সব জল্পনা-কল্পনার অবসান ঘটিয়ে ঈদুল ফিতরের আগেই বিএনপির পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা করছেন দলটির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। দলের স্থায়ী কমিটি, ভাইস চেয়ারম্যান, উপদেষ্টামণ্ডলী, সম্পাদকমণ্ডলী, জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ও উপ কমিটির সম্পাদক-সহ সম্পাদকদের নাম ঈদের আগেই ঘোষণা করবেন তিনি।
দলটির শীর্ষ পর্যায়ের বেশ কয়েকজন নেতার সঙ্গে সরাসরি কথা বলে এ তথ্য পাওয়া গেছে। তারা বলছেন, ২০ রোজার পর বিগত বছরগুলোতে ওমরাহ পালনের জন্য খালেদা জিয়া সৌদি আরব গেলেও এবার যাচ্ছেন না। ২২ রোজার (২৮ জুন) পর তার কোনো ইফতার মাহফিলও নেই। গুছিয়ে রাখা কাজ এই ৮ দিনে শেষ করে বিএনপির পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা করবেন তিনি। এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ঈদের আগেই বিএনপির বাকি কমিটিগুলো হয়ে যাবে। আমরা আশা করছি ম্যাডাম এ ক’দিনের মধ্যেই পূর্ণাঙ্গ কমিটি দিয়ে দেবেন।
সূত্রমতে, ১৯ সদস্য বিশিষ্ট স্থায়ী কমিটিতে পদাধিকার বলে চেয়াপারসন খালেদা জিয়া, সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সদস্য হিসেবে থাকায় বাকি ১৬টি পদের জন্য ১৬ জনের নাম এরই মধ্যে চূড়ান্ত করেছেন খালেদা জিয়া। ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, তরিকুল ইসলাম, লে. জে. (অব.) মাহবুবুর রহমান, ব্রি. জে. (অব.) আ স ম হান্নান শাহ, এম কে আনোয়ার, ব্যারিস্টার জমিরউদ্দিন সরকার, ড. আব্দুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, ব্যারিস্টার রফিকুল ইসলাম মিয়া, মির্জা আব্বাস ও গয়েশ্বরচন্দ্র রায় স্বপদে বহাল থাকছেন।
প্রয়াত ড. আর এ গণি ও মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে ফাঁসি হওয়া সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী, অসুস্থ এম শামসুল ইসলাম ও সারোয়ারি রহমানের পদে বসাতে হবে নতুন মুখ। জানা গেছে, এই চার পদের জন্য অন্তত ৮ জন সিনিয়র নেতার নাম ঘুরে ফিরে এলেও শেষ পর্যন্ত দলের ভাইস চেয়ারম্যান শাহ মোয়াজ্জেম হোসেন, আব্দুল্লাহ আল নোমান, সেলিমা রহমান ও চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আমির খসরু মাহমুদকেই বেছে নিয়েছেন খালেদা জিয়া। অপর দুই ভাইস চেয়ারম্যান সাদেক হোসেন খোকা, মেজর (অব.) হাফিজউদ্দিন আহমেদ, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা খন্দকার মাহবুব হোসেন ও ড. ওসমান ফারুকের নাম স্থায়ী কমিটির সদস্য হিসেবে শোনা গেলেও শেষ পর্যন্ত এ চার জনের ঠাঁই হচ্ছে না স্থায়ী কমিটিতে। তবে ১৬ থেকে বাড়িয়ে দলের ভাইস চেয়ারম্যান পদ ৩২ করায় এদের সবাই ভাইস চেয়ারম্যান পদ পাচ্ছেন।
নতুন করে এ পদে ঢুকে পড়ছেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আব্দুল আউয়াল মিন্টু, শামসুজ্জামান দুদু, আহমেদ আযম খান, সাবেক যুগ্ম মহাসচিব আমান উল্লাহ আমান, সালাহউদ্দিন আহমেদ, মোহাম্মদ শাহজাহান, বরকত উল্লাহ বুলু, ঢাকা মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব আবদুস সালামের মত অপেক্ষাকৃত সিনিয়র নেতারা। এদিকে স্থায়ী কমিটির সদস্য শামসুল ইসলাম, সারোয়ারি রহমান, ভাইস চেয়ারম্যান, বিচারপতি টিএইচ খান, অ্যাডভোকেট হারুন আল রশিদ, বিএনপিপন্থি বুদ্ধিজীবী অধ্যাপক ড. এমাজউদ্দিন আহমেদ, পঞ্চগড় জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি মোজাহার হোসেনের মত প্রবীণ নেতারা দলের উপদেষ্টা হিসেবে নিয়োগ পাচ্ছেন বলে জানা গেছে।
এ ছাড়া জাতীয় নির্বাহী কমিটিতে ঠাঁই পাচ্ছেন বিগত দিনে আন্দোলন সংগ্রামে নানাভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়া তৃণমূল পর্যায়ের নেতারা। এ ক্ষেত্রে বিভিন্ন সময় তৃণমূল থেকে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে পাঠানো মামলা, হামলা, গ্রেপ্তার ও হয়রানির শিকার হওয়া নেতাদের তালিকা থেকেই জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য নিয়োগের কাজটি সম্পন্ন করছেন খালেদা জিয়া।