দুদক

অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা ব্যয় দেখিয়ে ১৭টি বিমা কোম্পানি বিভিন্ন সময়ে গ্রাহকদের ১ হাজার ৭৮১ কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। সরকারি-বেসরকারি এই ১৭ বিমা কোম্পানির বিরুদ্ধে অনুসন্ধানে নেমেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।মঙ্গলবার অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নিয়ে দুই সদস্যের অনুসন্ধান দল গঠন করেছে সংস্থাটি। উপপরিচালক মো. জালাল উদ্দিনের নেতৃত্বে দলের অন্য সদস্য হলেন সহকারী পরিচালক মো. আনোয়ার হোসেন। আর পরিচালক সৈয়দ ইকবাল হোসেনকে অনুসন্ধান কাজের তদারকির দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।

দুদক সচিব আবু মো. মোস্তফা কামাল বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, গণমাধ্যমে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনের ওপর ভিত্তি করে ওই অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। প্রতিবেদনটি দুদকের যাচাইবাছাই কমিটি নানাভাবে মূল্যায়ন শেষে অভিযোগ অনুসন্ধানের সুপারিশ করেন।অভিযোগের বিষয়ে দুদক সূত্র জানায়, জীবন বিমা খাতের সরকারি-বেসরকারি পুরোনো ১৭ কোম্পানি ২০০৯ সাল থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা ব্যয়ের নামে অবৈধভাবে ব্যয় করেছে ১ হাজার ৯৭৮ কোটি ৪৩ লাখ টাকা। এর মধ্যে গ্রাহকের অংশ ৯০ শতাংশ বা ১ হাজার ৭৮০ কোটি ৫৯ লাখ টাকা। বিমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের (আইডিআরএ) কাছে কোম্পানিগুলোর দাখিল করা তথ্যে এমন অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেছে।

বিমা কোম্পানিগুলো হলো পপুলার লাইফ ইনস্যুরেন্স, জীবন বীমা করপোরেশন, ফারইস্ট ইসলামী লাইফ, পদ্মা ইসলামী লাইফ, গোল্ডেন লাইফ, সন্ধানী লাইফ, প্রগতি লাইফ, সানফ্লাওয়ার লাইফ, সানলাইফ, প্রাইম ইসলামী লাইফ, মেঘনা লাইফ, ডেল্টা লাইফ, রূপালী লাইফ, হোমল্যান্ড লাইফ, প্রোগ্রেসিভ লাইফ, বায়রা লাইফ ও ন্যাশনাল লাইফ ইনস্যুরেন্স।

দুদক সূত্র আরও বলেছে, আইডিআরএর কাছে কোম্পানিগুলোর জমা দেওয়া তথ্য পর্যালোচনায় সরকারি-বেসরকারি ১৭টি বিমা কোম্পানির মধ্যে অবৈধ ব্যয়ের শীর্ষে সাতটি কোম্পানির নাম উঠে এসেছে। ওই সাত কোম্পানি মোট অবৈধ ব্যয় করেছে ১ হাজার ৩৯৬ কোটি ২৮ লাখ টাকা, যা মোট অবৈধ ব্যয়ের ৭০ দশমিক ৬ শতাংশ।

শীর্ষ সাতটি কোম্পানির মধ্যে পপুলার লাইফ ২৯৩ কোটি ৩৮ লাখ টাকা, জীবন বীমা করপোরেশন ২৭৬ কোটি ৭৬ লাখ টাকা, ফারইস্ট ইসলামী লাইফ ২০০ কোটি ৫১ লাখ টাকা, পদ্মা ইসলামী লাইফ ১৬৬ কোটি ৮৩ লাখ, গোল্ডেন লাইফ ১৬৫ কোটি ২৫ লাখ, সন্ধানী লাইফ ১৫৫ কোটি ৫৯ লাখ ও প্রগতি লাইফ ১৪৬ কোটি ৯৬ লাখ টাকা অবৈধভাবে ব্যয় করেছে বলে তথ্য উঠে এসেছে।

এ ছাড়া অন্যান্য কোম্পানির মধ্যে সানফ্লাওয়ার লাইফ ৯১ কোটি ২৭ লাখ টাকা, সানলাইফ ৯০ কোটি ৭০ লাখ টাকা, প্রাইম ইসলামী লাইফ ৭৪ কোটি ৪১ লাখ, মেঘনা লাইফ ৬৯ কোটি ৫২ লাখ টাকা, ডেল্টা লাইফ ৫৫ কোটি ৩২ লাখ টাকা, রূপালী লাইফ ৫০ কোটি ২৩ লাখ, হোমল্যান্ড লাইফ ৪৮ কোটি ৮ লাখ, প্রোগ্রেসিভ লাইফ ৪২ কোটি ৬৩ লাখ টাকা, বায়রা লাইফ ৩৮ কোটি ৬২ লাখ টাকা ও ন্যাশনাল লাইফ ইনস্যুরেন্স ৭ বছরে ২১ কোটি ৩৭ লাখ টাকা অবৈধ ব্যয় করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে।