photo-1466595177নারায়ণগঞ্জের কালিবাজারের স্বর্ণপট্টিতে হয়রানির অভিযোগে সদর মডেল থানার এক সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই ) ও দুই সোর্সকে গণধোলাই দিয়েছে স্বর্ণ ব্যবসায়ী ও কর্মচারীরা। বুধবার দুপুর ১২টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। পুলিশ বলছে, ঘটনাটি ভুল বোঝাবুঝির কারণ হয়েছে। চোরাই স্বর্ণ বিক্রেতা ও এক সোর্সকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাদের কাছ থেকে চোরাই আট আনার একটি স্বর্ণের চেইন উদ্ধার করা হয়েছে।

কালীরবাজার স্বর্ণ ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, আজ পুলিশের সোর্স লিটন কালীরবাজার স্বর্ণপট্টিতে নোয়াব মার্কেটের পাণ্ডব রায়ের মালিকানাধীন ‘মা তাঁরা’ স্বর্ণের দোকানে যান একটি স্বর্ণের চেইন বিক্রি করতে। কিন্তু দোকানের কর্মচারীরা চেইন কিনতে অস্বীকৃতি জানান। এর কিছুক্ষণ পরই নারায়ণগঞ্জ সদর মডেল থানার এএসআই আশরাফ মোটরসাইকেলে করে আরেক সোর্স ইকবালকে সঙ্গে নিয়ে সাদা পোশাকে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন। এ সময় লিটনকে গ্রেপ্তার করতে চান।

কয়েকজন প্রত্যক্ষদর্শী জানিয়েছেন, এ সময় সব ব্যবসায়ী ও কর্মচারীরা একসঙ্গে দোকান থেকে বের হয়ে আসেন। তাঁরা এএসআই আশরাফ ও লিটনকে নিয়ে মার্কেটের দোতলায় অবরুদ্ধ করে রাখেন। এর মধ্যে মার্কেটের সব ব্যবসায়ী দোকান বন্ধ রেখে রাস্তায় পুলিশের শাস্তির দাবিতে মিছিল করতে থাকে। প্রায় আধা ঘণ্টা পর আবারো এএসআই আশরাফ তাঁর কথিত চোরাই স্বর্ণ বিক্রেতা লিটনকে নিয়ে বের হয়ে যেতে চাইলে উত্তেজিত জনতা তাদের গণপিটুনি দেয়। জনরোষ থেকে বাঁচতে আশরাফ লিটনকে নিয়ে পুনরায় দোতলায় আশ্রয় নেন। এর কিছুক্ষণ পর সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আব্দুল মালেক ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে চেষ্টা করেন। পুলিশ আশরাফ ও লিটনকে ভ্যানে ওঠানোর সময়ও জনতা তাদের গণপিটুনি দিতে থাকে। গণপিটুনি খেতে খেতেই তাঁরা থানার উদ্দেশে রওনা হন।

ব্যবসায়ীরা আরো অভিযোগ করেন, পুলিশ প্রায়ই নিজেদের লোকদের চোরাই স্বর্ণ বিক্রি করতে তাদের কাছে পাঠায়। কোনো দোকানদার সেই স্বর্ণ কিনলে তাকেসহ বিক্রেতাকে থানায় ধরে নিয়ে যায়। পরে ৫০ হাজার থেকে এক লাখ টাকা নিয়ে ছেড়ে দেয়। এ সময় এক ব্যবসায়ী বলেন, ‘আমরা নিরীহ ব্যবসায়ীরা সদর থানার পুলিশের হাতে জিম্মি হয়ে গেছি।’

নারায়ণগঞ্জ সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল মালেক পুলিশকে গণপিটুনি দেওয়ার অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ‘বিষয়টি ভুল বোঝাবুঝি হয়েছে। পুলিশ চোরাই স্বর্ণ বিক্রেতাকে ধরতে কালিরবাজার স্বর্ণপট্টিতে যায়। এ সময় এএসআই চোরাই স্বর্ণ যে দোকনে বিক্রি করতে গিয়েছিল তার নাম জানতে গেলে ব্যবসায়ী ও কর্মচারীরা উত্তেজিত হয়ে উঠে।’