ঈদের সময় যতই ঘনাচ্ছে, ততই বেপরোয়া হয়ে উঠছে টিকিট কালোবাজারি চক্র। কমলাপুর রেল স্টেশনে ঘণ্টার পর ঘণ্টা লাইনে অপেক্ষার পরও মিলছে না ঈদে ঘরমুখো মানুষের কাঙ্খিত টিকিট। কাউন্টারগুলোতে টিকিট ছাড়ার কিছুক্ষণের মধ্যেই এসি ও শোভন চেয়ারের টিকিট শেষ হয়ে যাওয়ার অজুহাতে টিকিট পাওয়া যাচ্ছে না বলে অভিযোগ অগ্রিম টিকিট প্রত্যাশীদের।এদিকে শত কষ্ট করে লাইনে দাঁড়িয়ে থেকে সোনার হরিণ বাড়ি ফেরার টিকিট হাতে না পেলেও জায়গা মতো যোগাযোগ করলে সহজের হাতে চলে আসছে টিকিট। টিকিটও পর্যাপ্ত। নেই কোনো ক্রাইসিস। তবে এক্ষেত্রে গুণতে হচ্ছে নির্ধারিত মূল্যের চেয়েও কয়েকগুণ বেশি টাকা। সোমবার কমলাপুর রেল স্টেশনে যাত্রী ও কয়েকজন কালোবাজারির সঙ্গে কথা বললে এরকমই তথ্য উঠে আসে।
ঈদে বাড়ি ফেরার প্রত্যাশায় অগ্রিম টিকিট কিনতে আসাদের একজন রাজশাহীর রেজাউল কবির। কমলাপুরে টিকিট ভোগান্তি ও কালোবাজারির দৌরাত্ম্যের কথা জানাতে গিয়ে তিনি বলেন, রোববার দুপুর থেকে স্টেশনে এসে দাঁড়িয়ে আছি। সিরিয়ালে সামনে থাকলেও এসি টিকিট পাইনি। এতো টিকিট কোথায় গেছে?। পরে ঠিকই টিকিট ব্ল্যাকারদের কাছে পাওয়া যাবে।টিকিট সংগ্রহ করতে এসে চট্টগ্রামের দিদারুল আলমেরও একই অভিযোগ। তিনি বলেন, এতো নিরাপত্তা এতো কথা তাহলে টিকিট কই যায়? রেলওয়ে কর্মকর্তাদের যোগসাজসেই কাউন্টারের টিকিট যাত্রীদের হাতে না গিয়ে কারোবাজারিদের হাতে চলে যায়।যাত্রীবেশে রেলওয়ের একজন নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্য রহমান মিয়ার (ছদ্দনাম) সঙ্গে কথা হলে তিনি বলেন, ‘টিকিট লাগবে কবের? কয়টা? আগে থেকেই বলে রাখি- টাকা কিন্তু বেশি লাগবে।
তিনি আরো বলেন, টিকিট এখন আমাদের কাছে পাবেন না। কারণ এখন আপনি ৫০০ টাকার টিকিট সর্বোচ্চ দিবেন ৭০০ টাকা। কিন্তু যেদিন যাবেন সেদিন কয়েকগুণ বেশি টাকা দিয়েও টিকিট নিবেন। ফলে লাভ বেশি।টিকিট প্রত্যাশীদের অপেক্ষার পালা যেন সময়ের সাথে দীর্ঘতর হচ্ছেরেল স্টেশনে কথা হয় আরেকজন কালোবাজারি রমজান মিয়ার সঙ্গে। তিনি বলেন,এবার খুব ঝামেলা হচ্ছে। টিকিটের রেটও বেশি। লাগলে যোগাযোগ কইরেন।’ আগামী ৪ জুলাইয়ের টিকিট আছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ২ জুলাই রাতে ফোন দিয়া মনে করাইয়া দিয়েন। আমি ম্যানেজ কইরে রাখবো।এর আগে রোববার (২৬ জুন) কমলাপুর থেকে ট্রেনের টিকিট কালোবাজারি চক্রের ৫ সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব। স্টেশন এলাকার সার্বিক পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণে এসে এ তথ্য জানান র্যাবের মহাপরিচালক বেনজীর আহমেদ।