লিলির ঐতিহাসিক রাতে বিশ্বের দ্বিতীয় র্যাংকধারী বেলজিয়ামকে ৩-১ গোলে হারিয়ে স্মরনীয় এক মুহুর্তের জন্ম দিয়েছে ওয়েলস। এই জয়ের ফলে বড় কোন ফুটবল আসরে প্রথমবারের মত সেমি-ফাইনাল খেলার যোগ্যতা অর্জন করল যুক্তরাজ্যের এই অঙ্গরাজ্যটি। পিছিয়ে পড়েও দাপুটে জয়টি নিশ্চিত করেছে গ্যারেথ বেলের দল।শুক্রবার ফুটবলের ৫৮ বছরের ইতিহাসে প্রথমবারের মত কেয়ার্টার ফাইনালের ম্যাচে অংশগ্রহনের সুযোগ পায় ওয়েলস। এর আগে সর্বশেষ ১৯৫৮ সালে সুইডেনে অনুষ্ঠিত বিশ্বকাপ ফুটবলে কোয়ার্টার ফাইনালে খেলার যোগ্যতা অর্জন করেছিল ওয়েলস। অতীতে এটিই ছিল দলটির শীর্ষ কোন আন্তর্জাতিক টুর্ণামেন্টে সর্বশেষ অংশগ্রহন।
ম্যাচের শুরুতে তারকা সমৃদ্ধ বেলজিয়ামের কাছ থেকে গোল হজম করে পিছিয়ে পড়েছিল ওয়েলস। রাডজা নাইনগোলানের দূরপাল্লার শট থেকে ১৩ মিনিটের সময় গোলটি হজম করে ০-১ গোলে পিছিয়ে পড়ে ওয়েলস। তবে পিছিয়ে পড়ার পর দারুনভাবে ঘুরে দাঁড়ায় তারা। যোগ্যতা দিয়েই অ্যাশলে উইলিয়ামসের দলটি নিজেদের সমতায় ফিরিয়ে এনেছে। প্রতিপক্ষের রক্ষনভাগের দূর্বলতার সুযোগটিকে দারুনভাবে কাজে লাগিয়েছেন ওয়েলস অধিনায়ক। ৩০ মিনিটে গোল আদায়ের মাধ্যমে দলকে সমতায় ফিরিয়ে আনেন তিনি (১-১)।
দ্বিতীয়ার্ধের শুরু থেকে একচেটিয়া প্রাধান্য বিস্তারের মাধ্যমে ফের এগিয়ে যাবার চেস্টায় মেতে ওঠে বেলজিয়াম। কিন্তু সুফল ঘরে তুলে ওয়েলস। ম্যাচের ৫৫ মিনিটে রবসন-কানু দারুন দক্ষতা দেখিয়ে তিন বেলজিয়ান ফুটবলারকে কাটিয়ে দূর্দান্ত একটি গোল আদায় করলে ২-১ ব্যবধানের লীড পায় ওয়েলস।
খেলা শেষ হবার মাত্র ৫ মিনিট আগে (৮৫.মি) বেলজিয়ামের কফিনে শেষ পেরকটি ঠুকে দেন ভোকেস। ক্রিস গানটেরের ক্রসের বল দর্শনীয় হেডের সাহায্যে বেলজিয়ান গোলপোস্টে চালান করে দেন বদলী খেলোয়াড় স্যাম ভোকেস। এর পরপরই হলুদ কার্ড দেখতে হয় এ্যারন রামসেকে। এর ফলে আর্সেনালের এই আন্তর্জাতিক মিডফিল্ডার পরের ম্যাচে অংশ নিতে পারবেনা। পরের ম্যাচ সেমি-ফাইনালে পর্তুগালের মোকাবেলা করবে ওয়েলস। আগামী বুধবার লিঁও’তে অনুষ্ঠিত হবে এই ম্যাচ।
যেখানে পরস্পরের মুখোমুখি হবে দুই রিয়াল মাদ্রিদ সতীর্থ বেল ও ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো। কোয়ার্টার ফাইনালে টাইব্রেকারে পোল্যান্ডকে হারিয়ে শেষ চারে জায়গা করে নিয়েছে রোনালদোর পর্তুগাল। বৃহস্পতিবারের ম্যাচটি অতিরিক্ত সময়ে গড়ানোর আগে ১-১ গোলে ড্র ছিল। খেলা শেষে ওয়েলসের কোচ ক্রিস কোলম্যান বলেন, স্বপ্ন নিয়ে কখনো ভয় পেতে নেই। চার বছর আগে আমি এখন থেকে অনেক দূরে ছিলাম। আর এখন দেখুন কি ঘটেছে, যা আপনি ভাবতেই পারছেননা।
আপনি যদি যথেষ্ঠ কঠোর পরিশ্রম করেন, স্বপ্ন নিয়ে ভয় না পান এবং ব্যর্থতাকে ভয় না পান, তাহলে এমনিটি ঘটতে পারে। এটি একটি মধুময় মুহুর্ত যেটি আমি উপভোগ করছি।এদিকে র্যাংকিংয়ের শীর্ষ দল হিসেবে এই ব্যর্থতার চরম প্রশ্নের সম্মুখীন হয়েছেন বেলজিয়াম কোচ মার্ক উইলমোটস। দারুন সব তারকা খেলোয়াড়ে সমৃদ্ধ হওয়া সত্বেও দলটি এর আগে ২০১৪ বিশ্বকাপে ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছে।
যদিও শুক্রবারের কোয়ার্টার ফাইনালে তিনি পছন্দের তিনজন ডিফেন্ডারকে খেলাতে পারেননি। এদের মধ্যে ইনজুরির কারণে ভিনসেন্ট কম্পানি ও জান ভেরটনগেনকে এবং নিষেধাজ্ঞার কারণে থমাস ভারমালিনকে একাদশে রাখতে পারেননি তিনি।
উইলমোটস বলেন, আমার দলের খেলোয়াড়রা গড় বয়সের দিক থেকে বেশ তরুন। তাদের মধ্যে যথেষ্ঠ সম্ভাবনা রয়েছে। আমি তাদেরকে মেরে ফেলতে চাইনা। আমার মনে হয় আমরা অপেক্ষাকৃত ভাল খেলেছি। তবে কেন আমরা পিছিয়ে পড়লাম তার ব্যাখা এই মুহূর্তে আমার কাছে নেই।