Lionel-Messi-thenewscompanyকোপা আমেরিকার ফাইনালে পরাজিত হয়ে আরেকবার শিরোপা স্বপ্ন ভঙ্গ হওয়ায় আন্তর্জাতিক ফুটবল থেকে অবসরের ঘোষনা দিয়েছেন আর্জেন্টাইন অধিনায়ক লিয়নেল মেসি।  এই নিয়ে চতুর্থবারের মত জাতীয় দলের জার্সি গায়ে বড় কোন টুর্নামেন্টের ফাইনালে পরাজয় মানতে হলো মেসিকে। কোপার ফাইনালে গতকাল নির্ধারিত ও অতিরিক্ত সময়ের ম্যাচে কোন দলই গোল করতে ব্যর্থ হলে ম্যাচের ভাগ্য নির্ধারনের জন্য টাই ব্রেকের প্রয়োজন হয়। স্পট কিক থেকে বার্সেলোনার সুপারস্টার মেসি নিজের শটটি মিস করেন।

ম্যাচ শেষে হতাশ ২৯ বছর বয়সী এই কাতালান তারকা বলেছেন, ‘আমার জন্য জাতীয় দল আজ থেকে শেষ হয়ে গেছে। যা আমার পক্ষে সম্ভব ছিল আমি সবকিছুই করেছি। চারটি ফাইনালে খেলেছি কিন্তু দূর্ভাগ্য হলো একটিতেও জিততে পারিনি। এটা আমার ও পুরো দলের জন্য অত্যন্ত কঠিন একটি মুহূর্ত। এটা ভাষায় প্রকাশ করা যাবে না। তবে আর্জেন্টিনার হয়ে আমার যাত্রা এখানেই শেষ।’

২০১৪ সালের পর থেকে মেজর কোন টুর্নামেন্টে টানা তৃতীয় ফাইনালে আর্জেন্টিনার পরাজয়ের পরে মেসির নাটকীয় এই ঘোষনা এলো। ২০১৪ সালে ব্রাজিল বিশ্বকাপে তারা জার্মানীর কাছে ১-০ গোলে পরাজিত হয়েছিল। এরপর গত দুটি কোপা আমেরিকার ফাইনালে চিলির কাছে পেনাল্টিতে পরাজিত হয়ে হতাশ হতে হলো। ২০০৭ সালের কোপা আমেরিকার ফাইনালেও পরাজয়ের স্বাদ পেয়েছিলেন মেসি।  পাঁচবারের ফিফা বর্ষসেরা খেলোয়াড়ের খেতাব ব্যালন ডি’অর জয়ী মেসি বর্ণাঢ্য ক্যারিয়ারে খুব কমই আর্জেন্টাইন সমর্থকদের সমালোচনার মুখে পড়েছেন। বরং প্রায়ই তাকে নিয়ে বিশ্বব্যাপী আলোচনার ঝড় উঠেছে- আদৌ তিনি সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ ফুটবলার কিনা। নিজ দেশের সমর্থকদের কাছে না হলেও বিশ্ব জুড়ে তার অবশ্য একটি সমালোচনার ক্ষেত্র তৈরী হয়েছিল। জাতীয় দলের জার্সি গায়ে বড় কোন সাফল্য না আসাটাই এই সমালোচনার মূল কারণ। আর্জেন্টিনার কিংবদন্তী ফুটবলার দিয়েগো ম্যারাডোনার সাথে মেসির তুলনায় উঠলেই নিন্দুকেরা একটি বিষয় সামনে নিয়ে আসতো, ১৯৮৬ সালে ম্যারাডোনার নেতৃত্বে আর্জেন্টিনা বিশ্বকাপ জিতেছিল। এটাই ম্যারাডোনার ক্যারিয়ারে সবচেয়ে বড় সাফল্য, এখানেই মেসির সাথে তার পার্থক্য।

ম্যারাডোনা নিজে অবশ্য মাঝে মাঝেই মেসির সমালোচনায় মুখর হয়ে উঠতেন। এমনকি ইউরোর এবারের আসর শুরু হবার আগে মেসি সম্পর্কে মন্তব্য করতে গিয়ে ম্যারাডোনা বলেছিলেন তার মধ্যে ব্যক্তিত্ব ও নেতৃত্বের অভাব রয়েছে।  গত বছরটা অবশ্য মেসির ক্যারিয়ারে খুব একটা ভাল সময় ছিল না। ইনজুরির কারনে প্রায়ই তাকে মাঠের বাইরে বিশ্রামে কাটাতে হয়েছে। যদিও তার নেতৃত্বে বার্সেলোনা আরেকবার স্প্যানিশ শিরোপা লাভ করে। কোপা আমেরিকার প্রথম ম্যাচেই পিঠের ইনজুরির কারনে খেলতে পারেননি। তবে দ্বিতীয় ম্যাচেই মাঠে ফিরে পানামার বিপক্ষে মাত্র ১৯ মিনিটেই হ্যাটট্রিক করে দলকে বড় জয় উপহার দিয়েছিলেন। এরপর সেমিফাইনালে যুক্তরাষ্ট্রের বিপক্ষে জাতীয় দলের জার্সি গায়ে সর্বকালের সর্বোচ্চ গোলের রেকর্ড গড়েন। ৫৫ গোল করে তিনি সাবেক কিংবদন্তী গ্যাব্রিয়েল বাতিস্তুতাকে ছাড়িয়ে যান।