কমান্ডো অভিযানে মুক্ত গুলশানের ক্যাফে থেকে উদ্ধার পাওয়া ব্যক্তিদের ১৮ ঘণ্টার ‘দুঃস্বপ্ন’ কাটছে না।শুক্রবার রাতে একদল বন্দুকধারী রাজধানীর কূটনীতিকপাড়ার হলি আর্টিজেন বেকারিতে ঢুকে বিদেশিসহ বেশ কয়েকজনকে জিম্মি করে। সকালে কমান্ডো অভিযানে মুক্ত হন তাদের অনেকে।এদের মধ্যে রয়েছেন প্রকৌশলী হাসনাত করিম। ১৩ বছর বয়সী সন্তানের জন্মদিন উদযাপন করতে স্পেনিশ এই ক্যাফেতে গিয়েছিলেন তিনি। তার সঙ্গে ছিল স্ত্রী শারমিন পারভীন এবং ৮ বছর বয়সী অন্য সন্তান।রাতভর আটক থাকার পর শনিবার সকাল ৮টার দিকে কমান্ডো অভিযানে হাসনাতের পরিবার উদ্ধার পায় বলে জানান তার মা। সন্তান, পূত্রবধূ ও নাতনীদের জন্য স্বামী এমআর করিমকে সঙ্গে নিয়ে সারারাত গুলশানে ছিলেন তিনি। ছেলেকে পাওয়ার পর হাসনাতের মা বলেন, ভেতরে সাতজন বাংলাদেশি একজন ভারতীয়ের পাশাপাশি আরও ২০-২২জন বিদেশি ছিল। আক্রমণকারীরা ছিল ৫জন।জিম্মিকারীরা বাংলাদেশি মুসলমানদের সুরা পড়তে বলে। সুরা পড়তে পারার পর তাদেরকে রাতে খেতেও দেওয়া হয়। পারভীন হিজাব পরা থাকায় খাতির করা হয়। মধ্যপ্রাচ্যভিত্তিক জঙ্গিগোষ্ঠী আইএস এই হামলার দায়িত্ব স্বীকার করেছে বলে সাইট ইন্টিলিজেন্স গ্র“প জানিয়েছে। তবে এই সংগঠনটির তৎপরতার খবর বাংলাদেশ সরকার নাকচ করে আসছে।
হাসনাত ২০ বছর দেশের বাইরে ছিলেন। ইংল্যান্ডে প্রকৌশল পড়াশোনার পর যুক্তরাষ্ট্রে গিয়ে এমবিএ করেন। দেড় বছর আগে দেশে ফিরে আসেন তিনি।ক্যাফেটিতে থাকা বিদেশি কয়েকজনকে রাতেই হত্যা করা হয় বলে হাসনাত তার মাকে জানিয়েছেন। েেভতরে লাশ আছে জানালেও কয়জন নিহত হন এবং তারা কারা, সে বিষয়ে পুলিশ গণমাধ্যমকে কিছু জানায়নি।অভিযানে পাঁচ হামলাকারী মারা পড়েন বলে র্যাব ও পুলিশ কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।সকালে ক্যাফে ঘুরে আসার পর এক পুলিশ কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, দেখেছি কয়েকটি লাশ পড়ে আছে। স্থানে স্থানে রক্তের দাগ।
হলি আর্টিজন বেকারি গুলশান এলাকার বিদেশিদের মধ্যে বেশি জনপ্রিয়। সেখানে লনে অনেকই দেখা যেত চাদর বিছিয়ে রোদ পোহাতে। সবুজ লনে শিশুরাও খেলার পর্যাপ্ত জায়গা পেয়ে ছোটাছুটি করত।
আগের দিন সন্ধ্যায়ও হলি আর্টিজান বেকারির সবুজ লনে পোষা কুকুরের সঙ্গে খেলছিল কয়েকটি শিশু। লনের পাশে চেয়ারে বসে আয়েশ করে কফিতে চুমুক দিতে দিতে আড্ডায় বসেছিল দেশি-বিদেশি বেশ কয়েকজন। রাতেই পাল্টে গেল সব চিত্র।শুক্রবার রাত ৯টার দিকে একদল বন্দুকধারী রাজধানীর কূটনীতিকপাড়ার ওই ক্যাফেতে অস্ত্র ও বিস্ফোরকসহ ঢুকে বিদেশিসহ কয়েকজনকে জিম্মি করেন। তাদের মোকাবেলায় গিয়ে নিহত হন দুই পুলিশ কর্মকর্তা।এরপর আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে সামরিক বাহিনী এই জিম্মিদের উদ্ধারে কমান্ডো অভিযানে নামে শনিবার সকালে। ঘণ্টাখানেকের মধ্যে সঙ্কটের অবসান ঘটে।
