সরকারি চাকরিজীবীদের অবৈধ দখলে ১২৮টি বাড়ি

বর্তমানে দেশের ১২৮টি বাড়ি সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের অবৈধ দখলে আছে। এর মধ্যে এফ শ্রেণির একটি, সুপিরিয়র শ্রেণির দুটি, ই শ্রেণির ১২টি, সংরক্ষিত ৫৩টি, ডি শ্রেণির ৫৬টি এবং অস্থায়ী চারটি বাড়ি রয়েছে। সোমবার সরকারি দলের সাংসদ এম আবদুল লতিফের প্রশ্নের জবাবে গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রী মোশাররফ হোসেন এ তথ্য জানান। মন্ত্রী বলেন, কর্মকর্তা-কর্মচারীরা আদালতে মামলা করে এসব বাড়িতে বসবাস করছেন। মামলাগুলো দ্রুত নিষ্পত্তির জন্য দুজন বেসরকারি আইনজীবী নিয়োগের জন্য বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়েছে। গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন বলেছেন, সারা দেশে ১০ হাজার ৪১৪টি পরিত্যক্ত বাড়ি রয়েছে।

মন্ত্রী বলেন,এর মধ্যে ঢাকা জেলায় ৬ হাজার ৪০৬টি পরিত্যক্ত বাড়ি রয়েছে। এসব বাড়ির মধ্যে গেজেটে প্রকাশিত ‘ক’ তালিকাভুক্ত বাড়ির সংখ্যা ৫ হাজার ২৮টি এবং ‘খ’ তালিকাভুক্ত বাড়ির সংখ্যা ১ হাজার ৪৩৯টি।

তিনি বলেন, ঢাকার এসব পরিত্যক্ত বাড়ির মধ্যে বিক্রয় তালিকাভুক্ত বাড়ির সংখ্যা ৪ হাজার ৭৮২টি এবং সংরক্ষিত তালিকাভুক্ত বাড়ির সংখ্যা ২১৫টি। দলিল সম্পাদিত বাড়ির সংখ্যা ২ হাজার ৬৮৯টি এবং ১ হাজার ১১টি বাড়ি অবমুক্ত করা হয়েছে। ৬৬টি বাড়ি অবৈধ বসবাসকারীদের দখলে রয়েছে এবং ৯৯৯টি বাড়ির বিপরীতে মামলা চলছে। বাকি ১ হাজার ৪৮৭টি বাড়ি ডি.এন গ্রহিতা ও বরাদ্দপ্রাপ্তদের কাছ থেকে বা আদায়ের মাধ্যমে বিক্রয়ের জন্য প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।গণপূর্ত মন্ত্রী বলেন, এর বাইরে নারায়ণগঞ্জে ৬২টি, গাজীপুরে ৩টি, নরসিংদীতে ২টি, রাজবাড়ীতে ৩৬টি, রাজশাহীতে ২২৮টি, নাটোরে ৭টি, চাঁপাইনবাবগঞ্জে ১৬টি, নওগাঁয় ৩০টি, পাবনায় ১২৩টি, সিরাজগঞ্জে ১৩টি, বগুড়ায় ২৮০টি, জয়পুরহাটে ১টি, খুলনায় ১ হাজার ৪২১টি, বাগেরহাটে ১টি, যশোরে ৯২টি, কুষ্টিয়ায় ৫০৭টি, চুয়াডাঙ্গায় ২৭টি, চট্টগ্রামে ৩৫৩টি পরিত্যক্ত বাড়ি রয়েছে।তিনি বলেন, বর্তমানে পরিত্যক্ত বাড়ি-ঘর শুধুমাত্র শহীদ পরিবার ও যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধাদের বরাবরে বরাদ্দ প্রদান করা হয়ে থাকে।

গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন বলেন, পরিকল্পিত রাজধানী গড়ে তোলার লক্ষ্যে রাজধানীর আবাসিক এলাকাসমূহে বাণিজ্যিক কার্যক্রম বন্ধ করে আবাসিক বৈশিষ্ট্য ফিরিয়ে আনতে কার্যক্রম গ্রহণ করা হয়েছে।তিনি সংসদে সরকারি দলের সদস্য নিজাম উদ্দিন হাজারীর এক প্রশ্নের জবাবে বলেন, গত ৪ এপ্রিল অনুষ্ঠিত মন্ত্রিসভার সিদ্ধান্ত অনুসারে এ কার্যক্রম গ্রহণ করা হয়েছে।তিনি বলেন, আবাসিক এলাকার কোন প্লটে বেজমেন্ট বা ভূ-তলের গাড়ি পার্কিং-এর জায়গা যথাযথ কাজে ব্যবহার নিশ্চিত করতে ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। এ লক্ষ্যে আবাসিক ভবন বাণিজ্যিক কাজে ব্যবহার করা হলে স্থাপনাগুলো উচ্ছেদের জন্য রাজউক ও সিটি কর্পোরেশনের যৌথ উদ্যোগে মোবাইল কোর্ট পরিচালনার মাধ্যমে উচ্ছেদ কার্যক্রম পরিচালনা করা হচ্ছে।

গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রী বলেন, আবাসিক এলাকায় বার লাইসেন্স বাতিলকরণ ও অপসারণ এবং নতুন কোন লাইসেন্স প্রদান না করার জন্য ইতোমধ্যে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতর কর্তৃক ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে।ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ বলেন, আবাসিক এলাকায় গেস্ট হাউজ, আবাসিক হোটেল বন্ধকরণের জন্য সংশ্লিষ্ট প্লট ও ভবন মালিককে স্ব-উদ্যোগে সেগুলো অপাসরণের জন্য ৬ মাস সময় প্রদান করে রাজউক এবং সিটি কর্পোরেশন হতে নোটিশ প্রদান করা হচ্ছে। ব্যর্থতায় রাজউক-সিটি কর্পোরেশন অপসারণের ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।

তিনি বলেন, রাজউক আওতাধীন এলাকায় সকল অবৈধ বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানে সিটি কর্পোরেশন কর্তৃক ট্রেড লাইসেন্স বাতিলকরণ, সকল অবৈধ বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানে ইউটিলিটি সার্ভিস প্রদানকারী সংস্থা ওয়াসা, গ্যাস, বিদ্যুৎ, টেলিফোন ইত্যাদি সেবা প্রদান বন্ধ করা এবং যাতে এই অবৈধ প্রতিষ্ঠান কোনরূপ বৈধতার সুযোগ না নিতে পারে এই জন্য জাতীয় রাজস্ব বোর্ড কর্তৃক ট্যাক্স বা ভ্যাট আদায় বন্ধকরণের জন্য উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।মন্ত্রী বলেন, মন্ত্রিসভার সিদ্ধান্তসমূহ বাস্তবায়নের লক্ষ্যে স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিবের নেতৃত্বে গঠিত আন্তঃমন্ত্রণালয় কমিটি কাজ করছে।