৩ র‌্যাব কর্মকর্তার স্বাক্ষ্য গ্রহণ ও জেরা সম্পন্ন

নারায়ণগঞ্জের আলোচিত সাত খুন মামলায় আরো তিন র‌্যাব কর্মকর্তার স্বাক্ষ্যগ্রহণ ও জেরা হয়েছে। সোমবার সকাল সাড়ে নয়টা থেকে দুপুর একটা পর্যন্ত নারায়ণগঞ্জ জেলা ও দায়রা জজ সৈয়দ এনায়েত হোসেনের আদালতে তৎকালীন সময়ে র‌্যাব-১১ তে কর্মরত দুই উপ-সহকারী পরিচালক আতিয়ার রহমান, সেলিম খান ও হাবিলদার আবদুস সাত্তারের স্বাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়। স্বাক্ষ্যগ্রহণ ও জেরা শেষে আদালত আগামী ২৭ জুন পরবর্তী স্বাক্ষ্য গ্রহণের তারিখ ধার্য্য করেন।

এর আগে সকালে কঠোর নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে সাত খুন মামলার প্রধান আসামী নূর হোসেন ও র‌্যাবের সাবেক তিন কর্মকর্তা, লে.কর্নেল তারেক সাঈদ মোহাম্মদ, কমান্ডার এম এম রানা ও মেজর আরিফ হোসেনসহ সহ ২৩ আসামীকে আদালতে হাজির করা হয়। পরে আসামীদের উপস্থিতিইে স্বাক্ষীদের স্বাক্ষ্য গ্রহণ শুরু হয়। স্বাক্ষ্য গ্রহণ শেষে আসামীপক্ষের আইনজীবিরা তাদের জেরা করেন। পাবলিক প্রসিকিউটর এস এম ওয়াজেদ আলী খোকন জানান, সোমবার র‌্যাব-১১ তে তৎকালীন সময়ে কর্মরত দুই উপ-সহকারী পরিচালক আতিয়ার রহমান, সেলিম খান ও হাবিলদার আবদুস সাত্তারের স্বাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়েছে। আদালতে তারা সাত খুনের ঘটনার সাথে কারা কারা ছিলেন, কার কি ভূমিকা ছিল- এর বিস্তারিত বর্ণণা দিয়েছেন। এছাড়াও ঘটনার দির মেজর আরিফ হোসেন ও লেফটেনেন্ট কমান্ডার এম এম রানার নির্দেশেই তারা সিভিল টীম গঠনসহ চেকপোস্ট বসিয়েছিলেন বলে তারা আদালতে স্বাক্ষ্য প্রদানের সময় স্বীকার করেন।

ওয়াজেদ আলী খোকন আরো জানান, এই মামলা প্রমাণের ক্ষেত্রে আজকের এই তিন র‌্যাব কর্মকর্তার স্বাক্ষ্য গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। এই নিয়ে ৭ খুনের ঘটনায় দায়েরকৃত দুইটি মামলায় মোট ১২৭ জন স্বাক্ষীর মধ্যে পৃথক দুই মামলার বাদি, একজন যুগ্ন জেলা জজ, পাঁচজন জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট, র‌্যাব কর্মকর্তা-সদস্য ও বেশ কয়েকজন আইনজীবিসহ মোট ৭১ জনের স্বাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হলো।

২০১৪ সালের ২৭ এপ্রিল ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ লিংক রোডের ফতুল্লার লামাপাড়া এলাকা থেকে নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের প্যানেল মেয়র নজরুল ইসলাম সিনিয়র আইনজীবি চন্দন সরকারসহ ৭ জনকে অপহরণ করা হয়। এর তিন দিন পর শীতলক্ষ্যা নদী থেকে তাদের লাশ উদ্ধার করা হয়। সাত খুনের ঘটনায় নিহত প্যানেল মেয়র নজরুল ইসলাম ও তার ৪ সহযোগী হত্যার ঘটনায় নজরুলের স্ত্রী সেলিনা ইসলাম বিউটি বাদী হয়ে ফতুল্লা থানায় একটি এবং সিনিয়র আইনজীবী চন্দন সরকার ও তার গাড়ির চালক ইব্রাহিম হত্যার ঘটনায় তার জামাতা বিজয় কুমার পাল বাদী হয়ে একই থানায় অপর একটি মামলা দায়ের করেন। দীর্ঘ এক বছর পর মামলার তদন্ত কর্মকর্তা জেলা গোয়েন্দা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মামুনুর রশিদ মন্ডল ৩৫ জনকে আসামী করে আদালতে অভিযোগপত্র (চার্জশীট) দাখিল করেন। এই মামলায় ৩৫ জন আসামীর মধ্যে ২৩ জন গ্রেফতার হয়ে কারাগারে রয়েছে। ১২ জন আসামী এখনো পলাতক রয়েছে।