সামঞ্জস্য ও শান্তির জন্য যোগ প্রতিপাদ্য নিয়ে বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও পালিত হলো আন্তর্জাতিক যোগ দিবস। মঙ্গলবার সকালে মিরপুর শহীদ সোহরাওয়ার্দী ইনডোর স্টেডিয়ামে ভারতীয় হাই কমিশনের আয়োজনে দিবসটি পালিত হয়। এ আয়োজনের সহযোগিতায় ছিল জাতিসংঘ ও বাংলাদেশ যোগ অ্যাসোসিয়েশন। জাতিসংঘ ২০১৪ সালের ২৭ সেপ্টেম্বর ২১ জুনকে আন্তর্জাতিক যোগ দিবস হিসেবে ঘোষণা করে। এর মধ্য দিয়ে জাতিসংঘ এবং বিশেষ করে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় এই সুপ্রাচীন অনুশীলনের ঐতিহাসিক উপকারিতা এবং জাতিসংঘের মূল্যবোধ ও নীতির সঙ্গে এর অবিচ্ছেদ্য সম্পর্ককে স্বীকৃতি দিয়েছে। ভারত এই অনুশীলনের আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি এবং অধিকতর সচেতনতা সৃষ্টির লক্ষ্যে এরপ্রচারণা জোরদার করেছে। বাংলাদেশ বিশ্ব যোগ দিবস সংক্রান্ত জাতিসংঘের প্রস্তাবের অন্যতম সমর্থক এবং একে সর্বান্তঃকরণে সমর্থন দিয়েছে।
যোগ একটি প্রাচীন অনুশীলন যা শরীর মন, চিন্তা ও কাজে সমন্বয় সাধন করে এবং সাধারণ স্বাস্থ্য ও কল্যাণের লক্ষ্যে পবিত্র ধারণা ক্সতরি করে। মঙ্গলবার সারাবিশ্বে বিভিন্ন কায়দায় যোগ অনুশীলিত হচ্ছে এবং এর জনপ্রিয়তা দিনদিন বাড়ছে। আন্তর্জাতিক যোগদিবস’-এর লক্ষ্যে হচ্ছে যোগানুশীলনের বহুবিধ উপকারিতা সম্পর্কে বিশ্বব্যাপী সচেতনতা গড়ে তোলা।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ। বিশেষ অতিথি হিসেবে ছিলেন, যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী ড. শ্রী বীরেন শিকাদার, ভারতীয় হাই কমিশনার শ্রী হর্ষবর্ধন শ্রিংলা, জাতীয় দলের ফুটবলার জাহিদ হাসান এমিলি, চলচ্চিত্র অভিনেতা আরেফিন শুভ, সঙ্গীত শিল্পী হাবিব ওয়াহিদ ও আখি আলমগীর।প্রধান অতিথির বক্তব্যে তোফায়েল আহমেদ দিবসটি নিয়ে বলেন, যোগ ব্যায়াম মন ও শরীরকে ভালো রাখে। আজকের এ বিশেষ দিবসে আমি উপস্থিত হতে পেরে আনন্দিত। ভাবতে ভালো লাগছে আজ ভারতের প্রাচীন এ যোগ ব্যায়াম আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি পেয়েছে। এ প্রাচীন যোগসাধনা আমরাও যেন জাতীয় পর্যায়ে নিয়ে যেতে পারি সেই চেষ্টা করবো। আশা করি এ বিষয়টি বিশ্বব্যাপী আরও ছড়িয়ে দিতে ভারত সরকার সুদূরপ্রসারী উদ্যোগ নেবে।
অনুষ্ঠানে যোগব্যায়ামের বিভিন্ন আসন ও কসরৎ প্রদর্শন করেন ভারতীয় হাই কমিশনের ইন্দিরা গান্ধী কালচারাল সেন্টারের যোগব্যায়াম কোর্সের শিক্ষার্থী এবং বাংলাদেশ যোগ অ্যাসোসিয়েশনের সদস্যরা। আসনগুলোর মধ্যে ছিল- বজ্রাসন, শবাসন, উজ্জীবন, অর্ধচন্দ্রাসন, সর্বাঙ্গসন।অনুষ্ঠানের শেষ ভাগে আমন্ত্রিত অতিথিরাও অংশ নেন যোগ ব্যায়ামের আসনগুলোতে।
জাতিসংঘ ঘোষিত আন্তর্জাতিক যোগ দিবসের মূল ধারণাটি আসে ভারত থেকে। প্রাচীনকাল থেকেই ভারতে যোগ ব্যায়ামের প্রচলন। ২০১৪ সালের ২৭ সেপ্টেম্বর জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনে আন্তর্জাতিক যোগ দিবস পালনের প্রস্তাব রাখেন ভারতের বর্তমান প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।২০১৪ সালের ১১ ডিসেম্বর জাতিসংঘের ১৭৭টি সদস্য রাষ্ট্রের সর্বসম্মতিক্রমে ২১ জুন তারিখটিকে আন্তর্জাতিক যোগ দিবস পালনের প্রস্তাব গ্রহণ করা হয়। জাতিসংঘের সব সদস্যদের ভোটে সুপারিশ পাস হওয়ার রেকর্ড গড়ে এ দিবসটি। ২০১৫ সালের ২১ জুন প্রথমবার পালিত হয় আন্তজার্তিক যোগ দিবস। গতবার বাংলাদেশে যোগ দিবস পালনের মূল আয়োজনটি হয়েছিল শাহবাগের জাতীয় জাদুঘর মিলনায়তনে।উপমহাদেশে কতিপয় ধ্যানীর আত্মনিষ্ঠ প্রয়াসের ফসল যোগ ব্যায়াম। হাজার বছর আগে আবিষ্কৃত এ যোগ বিদ্যার সাধনা একেবারে লুপ্ত হয়ে যায়নি।এ চর্চার সঙ্গে যুক্ত হওয়ার আহ্বান আয়োজকদের।