তিনি বলেন, কেউ যেন যাত্রীদের হয়রানি করতে না পারে, আমরা সেদিকে নজর রাখছি। যাত্রীদের নিরাপত্তা ও কালোবাজারি ঠেকাতে কমলাপুর, সদরঘাট এবং রাজধানীর বাস টার্মিনালগুলোতে র্যাবের ৯টি অস্থায়ী ক্যাম্প খোলা হয়েছে।ঈদের ছুটিতে রাজধানীর নিরাপত্তায় বাড়তি ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে জানিয়ে বেনজীর বলেন, ঈদে মাওয়া ও আরিচায় দু’টি করে র্যাবের ৪টি ক্যাম্প স্থাপন করা হবে।
এদিকে সোমবার বিক্রি হচ্ছে ৫ জুলাইয়ের টিকিট। ঈদের ছুটি ০১ তারিখ থেকে শুরু হওয়ায় ৫ জুলাইয়ে টিকিটের চাহিদা আগের দু’দিনের তুলনায় অনেক কম। সকাল থেকে প্রচুর ভিড় থাকলেও বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে সেটা কমতে থাকে। টিকিট পেয়েছেন প্রায় সবাই। দুপুর গড়িয়ে বিকেলে কাউন্টারের সামনের চিত্র ছিল প্রায় ফাঁকা। টিকিটও পর্যাপ্ত রয়েছে বলে জানিয়েছেন রেলওয়ের কর্মকর্তারা।
০৫ জুলাইয়ের টিকিট প্রত্যাশী রবিউল আলম বলেন, ‘আজকে চাপ অনেক কম। টিকিটের জন্য বেশি সময় অপেক্ষা করতে হয়নি। মাত্র ০৮-১০ জনের সিরিয়াল। কমলাপুর স্টেশন ম্যানেজার সীতাংশু চক্রবর্তী বলেন, আজকে সকালে মোটামোটি ভিড় ছিল। তবে এখনও অনেক টিকিট অবিক্রিত রয়েছে।
টিকিট কালোবাজারি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এবার টিকিট কালোবাজারি বন্ধে অনেকগুলো স্পটে সিসি ক্যামেরা স্থাপন করা হয়েছে। প্রচুর নিরাপত্তা বাহিনী রয়েছে। তাদের চোখ ফাঁকি দিয়ে কেউ ব্ল্যাকে টিকিট বিক্রি করতে পারবে না। আর যে দু-একজন করেছে তাদেরকে গ্রেপ্তার করছে র্যাব।
সকাল ১০টার পর এসব কাউন্টারে টিকেট প্রত্যাশীদের অপেক্ষা করতে হয়নি লম্বা সময়; বলতে গেলে ছিল না কোনো ভোগান্তি। টিকেট বিক্রির এমন ‘অভূতপূর্ব’ চিত্রে ‘অবাক’ হয়েছেন কেউ কেউ। স্টেশনের ম্যানেজার সীতাংশু চক্রবর্তী বেলা সোয়া ১১টার দিকে প্রচুর টিকেট’ অবিক্রিত থাকার কথা জানিয়েছেন। অবশ্য টিকেট বিক্রির সামগ্রিক চিত্রে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন তিনি।চাঁদ দেখা সাপেক্ষে ৬ জুলাই বুধবার ঈদ ধরে এবার ৫, ৬ ও ৭ জুলাই রোজার ঈদের ছুটি নির্ধারিত আছে। আর ৩ জুলাই রোববার শবে কদরের ছুটি। তার আগে দুইদিন শুক্র ও শনিবার হওয়ায় কার্যত ছুটি শুরু হচ্ছে ১ তারিখ থেকেই। সোমবার বিক্রি হয়েছে ৫ জুলাইয়ের অগ্রিম টিকেট। ঈদের ফিরতি টিকেট বিক্রি শুরু হবে ৪ জুলাই।
