ওয়াসিম ও আনোয়ারচাঞ্চল্যকর মিতু হত্যাকাণ্ডের দায় স্বীকার করে আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছে গ্রেফতার হওয়া দুই আসামি ওয়াসিম ওরফে মোতালেব ও আনোয়ার হোসেন। রোববার (২৬ জুন) চট্টগ্রাম মহানগর হাকিম হারুন অর রশিদ তাদের জবানবন্দি রেকর্ড করেছেন। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও নগর গোয়েন্দা পুলিশের সহকারী কমিশনার (দক্ষিণ) মো. কামরুজ্জামান দৈনিকবার্তাকে বলেন, গ্রেফতার দুই আসামি ১৬৪ ধারায় মিতু হত্যাকাণ্ডের দায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে। এরপর আদালত তাদের কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন।

রোববার দুপুর ১টার দিকে তাদের জবানবন্দি গ্রহণের জন্য আদালতে হাজির করে নগর গোয়েন্দা পুলিশ। জবানবন্দি গ্রহণ শুরু হয় বিকেল সাড়ে ৪টায়। প্রথমে ওয়াসিম এবং পরবর্তীতে আনোয়ারের জবানবন্দি গ্রহণ করেন আদালত। রাত সাড়ে ৮টায় জবানবন্দি গ্রহণ শেষ হলে তাদের কারাগারে নেয়া হয়। এর আগে বিকেলে নগর পুলিশ কমিশনার ইকবাল বাহার সাংবাদিকদের বলেছিলেন, আমরা মিতু হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত দুই আসামিকে গতকাল (শনিবার) গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়েছি। এদের একজন ওয়াসিম ও আরেকজন আনোয়ার। তারা এখন আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিচ্ছে। এ দু’জন হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে সরাসরি জড়িত। তাদের দু’জনের বাড়িই রাঙ্গুনিয়ায়।

হত্যাকাণ্ডে গ্রেফতার দু’জনের ভূমিকার বিষয়ে জানতে চাইলে সিএমপি কমিশনার বলেন, তারা সক্রিয়ভাবে হত্যাকাণ্ডে অংশগ্রহণ করেছে, এটিই তাদের স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি। মোটরসাইকেল আরোহী তিনজনের মধ্যে একজন হলেন ওয়াসিম এবং তিনিই শ্যুট (গুলি) করেছেন। আনোয়ার ঘটনাস্থলে রেকি করার জন্য যে কয়েকজন দাঁড়িয়েছিল তাদের একজন। ইকবাল বাহার আরও বলেন, এখন পর্যন্ত আমরা জানতে পেরেছি হত্যাকাণ্ডে ৭-৮ জন জড়িত। তার ভেতর থেকে আমরা এ দু‘জনকে ধরতে পেরেছি। বাকি যারা জড়িত, তাদের নাম ঠিকানা আমরা পাবো। এরা পেশাদার অপরাধী। জড়িত অন্যদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।

তারা কেনো হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে এমন কিছু কি জিজ্ঞাসাবাদে পাওয়া গেছে- এমন প্রশ্নে কমিশনার বলেন, আমরা কেবল তাদের ধরতে পেরেছি। বাকি যারা জড়িত তাদের পেলে এবং তদন্ত শেষ হলে পুরোটা বলতে পারবো। এ পর্যন্ত এ ঘটনায় ক’জন গ্রেফতার হলো- এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, পরিষ্কার বিষয় হলো গ্রেফতার এ দু’জনই। এছাড়া এতোদিন যাদের আটক করা হয়েছে তাদের তথ্যের জন্য আনা হয়েছিল। ‍তাদের কোনোভাবেই গ্রেফতার বলা যাবে না।

গত ৫ জুন সকালে ছেলেকে স্কুলবাসে তুলে দিতে যাওয়ার সময় নগরীর ও আর নিজাম রোডে দুর্বৃত্তদের উপর্যুপরি ছুরিকাঘাত ও গুলিতে নিহত হন পুলিশ সুপার বাবুল আক্তারের স্ত্রী মাহমুদা খানম ‍মিতু। এ ঘটনায় বাবুল আক্তার নিজে বাদি হয়ে নগরীর পাঁচলাইশ থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। হত্যাকাণ্ডের পর থেকেই সিএমপির সঙ্গে তদন্তে নামে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন এবং কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিট। এক সপ্তাহ পর আইজির নির্দেশে ঘটনা তদন্তে পাঁচটি সমন্বিত টিম গঠন করা হয়।