সকাল সাড়ে ৭টায় সাঁজোয়া যান নিয়ে অভিযান শুরুর পর প্রায় এক ঘণ্টা প্রবল গোলাগুলি চলে।গুলশান ২ নম্বরের ৭৯ নম্বর সড়কের ওই ক্যাফের কাছে একটি ভবন থেকে অভিযান দেখা এক প্রত্যক্ষদর্শী জানান, সকাল সোয়া ৮টার পর দুটি জলপাইরঙা সেনা সাঁজোয়া যান আর্টিজান বেকারির সীমানা দেয়াল ভেঙে ভেতরে ঢুকে পড়ে। সাদা আরেকটি সাঁজোয়া যান ছিল রাস্তায়। পরে অভিযানে যুক্ত হয় আরও তিনটি জলপাই রঙের সাঁজোয়া যান। সাঁজোয়া যান ক্যাফে কম্পাউন্ডে ঢোকার সময় এর বাইরের দিকে থাকা পিজা কর্নার এবং লাগোয়া লেক ভিউ ক্লিনিকের গাড়ি পার্কিংয়ে রাখা দুটি গাড়ি গুঁড়িয়ে যায়। বিকট শব্দে বাজছিল একটি গাড়ির অ্যালার্ট সিস্টেম।আশপাশের ভবনের ছাদে স্বয়ংক্রিয় রাইফেল আর টেলিস্কোপ লাগানো স্নাইপার রাইফেল নিয়ে অবস্থান নেন কমান্ডোরা। সোয়া ৮টা থেকে একে একে কয়েকজনকে ক্যাফেটি থেকে উদ্ধার পেয়ে বেরিয়ে আসতে দেখা যায়। তাদের সঙ্গে সঙ্গে অ্যাম্বুলেন্সে করে হাসপাতালে পাঠানো হয়।কমান্ডো অভিযানের মধ্যেই ঢাকা মহানগর পুলিশের উপ-কমিশনার (চ্যান্সেরি) জসিম উদ্দিন সাংবাদিকদের বলেন, একজন একজন (জিম্মিদের) করে উদ্ধার করা হচ্ছে।সকাল ৯টার দিকে র্যাবের মহাপরিচালক বেনজীর আহমেদকে সাদা পোশাকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের সঙ্গে কথা বলতে দেখা যায় ভবনটির বাইরে। কিছুক্ষণ পর আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য, যারা আশপাশের ভবনে অবস্থান নিয়েছিলেন, তাদের বাঁশি বাজিয়ে বের হয়ে পরস্পরকে আলিঙ্গন করতে দেখা যায়।
ধ্বংসস্তূপে পরিণত হওয়া হলি বেকারির সবুজ লনে তখনও তৎপর দেখা গেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের। ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা বহনযোগ্য ছোটো অগ্নিনির্বাপক যন্ত্র নিয়ে ছুটে যেতে দেখা যায়। একটু পরে হোস পাইপ হাতে অন্য কর্মীদেরও দেখা যায়। তবে ক্যাফেতে কোনো আগুন দেখা যায়নি।সকাল ৯টা ২ মিনিটে বিকট একটি শব্দে চারপাশ কেঁপে উঠে। তবে এ সময় ক্যাফেটিতে থাকা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের তাদের জায়গাতেই দেখা যায়।সাড়ে ৯টার দিকে র্যাবের গণমাধ্যম শাখার সহকারী পরিচালক মিজানুর রহমান বলেন, অভিযান শেষ।হলি বেকারির সামনের প্রাঙ্গণে এরপর সেনা সদস্যদের দেখা গেছে। ছিলেন দুই-একজন র্যাব সদস্যও। পুরোদস্তুর বর্ম পরে বোমা নিষ্ক্রিয়করণ দলের সদস্যদের তৎপরতাও দেখা গেছে। আরেকটুসামনে পাহারায় মিলিটারি পুলিশ। বাকিরা দাঁড়িয়ে রাস্তায়। বেকারির টি শার্ট পরা কিছু কর্মীকে দেখা গেছে পাশের রাস্তায়।সকাল ৯টা ৩৭ মিনিটে আরেকটি বিকট বিস্ফোরণের শব্দ পাওয়া যায়। অবস্থাদৃষ্টে তখন স্পষ্ট, বোমা নিষ্ক্রিয়কারী দল কাজ চালিয়ে যাচ্ছিল। কারণ শব্দ হওয়ার আগেই সেনা সদস্যদের কানে আঙুল দিতে দেখা যায়। অভিযান শেষের পর ক্যাফের পাশের বহুতল ভবনটির গ্যারেজে হাত পিছমোড়া করে বেঁধে কয়েকজন যুবককে প্রায় এক ঘণ্টা ধরে শুইয়ে রাখতে দেখা যায়। তবে তারা কারা সে বিষয়ে কিছু জানা যায়নি। বেকারির পেস্ট্রি শেফের পোশাক পরা একজনের সঙ্গে কয়েকজনকে একটি মাইক্রোবাসেও তুলতে দেখা যায়।