ঢাকা থেকে চট্টগ্রামের পথে নতুন ট্রেন উদ্বোধনের কারণে শনিবার আগাম টিকেট বিক্রি বন্ধ থাকলেও ওইদিন দুপুর থেকেই কাউন্টারে ভিড় করতে শুরু করেন অনেকে। রোববার সকাল ৮ থেকে টিকেট বিক্রি শুরু হয়।রোববার কাউন্টাগুলোর সামনে প্রচন্ড গরমের মধ্যে লোকজনকে অধীর আগ্রহে লাইনে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা গেলেও সোমবার দেখা যায়নি তেমন চিত্র।
ঈদের আগের দিনের টিকেট প্রত্যাশী মো. শামসুদ্দিন আহমেদ বললেন, এবার কমলাপুরে একেবারেই ভিন্ন চিত্র। আসলাম, দাঁড়ালাম আর টিকেট পেয়ে গেলাম। এ এক অভূতপূর্ব চিত্র। কখনও এমন হয়নি।
সকাল সাড়ে ১০টার দিকে উত্তরবঙ্গগামী রংপুর এক্সপ্রেস, লালমনি এক্সপ্রেস, নীলসাগর এক্সপ্রেস, একতা ও দ্রুতযান এক্সপ্রেসের কাউন্টারের টিকেট বিক্রেতাদের বলতে শোনা গেল, এবার টিকেট আছে, যাত্রী নাই।তারা জানান, ভোরে টিকেট প্রত্যাশীদের চাপ থাকলেও বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে তা ক্রমেই ক্রমে আসছে।নর্থসাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র মাসুদুর রহমান উজ্জ্বল বলেন, ঈদের আগের দিনের টিকেটের জন্য এসেছি। স্টেশনে এসে আমি খুব অবাক হয়েছি। মাত্র আধা ঘণ্টার ব্যবধানে আমি টিকেট পেয়ে গেছি।
বেলা ১১টার দিকে রেলওয়ের কর্মী ও টিকেট বিক্রেতা শফিকুল ইসলাম বলেন, ৫ জুলাইয়ের ট্রেনগুলোর এসি, এসি বার্থের টিকেটগুলো অবিক্রিত রয়ে গেছে। সকাল থেকে মাত্র ৪০% টিকেট বিক্রি হয়েছে। পোশাককর্মী রাবেয়া বেগম ও ফারজানা আক্তার যাবেন জামালপুর। কিছুটা ভিড় ঠেলে টিকেট কাটলেও তা পেয়ে দারুণ খুশি তারা।অন্যবার তো সকাল থিকা ঠ্যালাঠেলি, ধাক্কাধাক্কি লাইগ্যা থাকে। জান এক্কেবারে শেষ হইয়া যায়। এবার সেই ভিড়ই নাই।তবে টিকেট কাঁটতে গিয়ে দীর্ঘ লাইনের পড়ার ভোগান্তির কথা জানালেন জামালপুরের মোহাম্মদ রোকন।
তিনি বলেন, রোববার দুপুর ২টার দিকে দেওয়ানগঞ্জের টিকেট নিতে লাইনে দাঁড়িয়েছিলেন। সেই টিকেট পেয়েছেন সোমবার সকাল সাড়ে ৯টায়।সরকারি তিঁতুমীর কলেজের ছাত্র মোহাম্মদ খায়রুল আলমের অভিযোগ, কাঙ্খিত সময়ের টিকেট চেয়ে পাননি।মিঠামইন যাব আমি। কিন্তু কাউন্টার থেকে আমাকে বলা হল, সকাল বা দুপুরের কোনো ট্রেনের টিকেট নেই। আমাকে যেতে হবে রাতে। কিন্তু কিশোরগঞ্জ থেকে বাড়ি যেতে আমার লাগবে পাঁচ ঘণ্টা। এত রাতে বাড়ি যাব কীভাবে?খায়রুলের মতো টিকেট প্রত্যাশীদের কয়েকজন এমন অভিযোগ করে ‘বাধ্য হয়েই’ পরবর্তী শিফটের টিকেট কেনার কথা জানান।
