ঐতিহাসিক গণভোটে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) ছাড়ার পক্ষে রায় দিয়েছে যুক্তরাজ্যের বেশিরভাগ মানুষ। ইইউ ছাড়ার পক্ষে ভোট পড়েছে ৫২ শতাংশ। আর ইইউতে থাকার পক্ষে ভোট পড়েছে ৪৮ শতাংশ। এখন পর্যন্ত ইইউ ছাড়ার পক্ষে প্রায় সাত লাখ ভোট বেশি পড়েছে। ইংল্যান্ড ও ওয়েলসের বেশিরভাগ মানুষ ইইউ থেকে বেরিয়ে যাওয়ার পক্ষে ভোট দিয়েছেন। আর লন্ডন, স্কটল্যান্ড ও উত্তর আয়ারল্যান্ড ইইউতে থাকার পক্ষে শক্তিশালী অবস্থান নেয়।
ইউকেআইপি নেতা নিজেল ফারাজ গণভোটের ফলাফলে আনন্দ প্রকাশ করেছেন। তিনি বলেছেন, আজ যুক্তরাজ্যের স্বাধীনতা দিবস। তবে ইইউতে থাকার পক্ষের প্রচারকেরা এটিকে ‘বিপর্যয়’ হিসেবে উল্লেখ করেছেন।
গণভোটে ৭১ দশমিক ৮ শতাংশ ভোট পড়েছে । তিন কোটিরও বেশি মানুষ ভোট দিয়েছেন। দেশটির ওয়েলস এবং ব্রিটেনের বাইরে ইংল্যান্ডের বড় অংশ ইইউ ছাড়ার পক্ষে ভোট দিয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবারের গণভোটের ফলাফল এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা করা হয়নি। ঐতিহাসিক গণভোটের ফল আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা করা হবে ম্যানচেস্টার টাউন হলে। এ উপলক্ষে হলের দরজা নিয়ন আলোয় সাজানো হয়েছে।
যুক্তরাজ্যের ইতিহাসের তৃতীয় এই গণভোটে সব মিলিয়ে মোট ভোটার প্রায় ৪ কোটি ৬৫ লাখ। এই গণভোটে ইংল্যান্ড, স্কটল্যান্ড, ওয়েলস ও উত্তর আয়ারল্যান্ডের পাশাপাশি স্পেন উপকূলের অদূরে ব্রিটিশ-শাসিত ক্ষুদ্র ভূখন্ড জিব্রাল্টারের অধিবাসীরাও তাদের রায় দিয়েছেন।যুক্তরাজ্যকে ৩৮২টি এলাকায় ভাগ করে ফলাফল গণনা চলছে। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত চারটি এলাকায় ফলাফল ঘোষণা করা বাকি রয়েছে। প্রধান ভোট গণনা কর্মকর্তা জেনি ওয়াটসন বলেন, ম্যানচেস্টার টাউন হলে ফলাফল ঘোষণা করা হবে। ইউকেআইপি নেতা নিজেল ফারাজ ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরনকে পদত্যাগ করার দাবি জানান। ক্যামেরন গণভোটের আয়োজন করলেও শুরু থেকেই ইইউতে থাকার পক্ষে প্রচার চালিয়েছেন। অন্যদিকে বরাবরই ইইউতে না থাকার পক্ষে প্রচার চালান নিজেল ফারাজ।
গণভোটের ব্যালট পেপারে ভোটারদের প্রতি প্রশ্ন রাখা হয়, ‘যুক্তরাজ্যের ইইউর সদস্য হিসেবে থাকা উচিত, নাকি ইইউ ত্যাগ করা উচিত?’ প্রত্যেক ভোটারকে থাকা না-থাকার যেকোনো একটি অপশনে টিক দিতে হয়েছে। এদিকে গণভোটের এই ফলের প্রভাব এর মধ্যেই বিশ্ববাজারে পড়তে শুরু করেছে। ১৯৮৫ সালের পর এই প্রথম ডলারের বিপরীতে পাউন্ডের সর্বনিম্ন পতন ঘটেছে। লেবার দলের ছায়া চ্যান্সেলর জন ম্যাকডানেল বলেন, পাউন্ডকে চাঙা করতে ব্যাংক অব ইংল্যান্ডকে ভূমিকা রাখতে হবে। সুন্ডারল্যান্ডে প্রাথমিক ফলাফলে বিপক্ষের ভোট বেশি পড়ার কয়েক মুহূর্ত পরেই পাউন্ডের পতন হয়েছে ৩ শতাংশ। এর কিছুক্ষণ পর ইউরোর বিপরীতে পাউন্ডের ৬.৫ শতাংশ পতন হয়েছে।