অনেকক্ষণের নীরবতা ভেঙে আবার বিকট শব্দ ১০টা ৫৯ মিনিটে। নিষ্ক্রিয় করা হয় আরেকটি বোমা।সকাল সোয়া ১১টায় বেকারির প্রাঙ্গণে আনা হয় কয়েকটি কার্টন। ভেতর থেকে বের হলো অবশ্য খাবার। রক্তাক্ত অভিযানের পর ক্লান্ত সেনা সদস্যরা খাবার আর পানীয় নিয়ে গাছের ছায়ায় বসে পড়লেন।
পাশের ১০ তলা ভবনের বারান্দা থেকে উঁকি দিতে দেখা গেছে দুই বিদেশি নাগরিককে। নির্মাণ শেষ হয়ে যাওয়া ভবনটির অধিকাংশ ফ্ল্যাটই ফাঁকা, যার বেশ কয়েকটিতে অভিযানের সময় ছিলেন স্নাইপার রাইফেল হাতে সেনা সদস্যরা। সাড়ে ১০টার দিকে তাদের অনেককেই ছাদ থেকে নেমে যেতে দেখা যায়। আর্টিজানের বিপরীত দিকের ভবনটির ছাদে রাত থেকেই অপেক্ষায় ছিল কমান্ডোরা। তারাও নেমে যান। সকাল সাড়ে ১১টার দিকে ঘটনাস্থলে দেখা যায় জ্যাকেট পরা সিআইডি সদস্যদের। একটু পর পাশের একটি ভবনের গেটে দেখা মেলে দুই জন নারী পুলিশকে। বোঝা যায় পরিস্থিতি ক্রমেই স্বাভাবিক হচ্ছে।রাজধানীর গুলশানে হলি আর্টিজান বেকারি রেস্তোরাঁয় জিম্মিদের মধ্যে শুক্রবার রাতেই ২০ জন বিদেশিকে হত্যা করা হয়েছে বলে জানিয়েছে আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর)। তবে এঁরা কে কোন দেশের তা আজ দুপুর পর্যন্ত নিশ্চিত করেনি আইএসপিআর। এই ২০ বিদেশি নাগরিকের মধ্যে পাঁচজন নারী ছিলেন।শনিবার সেনা সদর দপ্তরে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর মিলিটারি অপারেশন্সের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল নাঈম আশফাক চৌধুরী এ তথ্য জানান। তিনি বলেন, মাননীয় সরকার প্রধানের সময়োচিত, দৃঢ়, সাহসী সিদ্ধান্ত ও সঠিক দিক নির্দেশনার জন্য এই অভিযান সফল হয়।নাঈম আশফাক বলেন, অভিযানের মাধ্যমে তিনজন বিদেশিÑযাদের মধ্যে একজন জাপানি ও দুজন শ্রীলঙ্কানসহ ১৩ জনকে জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে। অভিযানে সাতজন সন্ত্রাসীর মধ্যে ছয়জন নিহত হয় এবং এক সন্দেহভাজন সন্ত্রাসীকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ ছাড়া অভিযান শেষে তল্লাশিকালে ২০ জনের মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়। যাদের সবাইকে গতরাতেই ধারালো অস্ত্র দিয়ে হত্যা করা হয়।সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, প্রচলিত নিয়ম মেনেই সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) মরদেহের ময়নাতদন্ত করা হবে। তাদের পরিচয় নিশ্চিত করতে কোনো জিজ্ঞাসা থাকলে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর প্রভোস্ট মার্শালের সঙ্গে যোগাযোগ করতে হবে। তাঁর মোবাইল নম্বর-০১৭৬৯০১২৫২৪। সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, তদন্ত সাপেক্ষে এই ঘটনার অন্যান্য বিস্তারিত তথ্য যথাযথ কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে পরে জানানো হবে।