ামে আগামীকাল মধ্যরাত ১টায় শুরু হবে ম্যাচটি। শিরোপা জয়ের জন্য মুখিয়ে আছে দু’দলই। তাই জমজমাট এক ফাইনালের প্রত্যাশায় ফুটবল ভক্তরা।দাপটের সাথেই এবারে আসরে যাত্রা শুরু করে দু’বারের চ্যাম্পিয়ন ফ্রান্স। এ গ্র“প থেকে চ্যাম্পিয়ন হয়ে শেষ ষোলোতে জায়গা করে নেয় তারা। শেষ ষোলো ও কোয়ার্টাফাইনালেও নিজেদের আধিপত্য বিস্তার বজায় রাখে ফরাসিরা। ফলে সেমিফাইনালে উঠতে খুব বেশি বেগ পেতে হয়নি তাদের। তবে শেষ চারের লড়াই কঠিন প্রতিপক্ষের সামনে পড়ে ফ্রান্স। সেমিফাইালে ফ্রান্সের প্রতিপক্ষ ছিলো বিশ্বচ্যাম্পিয়ন জার্মানি।

কিন্তু সেই কঠিন লড়াইয়ে নিজেদের যোগ্যতা প্রমাণ করে ফ্রান্স। এ্যান্টোনিও গ্রিজম্যানের গোলে ২-০ ব্যবধানে ম্যাচ জিতে ফাইনালের টিকিট পায় তারা। পুরো ম্যাচে জার্মানিকে চাপেই রেখেছিলো ফ্রান্স। ম্যাচের কোন সময়েই ফ্রান্সকে চাপে ফেলতে পারেনি জার্মানি। তাই সেমির ফর্মুলাতেই পর্তুগালকেও ধরাশায়ী করার স্বপ্নে বিভোর ফ্রান্সের কোচ দিদিয়ের দেশম, জার্মানির বিপক্ষে আমরা একটি বিশেষ ছক নিয়ে খেলতে নেমেছিলাম। তাতে আমরা সফল হয়েছি। পর্তুগালের বিপক্ষেও একটি বিশেষ ছক কষেই খেলতে নামবো। আশা করছি ফাইনালেও আমরা সফল হবো। তবে ফাইনাল ম্যাচটি অনেক উত্তেজনাপূর্ণ হবে। ভালো দল বলেই ফাইনালে এসেছে পর্তুগাল। তাই ফাইনালে সেরা খেলাটাই খেলতে হবে আমাদের। শিরোপা জয়ের এই দারুন সুযোগটা কাজে লাগাতে চাই আমরা।

গ্র“প পর্ব থেকে যতটা সহজে শেষ ষোলোতে এসেছে ফ্রান্স, তার চেয়ে অনেক কঠিন পথ পাড়ি দিয়ে গ্র“প পর্ব অতিক্রম করে পর্তুগাল। এফ গ্র“পের তিনটি ম্যাচই ড্র করে তারা। ফলে গ্র“প পর্যায়ের সেরা চারটি তৃতীয় স্থানের দলের একটি হয়ে শেষ ষোলোতে নাম লেখায় পর্তুগাল। তাই পারফরমেন্স নিয়ে হতাশাটা পুরো দল জুড়েই ছিলো। তাতে অবশ্য দল নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন পর্তুগালের কোচ ফার্নান্দো সান্তোস। প্রত্যক ম্যাচের পরই দল নিয়ে আশাবাদ ব্যক্ত করেছিলেন তিনি।কোচের আশাবাদ বক্তব্যে আত্মবিশ্বাস ধরে রেখেছিলো পর্তুগালের খেলোয়াড়। তাই শেষ ষোলোতে গিয়ে টুর্নামেন্টে প্রথম জয়ের মুখ দেখে পর্তুগাল। ১-০ গোলে ক্রোয়েশিয়াকে হারিয়ে কোয়ার্টারফাইনালে জায়গা করে সান্তোসের শিষ্যরা। আর শেষ আটে ভাগ্যের পরীক্ষায় জয় হয় তাদেরই। টাইব্রেকারে পোল্যান্ডকে হারিয়ে সেমিতে ওয়েলসের প্রতিপক্ষ হয় পর্তুগাল।

তবে সেমিতে অন্য এক পর্তুগালকে লক্ষ্য করা যায়। পুরো ম্যাচেই স্বাচ্ছন্দ্যময় ফুটবল শৈলি উপহার দেয় তারা। তাতে কুপোকাত হয়ে টুর্নামেন্ট থেকে বিদায় নেয় ওয়েলস। আর দ্বিতীয়বারের মত ইউরোর ফাইনালে নিজেদের নাম লেখায় পর্তুগাল। তাই এবার শিরোপা জিততে না পারার বন্ধ্যাত্ব ঘোচানোতে চায় তারা। এখন পর্যন্ত একবারও ইউরোর শিরোপা জিততে পারেনি পর্তুগাল। তবে এবার শিরোপার স্বাদ নিতে চায় দল বলে জানালেন পর্তুগাল কোচ সান্তোস, ছেলেরা নিজেদের সেরা পারফরমেন্সে ফিরেছে। ওয়েলসের বিপক্ষে তাদের খেলার ধরন দেখে আমি খুশী হয়েছি। ফাইনালে আরও ভালো নৈপুণ্য উপহার দিবে তারা। কারণ আমরা শিরোপার জন্য মুখিয়ে আছি। আমরা শিরোপা জিততে চাই। শিরোপা জয়ের দারুন এক সুযোগ এবার আমাদের সামনে। এই সুযোগটা দলের কেউই হাতছাড়া করতে চায় না।

শুধুমাত্র শিরোপাই নয়, প্রতিশোধের নেশাতেও বিভোর পর্তুগাল। কারণ ইউরোতে দু’বার ফাইনাল খেলে ফ্রান্স। আর ঐ দু’বারই পর্তুগালকে সেমিফাইনাল হারিয়ে ফাইনালে উঠে এবং শিরোপাও জিতে নেয় ফরাসিরা। সেই রেকর্ডও জানা আছে দেশমের। তাই অতীতের কিছু হিসাব-নিকাশও চুকিয়ে নিতে চান তিনি, অতীতে দু’বার ইউরোর সেমিফাইনালে ফ্রান্সের কাছে হেরেছি আমরা। এই পরিসংখ্যান সবারই জানা আছে। এবার সুযোগ এসেছে প্রতিশোধ নেয়ার। প্রতিশোধ নিতে পারলে শিরোপা জয়ও করতে পারবো আমরা। শুধুমাত্র ইউরোতেই নয়, ১৯৭৫ সালের পর পর্তুগালের কাছে কোন ম্যাচই হারেনি ফ্রান্স।