জামালপুর ও কিশোরগঞ্জের কাউন্টারের চিত্র এমন হলেও চট্টগ্রাম ও সিলেটগামী ট্রেনগুলোর কাউন্টার ছিল একেবারেই ফাঁকা।বিক্রেতা আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, টিকেট প্রত্যাশীদের ভিড় এবার তুলনামূলক কম।কমলাপুর স্টেশনে কাউন্টার সংখ্যাও আগের চেয়ে তিনটি বাড়িয়ে ২৩টি করা হয়েছে। নারী, শিশু ও প্রতিবন্ধীদের জন্য রয়েছে আলাদা একটি কাউন্টার। রোববার কাউন্টারগুলোতে প্রচন্ড ভিড় থাকলেও সোমবার ছিল একেবারেই ফাঁকা। স্টেশন ম্যানেজার সীতাংশু চক্রবর্তী বলেন, ৫ জুলাইয়ের রাতের প্রচুর টিকেট অবিক্রিত রয়ে গেছে।অবশ্য টিকেট বিক্রির সামগ্রিক চিত্রে ‘সন্তুষ্ট’ তিনি।
এবার কেউ টিকিট না পেয়ে ফেরত যাবে না। কাক্সিক্ষত সময় ও স্টেশনের টিকেট অনেকে নাই পেতে পারেন। কিন্তু পরবর্তী শিফট ও স্টেশনের টিকিট তো আছেই,বলেন স্টেশন ম্যানেজার।কমলাপুর স্টেশনে টিকেট বিক্রির শৃঙ্খলা রক্ষায় রেলের নিরাপত্তাকর্মীদের পাশাপাশি পুলিশ এবং র্যাব সদস্যরাও দায়িত্ব পালন করছেন।ঈদে ট্রেনের টিকেট বিক্রির মৌসুমে কালোবাজারিদের দৌরাত্ম্যের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে স্টেশনে র্যাবের অস্থায়ী ক্যাম্প খোলা হয়েছে। রোববার তারা গ্রেপ্তার করেছে পাঁচ কালোবাজারিকে।
রেলওয়ে জানিয়েছে, এবার ঈদে কমলাপুর স্টেশন থেকে প্রতিদিন ৩৩টি ট্রেনের ১৮ হাজার করে টিকেট বিক্রি হওয়ার কথা। এর ৬৫ শতাংশ টিকেট উন্মুক্ত বিক্রির জন্য রাখা। মোবাইল ও অনলাইনে বিক্রির জন্য রাখা ২৫ শতাংশ। ভিআইপিদের জন্য ৫ শতাংশ এবং রেলওয়ের কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের জন্য ৫ শতাংশ টিকেট রাখা আছে। এছাড়া প্রয়োজনে ‘স্ট্যান্ডিং টিকেট’ বিক্রি করা হবে।ঈদ উপলক্ষে বিভিন্ন টেনে অতিরিক্ত ৮৪টি বগি সংযোজন করা হয়েছে। এছাড়া ঢাকা-খুলনা, ঢাকা-পার্বতীপুর ও ঢাকা-দেওয়ানগঞ্জ রুটে তিন জোড়া অতিরিক্ত ট্রেন চলবে। রেলওয়ে জানিয়েছে, ঈদ উপলক্ষে ১ জুলাই থেকে ঈদের আগের দিন পর্যন্ত সাপ্তাহিক বন্ধের দিনও আন্তঃনগর ট্রেন চালবে। এদিকে, ঢাকা নদী বন্দরে যাত্রীদের নিরাপত্তা ও গতি বিধি পর্যবেক্ষণের জন্য ১৪টি পয়েন্ট ৩০টি সিসি ক্যামেরা বসানো হয়েছে। এছাড়া সদরঘাট নৌ-টার্মিনাল এলাকায় পকেটমার, অজ্ঞানপার্টি এবং ছিনতাইকারী যেন ঘোরাঘুরি না করতে না পারে সে বিষয়ে পুলিশ প্রশাসনও তৎপর রয়েছে।
বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন কর্তৃপক্ষ( বিআইযব্লিউটিএ) সূত্রে জানা গেছে, নৌ-বন্দরের গুরুত্বপূর্ণ ১৪টি পয়েন্টে এবং ৯টি গ্যাংওয়ে ও পন্টুনে এই ৩০টি সিসি ক্যামেরা স্থাপন করা হয়েছে। এর মাধ্যমে নদীবন্দরের নৌ-নিরাপত্তা ও ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা বিভাগের যুগ্ম পরিচালকের দপ্তর থেকে একজন কর্মকর্তা সার্বক্ষণিক মনিটরিং করা হবে এবং অতিরিক্ত যাত্রীদের বিষয়ে আগাম তথ্য দেয়া হবে।এছাড়া সদরঘাটে বিআইডব্লিউটিএ’র টার্মিনাল ও পন্টুনে ২০টি মাইক স্থাপন করা হয়েছে। এ মাইকের সাহায্যে সার্বক্ষণিক নির্দেশনা দেয়া হবে।সোমবার সকাল থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত সদরঘাট নৌ-বন্দর ঘুরে ও সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য পাওয়া গেছে।
আসন্ন ঈদুল ফিতর উপলক্ষে প্রতিটি লঞ্চ সার্ভে, চেক লিস্ট অনুযায়ী সব শর্ত পূরণ করে টার্মিনালের নির্দিষ্ট স্থানে বার্দিং করবে এবং পন্টুনের নির্ধারিত স্থানে লঞ্চ বার্দিং করার জন্য বেসরকারি লঞ্চ মালিকদের প্রতি নির্দেশ দিয়েছে বিআইডব্লিটিএ। মাঝ নদীতে কোনো লঞ্চ নোঙর করে রাখা যাবে না।জানা গেছে, যাত্রীদের সেবার মান বৃদ্ধির লক্ষ্যে ঢাকা নৌ টার্মিনাল সম্প্রসারণ করা হয়েছে। সদরঘাট বন্দর দিয়ে দেশের দক্ষিণাঞ্চলের ২২টি জেলার যাত্রীরা জাহাজে চলাচল করে। ৪১টি নৌ-রুটে প্রতিদিন স্বাভাবিক সময়ে ৭০ থেকে ৮০টি লঞ্চ চলাচল করে। আর এখন ১০০ থেকে ১২০টি বড় লঞ্চ চলাচলের জন্য প্রস্তুত করা হয়েছে। এবার স্বাভাবিকের চেয়ে অতিরিক্ত ৫০ লাখ যাত্রী চলাচল করবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।যাত্রীদের চাপ সামাল দিতে পুরনো ঢাকার লালকুটির ঘাট থেকে চাঁদপুরগামী ২০টি লঞ্চ ছেড়ে যাবে। এ ঘাটে ৫টি পন্টুন বসানো হয়েছে। যাত্রীদের রোদ বৃষ্টির জন্য অস্থায়ী শামিয়ানাও প্রস্তুত রাখা হয়েছে। পটুয়াখালীগামী সব লঞ্চ ওয়াইজঘাট থেকে ছেড়ে যাবে বলে বিআইডব্লিটিএ সূত্রে জানা গেছে।
সদরঘাট নৌ-বন্দরের নৌ-নিরাপত্তা ও ট্রাফিক বিভাগের যুগ্ম পরিচালক জয়নাল আবেদীন বলেন, নৌ-পথে গার্মেন্টকর্মী যাত্রী বেশি। এই যাত্রীদের ছুটি হয় ঈদের দুই দিন আগে। ফলে ঈদের আগের দিন চাপ বেড়ে যায়। এই চাপ মোকাবেলায় এবার ঈদের ৫টি নতুন লঞ্চ সংযোজন হবে।তিনি বলেন, দুর্ঘটনা মোকাবেলার জন্য বিআইডব্লিউটিএ এর উদ্ধারকারী জাহাজ ও ডুবুরি রাখা হয়েছে। এছাড়া লালকুটিরঘাট থেকে ওয়াইজঘাট পর্যন্ত টার্মিনাল পন্টুনে ফ্যাসিলিটি প্রায় দুই হাজার ফুট দীর্ঘ নদীর তীরে ১৪টি পয়েন্টে যাত্রী প্রবেশ করতে পারবে। ১৩টি গ্যাংওয়ে ও ২১টি পন্টুনের মাধ্যমে যাত্রী জাহাজে উঠতে এবং নামতে পারবে। এসব কারণে আসন্ন ঈদে আমরা ভালোভাবে যাত্রীরা স্বাচ্ছন্দ্যে বাড়ি ফিরতে এবং ঈদ শেষে ঢাকায় ফিরে আসতে পারবে।