সংবাদ সম্মেলনের শুরুতেই নাঈম আশফাক চৌধুরী ঘটনার বর্ণনা দেন। তিনি বলেন, গুলশান-২ নম্বরের ৭৯ নম্বর সড়কের হলি আর্টিজান বেকারি নামের একটি রেস্তোরাঁয় দুষ্কৃতকারীরা গুলি ছুড়তে ছুড়তে ভেতরে প্রবেশ করে। রেস্তোরাঁর সবাইকে জিম্মি করে। ঘটনা ঘটার সঙ্গে সঙ্গে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছায় এবং পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। পরবর্তীতে পুলিশ কর্ডন করে সন্ত্রাসীদের যথেচ্ছ কর্মকা- থেকে নির্বৃত্ত করে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ-র্যাব ও বিজিবি যে সাহসিকতা, আন্তরিকতা ও পেশাদারি প্রদর্শন করেছে, তা অনন্য।
রাজধানীর গুলশানে হলি আর্টিজান বেকারি রেস্তোরাঁয় যৌথ কমান্ডো অভিযান চালিয়ে জিম্মিদের উদ্ধার করা হয়। ছবি: ফোকাস বাংলাআইএসপিআরের সংবাদ সম্মেলনে এই সেনা কর্মকর্তা বলেন, এই অভিযানকালে দুজন পুলিশ কর্মকর্তা শাহাদত বরণ করেন এবং ২০ জনের বেশি পুলিশ সদস্য আহত হন। উদ্ভূত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সেনাবাহিনীকে সরকার প্রধান কর্তৃক আদেশ প্রদান করা হয়। সে মোতাবেক বাংলাদেশ সেনাবাহিনী অপারেশন থান্ডারবোল্ট পরিচালনার সিদ্ধান্ত নেয়। সেনাবাহিনী গতকাল রাত থেকেই ঘটনাস্থলে অবস্থানরত আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও গোয়েন্দা বাহিনীর কাছ থেকে বিস্তারিত তথ্য সংগ্রহ করে। সেনাবাহিনীর নেতৃত্বে নৌবাহিনী, বিমানবাহিনী, বিজিবি, পুলিশ, র্যাব, ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স সম্মিলিতভাবে অপারেশন থান্ডারবোল্ট পরিচালনা করে।
তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর এয়ার কমান্ডোর নেতৃত্বে কমান্ডো অভিযান সকাল ৭টা ৪০ মিনিটে শুরু হয়। ১২ থেকে ১৩ মিনিটের মধ্যেই সব সন্ত্রাসীকে নির্মূল করে ওই এলাকায় নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করা হয়। পরবর্তীতে অপারেশনের অন্যান্য কার্যক্রম সম্পন্ন করে সকাল আটটায় অপারেশনের সব কার্য সম্পন্ন করা হয়। ঘটনাস্থল থেকে প্রাথমিকভাবে সন্ত্রাসীদের ব্যবহৃত পিস্তল, ফোল্ডেট বাঁট একে ২২ রাইফেল, বিস্ফোরিত আইইডি, ওয়াকিটকি সেট ও অনেক ধারালো দেশীয় অস্ত্র উদ্ধার করা হয় জানিয়ে তিনি বলেন, অভিযানে অংশগ্রহণকারী সদস্যদের কেউ হতাহত হয়নি।গত রাতে অপারেশনে অংশ নেওয়া পুলিশের নিহত দুজন কর্মকর্তার রুহের মাগফিরাত কামনা করে এই সেনা কর্মকর্তা সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ‘সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টায় সার্বিক কৌশলের মাধ্যমে অতি দ্রুততার সঙ্গে অভিযান সফল করার জন্য সবার কাছে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি। সরকার প্রধানের সময়োচিত, সাহসী, দৃঢ় ও সঠিক দিক-নির্দেশনার জন্য এই অভিযান সফল হয়েছে। তদন্ত সাপেক্ষে এই ঘটনার বিষয়াবলি যথাযথ কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে আপনাদের জানানো হবে।
