রাজধানীবাসীর ঈদ কেনাকাটার সময় ছিনতাই কিংবা চাঁদাবাজির মতো অপরাধ দমনে প্রয়োজনে পুলিশ গুলি চালাবে বলে হুঁশিয়ার করেছেন ডিএমপি কমিশনার মো. আছাদুজ্জামান মিয়া। তিনি বলেন, রাস্তায় সাদা পোশাকের বিপুল সংখ্যক পুলিশ সদস্য মোতায়েন রয়েছে। ছিনতাইরোধে তারা কাজ করছে। বুধবার গাবতলী বাস টার্মিনালে আইনশৃঙ্খলা ও ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা সংক্রান্ত এক মতবিনিময় সভায়তিনি এ কথা বলেন।এসময় তিনি ট্রাফিক আইন সচেতনতামূলক একটি ভিডিও সিডির মোড়ক উন্মোচন করেন।
বাংলাদেশ বাস-ট্রাক ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের চেয়ারম্যান মো.ফারুক তালুকদার সোহেলের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এ সভায় ডিএমপি কমিশনার বলেন, পুলিশ হবে নাগরিকবান্ধব। রাস্তায় পুলিশ কোনো জনদুর্ভোগ সৃষ্টি করতে দেবে না। বিগত দুই মাসে ঢাকা মহানগরের ট্রাফিক ব্যবস্থার ব্যপক উন্নয়ন হয়েছে। রাস্তায় উল্টোপথে গাড়ি চলাচল এখন বন্ধ। যত ক্ষতাধর ব্যক্তিই হোন না কেন, তাকে উল্টোপথে গাড়ি চালাতে দেয়া হবে না।ট্রাফিক সচেতনতামূলক সাড়ে ১৮ মিনিটের ভিডিও চিত্রটি জনসচেতনতা সৃষ্টির জন্য যেন প্রতিটি বাসে বিশেষ করে নাইটকোচগুলোতে প্রচার করা হয় তার অনুরোধ জানান ডিএমপি কমিশনার।
তিনি বলেন,ছিনতাই ও মলমপার্টির দৌরাত্ম রোধে দুই মাস আগে থেকেই উদ্যোগ গ্রহণ করেছে পুলিশ। এরমধ্যে বিশেষ মলম পার্টি ও ছিনতাই প্রতিরোধে অভিযান চালানো হয়েছে এবং অসংখ্য ছিনতাইকারী ও মলম পার্টির সদস্যদের আটক করা হয়েছে। এমনকি আদালত থেকে যদি কেউ জামিনে বেরিয়ে আসে, তাদেরকেও পুলিশ নজরদারি করছে।চুরি, ছিনতাই, চাঁদাবাজি এমনকি রাহাজানি প্রতিরোধে প্রয়োজনে পুলিশকে গুলি করতে বলা হয়েছে। কোনোভাবেই দুষ্কৃতকারীদের ছাড় দেওয়া হবে না। এই প্রিয় মহানগরে কিছু হতে দেওয়া হবে না।
গুলির নির্দেশের বিষয়ে তিনি সভার পর সাংবাদিকদের বলেন, কিছুদিন আগেও ব্যাংকের সামনে পাহারা দিতে হত, টাকা ছিনতাই হত। আমাদের গোয়েন্দারা সতর্ক রয়েছে।যদি এ ধরনের টাকা ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটে তবে আমরা প্রয়োজনে গুলি চালাব। কারণ এটিও আইনে বলা রয়েছে কোন মুহূর্তে জান ও মাল রক্ষার্থে পুলিশ গুলি ছুড়তে পারবে।গুলি ছোড়ার ক্ষেত্রে আইন মেনে পুলিশ তা করবে বলে নগরবাসীকে আশ্বস্ত করেন আছাদুজ্জামান। পুলিশের সাম্প্রতিক প্রশ্নবিদ্ধ বন্দুকযুদ্ধ নিয়ে এক প্রশ্নে তিনি বলেন, পুলিশ কখনও ক্রসফায়ার করে না। তাদের (পুলিশ) কাজ হচ্ছে, আসামিদের ধরে আইনে সোপর্দ করা।তবে অপরাধী ধরতে গিয়ে পুলিশ আক্রান্ত হলে এনকাউন্টারে যেতে বাধ্য হয়। তখন দুই একজন অপরাধীর মৃত্যুর ঘটনা ঘটে, অনেক সময় পুলিশ সদস্যরাও আহত হন।
মতবিনিময় সভায় ডিএমপি কমিশনার বলেন, আসন্ন ঈদ-উল ফিতরে ছিনতাইকারী, অজ্ঞান পার্টি, মলম পার্টির কোনো দৌরাত্ম্য থাকবে না। ইতোমধ্যে অজ্ঞান পার্টির দুই শতাধিক সদস্যকে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে বিভিন্ন মেয়াদে সাজা দেওয়া হয়েছে।ঢাকার ভেতরের বাস ডিপোগুলো বাইরে নেওয়া হলে যানজট অনেকাংশে কমে যাবে বলে মনে করেন তিনি।মতবিনিময় সভায় সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ বাস-ট্রাক ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ফারুক তালুকদার সোহেল।