বিরুপ আবহাওয়ায় বিঘিœত দ্বিতীয় সেমিফাইনালে কলম্বিয়াকে ২-০ গোলে পরাজিত করে কোপা আমেরিকার ফাইনালে উঠেছে চিলি। রোববারের ফাইনালে বর্তমান চ্যাম্পিয়নদের প্রতিপক্ষ আবারো সেই আর্জেন্টিনা। গত বছরের ফাইনালে জয়ী চিলি যেখানে নিজেদের শিরোপা ধরে রাখার প্রত্যয়ে মাঠে নামবে ঠিক তেমনি মেসির নেতৃত্বাধীন দূর্দান্ত ফর্মে থাকা আর্জেন্টিনার লক্ষ্য ২৩ বছরের খরা কাটিয়ে প্রথম বড় কোন টুর্নামেন্টে শিরোপা জয়।
কোয়ার্টার ফাইনালে মেক্সিকোকে ৭-০ গোলে বিধ্বস্ত করে অনেকটাই ফুরফুরে মেজাজে ছিল চিলি। ম্যাচ শুরুর ১১ মিনিটের মধ্যেই দুই গোলে করে তারা সেটার প্রমানও দেয়। ৭ মিনিটে বায়ার লিভারকুসেন মিডফিল্ডার চার্লস আরানগুইজ প্রথম গোল করে দলকে এগিয়ে দেন। ১১ মিনিটে ব্যবধান দ্বিগুন করেন হোসে পেড্রো ফুয়েনজালিডা। ম্যাচ শেষে চিলি কোচ হুয়ান এন্টোনিও পিজ্জি বলেছেন, ‘কঠিন সব প্রতিপক্ষকে পিছনে ফেলে আবারো ফাইনালে খেলার অনুভূতি সত্যিই আনন্দের। আমাদের শুরুটা ভাল হয়েছিল। আজ আমরা আগ্রাসী খেলেছি ও প্রত্যাশাও বেশী ছিল। এটাই আমাদের দ্রুত গোল আদায় করে নিতে সহযোগিতা করেছে।’
যদিও চিলির দূরন্ত সূচনায় বাঁধ সাধে শিকাগোর স্বভাবসুলভ ঝড়ো বৃষ্টি। বিরতির সময় প্রচন্ড ঝড়ো হাওয়ায় ম্যাচ বন্ধ রাখতে বাধ্য হন আয়োজকরা। সোলজার ফিল্ড স্টেডিয়ামে আগত প্রায় লাখখানেক দর্শক নিরাপদ আশ্রয়ের খোঁজে স্টেডিয়ামের শেল্টার গুলোর নীচে চলে যান। এক সময় মনে হয়েচিল ম্যাচটি পরিত্যক্ত হয়ে যাবে, দলগুলোকে আবারো বৃহস্পতিবার বাকি ৪৫ মিনিট খেলার জন্য অপেক্ষায় থাকতে হবে। তবে প্রায় আড়াই ঘন্টা বিরতির পরে স্থানীয় সময় রাত ১০.২৫ মিনিটে দ্বিতীয়ার্ধের ম্যাচ আবারো শুরু হয়। এ সম্পর্কে পিজ্জি বলেছেন, ঐ সময়টা বিরতির কারনে ম্যাচের ওপর মনোনিবেশ ধরে রাখাটা কঠিন ছিল। ড্রেসিং রুমে বসে থেকে ম্যাচ শুরুর অপেক্ষা, এটা খুব একটা ভাল অনুভূতি নয়। ম্যাচ পুনরায় শুরু হলে উভয় দলই দারুনভাবে নিজেদের এগিয়ে নিতে থাকে। বিশেষ করে কলম্বিয়া বারবার আক্রমন করে ম্যাচে ফিরে আসার চেষ্টায় ছিল। অন্যদিকে চিলির লক্ষ্য ছিল তৃতীয় গোল করে ম্যাচটিকে কার্যত শেষ করে দেয়া। চিলিয়ান ডিফেন্ডার গঞ্জালো জারার বিপক্ষে পেনাল্টি এরিয়ার মধ্যে ড্যানিয়েল টরেসকে ফাউল করার অপরাধে কলম্বিয়ার পেনাল্টির আবেদনে সাড়া দেননি এল সালভাদোরের রেফারী জোয়েল এ্যাগুইলার। রিয়াল মাদ্রিদ তারকা হামেস রদ্রিগেজ ম্যাচের নিয়ন্ত্রন নিতে শতভাগ চেষ্টা করেছেন। তার কল্যাণে কলম্বিয়া আক্রমনভাগে বেশ সরব ছিল, কিন্তু শেষ পর্যন্ত চিলির শক্ত রক্ষনভাগ ভাঙ্গা হয়নি। ৫৭ মিনিটে দ্বিতীয় হলুদ কার্ড দেখে এ্যাস্টন ভিলার মিডফিল্ডার কার্লোস সানচেজ মাঠ ত্যাগ করলে কলম্বিয়ার স্বপ্ন আরো ক্ষীণ হয়ে যায়। ম্যাচের শেষ মুহূর্তগুলো কার্যত শারিরীক শক্তিমত্তা প্রদর্শনে মেতে উঠেছিল দুই দলের খেলোয়াড়রা। যে কারনে রেফারীকে আটটি হলুদ কার্ড ও একটি লাল কার্ড দেখাতে হয়েছে।
কলম্বিয়ার কোচ হোসে পেকারম্যান বলেছেন, এটা এমন একটি রাত ছিল যেখানে আমরা ভুল করেছি এবং সাথে সাথে তার শাস্তিও পেয়ে গেছি। দ্বিতীয়ার্ধে দলের মধ্যে বিশ্বাস ছিল ফিরে আসার। একটি স্পষ্ট পেনাল্টি থেকে আমরা বঞ্চিত হয়েছি। ঐ সময় গোলটি হলে ম্যাচের চেহারা পাল্টে যেতে পারতো। রোববার দ্বিতীয়ারের মত এবারের টুর্নামেন্টে আর্জেন্টিনার মুখোমুখি হতে যাচ্ছে চিলি। এর আগে গ্রুপ পর্বে প্রথম ম্যাচে চিলিকে ২-১ গোলে পরাজিত করেছিল আর্জেন্টাইনরা।