গুলশানে হলি আর্টিজেন রেস্তোরাঁর ছাদে এক বিদোশি নাগরিককে (ডানে) নিয়ে দুই জিম্মিকারীকে (বাঁয়ে) হাঁটতে দেখা যাচ্ছে। ছবিটি অভিযান শুরুর এক ঘণ্টা আগে সকাল সাড়ে ছয়টায় রেস্তোরাঁর বিপরীত দিক থেকে তোলা। ছবি: প্রথম আলো সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন সেনাবাহিনীর ৪৬ পদাতিক ডিভিশনের কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মুজিবুর রহমান, প্যারা কমান্ডার ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. এম এম ইমরুল হাসান এবং র্যাব-পুলিশ ও বিজিবিসহ সমন্বিত অভিযানে অংশ নেওয়া বাহিনীর প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।গত শুক্রবার রাতে গুলশানের হলি আর্টিজান রেস্তোরাঁয় কয়েকজন বন্দুকধারী ঢুকে দেশিও বিদেশি নাগরিকদের জিম্মি করে। ১২ ঘন্টার এই জিম্মি ঘটনায় ২০ বিদেশি, ছয় সন্ত্রাসী ও দুই পুলিশ কর্মকর্তাসহ মোট ২৮ জন নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন অন্তত ২০ জন পুলিশ সদস্য।
এদিকে, রাজধানীর গুলশানে হলি আর্টিজান বেকারি রেস্তোরাঁয় নিহত ২০ জন বিদেশি এবং সেনাবাহিনীর অভিযানে নিহত ছয়জন সন্ত্রাসীর মরদেহ নিয়ে যাওয়া হয়েছে ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ)। শনিবার বেলা সাড়ে চারটার দিকে কঠোর নিরাপত্তায় ১৪টি অ্যাম্বুলেন্সে করে মরদেহ নিয়ে যায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।
ঘটনাস্থলে থাকা প্রথম আলোর প্রতিবেদক জানিয়েছেন, অপারেশন থান্ডারবোল্ট শেষ হওয়ার পর বেলা দেড়টার দিকে সেনাবাহিনীর আটটি সাঁজোয়া যান ঘটনাস্থল ত্যাগ করে। চলে যান অপরারেশন থান্ডারবোল্টে অংশ নেওয়া কমান্ডো সেনারাও। এরপরে রাস্তার একপাশে কাটা তারের বেড়া দিয়ে দেওয়া হয়। কিছুক্ষণ পরে সেখানে আসেন সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপার আবদুল কাহার আকন্দের নেতৃত্বে সিআইডির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। তাঁরা ঘটনাস্থলে যান এবং সেখান থেকে আলামত সংগ্রহ করেন। এরপরেই ১৪টি অ্যাম্বুলেন্সে করে হতাহতের মরদেহ নিয়ে যাওয়া হয়।এদিকে সেনা সদরে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, প্রচলিত নিয়ম মেনেই সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) মরদেহগুলোর ময়নাতদন্ত করা হবে। তাদের পরিচয় নিশ্চিত করতে কোনো জিজ্ঞাসা থাকলে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর প্রভোস্ট মার্শালের সঙ্গে যোগাযোগ করতে হবে। তাঁর মোবাইল নম্বর-০১৭৬৯০১২৫২৪। সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, তদন্ত সাপেক্ষে এই ঘটনার অন্যান্য বিস্তারিত তথ্য যথাযথ কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে পরে জানানো হবে।
Image : bdnews24.com