হাথুরুসিংহে

আভাসটা আগেই দিয়েছিল বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)। নতুন মেয়াদে কাজও শুরু করেছেন চন্দিকা হাথুরুসিংহে। এবার আনুষ্ঠানিকভাবে বিসিবি প্রধান নাজমুল হাসান জানিয়েছেন, ২০১৯ বিশ্বকাপ পর্যন্ত চুক্তির মেয়াদ বাড়ানো হয়েছে প্রধান কোচসহ সব কোচিং স্টাফের।হাথুরুসিংহের অধীনে বাংলাদেশ দলের চমৎকার পারফরম্যান্সের পর রোববার বিসিবি সভা শেষে সংবাদ সম্মেলনে বিসিবি প্রধানের ঘোষণাটা প্রত্যাশিতই ছিল। সাধারণত দুই বছরের জন্য মেয়াদ বাড়ানো হলেও, বিশ্বকাপ সামনে রেখে এবার তিন বছর বাড়িয়েছে দেশের ক্রিকেট নিয়ন্ত্রক সংস্থাটি।সহকারী কোচ রুয়ান কালপাগে, ট্রেনার মারিও ভিল্লাভারায়ন ও ফিল্ডিং কোচ রিচার্ড হ্যালসলের মেয়াদও বেড়েছে।

দ্বিতীয় মেয়াদে দল নির্বাচনে সরাসরি ভূমিকা থাকছে হাথুরুসিংহের। বিসিবি নির্বাচন প্রক্রিয়া দুই স্তরে নেওয়ার পর তিনি এখন অন্যতম নির্বাচকও।আনুষ্ঠানিকভাবে ২০১৪ সালের ১ জুলাই থেকে শ্রীলঙ্কার সাবেক ক্রিকেটার হাথুরুসিংহেকে দুই বছরের জন্য দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল। তবে দায়িত্ব নেওয়ার আগেই দলের সঙ্গে কাজ শুরু করেন হাথুরুসিংহে। সেই বছর জুনে বাংলাদেশে ভারতের বিপক্ষে তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজে নতুন শিষ্যদের সঙ্গে ছিলেন তিনি।হাথুরুসিংহে দলের সঙ্গে কাজ শুরুর পর এ পর্যন্ত টেস্ট, ওয়ানডে, টি-টোয়েন্টি মিলিয়ে ৬১ ম্যাচ খেলে ৩০টিতে জিতে বাংলাদেশ। ২৪টিতে হারে মাশরাফি বিন মুর্তজা-মুশফিকুর রহিমরা। চারটি মাচ ড্র হয়, পরিত্যক্ত হয় তিনটি ম্যাচ।

হাথুরুসিংহের অধীনে ১০টি টেস্ট খেলে তিনটিতে জিতেছে বাংলাদেশ। মুশফিকের দল হারে তিনটিতে এবং ড্র করে চারটিতে।তার সময়েই টানা পাঁচটি ওয়ানডে সিরিজ জিতে বাংলাদেশ। প্রথমবারের মতো পৌঁছায় ওয়ানডে বিশ্বকাপের কোয়ার্টার-ফাইনালে। ভারত, পাকিস্তান, দক্ষিণ আফ্রিকার মতো ক্রিকেট পরাশক্তিকে এই সময়ে ওয়ানডে সিরিজে হারান মাশরাফিরা।আর ২৯টি ওয়ানডে খেলে ১৮টিতে জিতে বাংলাদেশ। হারে ১০টিতে, পরিত্যক্ত হয় একটি ম্যাচ।হাথরুসিংহের অধীনেই টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটের ভাষা বুঝতে শিখছে বাংলাদেশ। প্রথমবারের মতো টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে হওয়া এশিয়া কাপের ফাইনালে পৌঁছায় দলটি। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপেও অস্ট্রেলিয়া, ভারতের বিপক্ষে লড়াই করে হারে তার শিষ্যরা।এই সংস্করণে ২২ ম্যাচ খেলে ৯টিতে জিতে বাংলাদেশ। হারে ১১টিতে, পরিত্যক্ত হয় দুটি ম্যাচ।শ্রীলঙ্কার সাবেক অলরাউন্ডার হাথুরুসিংহে ২৬টি টেস্ট ও ৩৫টি ওয়ানডে খেলেছেন।

২০০৫ সালের ডিসেম্বরে এক বছরের জন্য সংযুক্ত আরব আমিরাতের কোচ হিসেবে দায়িত্ব নেন হাথুরুসিংহে। এরপর তিন বছরের জন্য শ্রীলঙ্কা ‘এ’ দলেরও কোচ হন তিনি।২০০৯ সালে শ্রীলঙ্কা ট্রেভর বেলিসের অধীনে জাতীয় দলের সহকারী কোচ হিসেবে কাজ শুরু করেন হাথুরুসিংহে। তবে ২০১০ সালের জুনে শৃঙ্খলাজনিত কারণে বরখাস্ত করা করা হয় তাকে। এরপর তিনি অস্ট্রেলিয়ায় চলে যান। তার পরিবার এখন সেখানেই আছে।

২০১১ সালের ওয়ানডে বিশ্বকাপে কানাডার কোচিং উপদেষ্টা হিসেবে কাজ করেন হাথুরুসিংহে। সেই বছরের সেপ্টেম্বরে অস্ট্রেলিয়ার নিউ সাউথ ওয়েলসের সহকারী কোচের দায়িত্ব পান তিনি। বাংলাদেশের কোচ হয়ে আসার আগে এর পাশাপাশি বিগ ব্যাশ লিগে সিডনি থান্ডারের প্রধান কোচ হিসেবেও কাজ করছিলেন।