ঢাকার গুলিস্তানে পরিবহন শ্রমিকদের একটি কার্যালয় দখল নিয়ে বিরোধের জের ধরে প্রায় তিন ঘণ্টা বন্ধ থাকার পর খুলেছে মেয়র হানিফ ফ্লাইওভার। সোমবার দুপুরে সংঘর্ষের পর পরিবহন শ্রমিকরা ওই ফ্লাইওভারে বাস আড়াআড়ি রেখে দিলে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। এতে রোজায় প্রচ- গরমের মধ্যে দুর্ভোগে পড়তে হয় যাত্রীদের। যাত্রাবাড়ী বাসস্ট্যান্ডে অফিস দখল করাকে কেন্দ্র করে শ্রমিকদের দুই গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। সোমবার দুপুর ১২টা থেকে শুরু হয় এ সংঘর্ষ। এ সময় শ্রমিকরা সড়ক অবরোধ করে রাখে।এদিকে ঘণ্টাব্যাপী সংঘর্ষ এবং সড়ক অবরোধের ফলে ওই এলাকার সড়কগুলোতে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়। যাত্রাবাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আনিসুর রহমান জানান, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে পুলিশ।
বেলা ৩টার দিকে গাড়ি চলাচল পুনরায় শুরু হয় জানিয়ে ডিএমপির যুগ্ম কমিশনার (ট্রাফিক- সাউথ) মফিজউদ্দিন আহমেদ বলেন, বর্তমানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণ কক্ষের কর্তব্যরত অপারেটর ফজলুল হক বলেন,চলাচল শুরু হলেও গাড়ির চাপ অস্বাভাবিক। খুবই ধীরে চলছে গাড়ি।বঙ্গভবনের পূর্ব দিকে শ্রমিক ইউনিয়নের একটি কার্যালয়ের দখল নিয়ে শ্রমিকদের দুপক্ষের মধ্যে দুপুর ১২টার দিকে সংঘর্ষ বাঁধে বলে জানান যাত্রাবাড়ী থানার ওসি মো. আনিসুর রহমান।এরপর শ্রমিকরা মেয়র মোহাম্মদ হানিফ ফ্লাইওভারের উপরে আড়াআড়ি করে বাস রেখে পথ আটকে দেয়। ফলে গুলিস্তান থেকে যাত্রাবাড়ীর পথে ফ্লাইওভারের উপর দিয়ে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।এছাড়া গুলিস্তান মহানগর নাট্যমঞ্চের পাশে ও সায়দাবাদ বাস টার্মিনালের সামনের সড়কও বাস রেখে আটকে যানচলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয় ।যাত্রাবাড়ীর ওসি আনিসুর জানান, বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়ন ও ঢাকা জেলা শ্রমিক ইউনিয়নের ওই সংঘর্ষের পর যাত্রাবাড়ী চৌরাস্তা এলাকায়ও যান চলাচল বন্ধ হয়ে গিয়েছিল।
ডিএমপির ওয়ারী বিভাগের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার মো. মাইনুল হাসান জানান, যে কার্যালয় নিয়ে গোলমালের শুরু, তা এখন তালাবদ্ধ। কাউকে ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না। সেখানে পুলিশ মোতায়েন রয়েছে।দুই পক্ষের সঙ্গে কথা বলে যান চলাচল স্বাভাবিক করা হয়েছে। কার্যালয়টি নিয়ে তাদের সবার সঙ্গে কথা বলে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
শফিকুল নামে একজন বাস শ্রমিক বলেন, ওই কার্যালয়টি বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়নের ছিল, কিন্তু রোববার রাতে ঢাকা জেলা শ্রমিক ইউনিয়নের নেতা সফর আলী তা দখল করেন।এ কারণে (সোমবার) দুপুরে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়নের কর্মীরা বাস চালানো বন্ধ করে দিয়ে ওই অফিসে তালা ঝুলিয়ে দেয়।বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন সমিতির মহাসচিব মো. এনায়েত উল্লাহ বলেন, ঢাকা জেলা শ্রমিক ইউনিয়নের কোনো শ্রমিক নেই। যত শ্রমিক আছে সব বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন ইউনিয়নের পরিচয়পত্র বহন করে।কিন্তু ২০০১ সালের একটি মামলায় ঢাকা জেলা শ্রমিক ইউনিয়ন আদালতে জিতে যায়। একারণে রোববার রাতে তারা ওই কার্যালয়টির নিয়ন্ত্রণ নেয়।
এনায়েত উল্লাহ বলেন, যাদের কোনো শ্রমিকই নাই, তাদের আবার অফিস কী প্রয়োজন? যেহেতু তারা আদালতে জয়লাভ করেছেন। তাহলে তারা অন্য স্থানে একটি অফিস তৈরি করলেই হয়, বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়নের অফিস দখল করার তো প্রয়োজন নেই।