জননী সাহসিকা হিসাবে খ্যাত কবি বেগম সুফিয়া কামালের ১০৫তম জন্মবার্ষিকী সোমবার । বরিশালের শায়েস্তাবাদস্থ রাহাত মঞ্জিলে ১৯১১ সালের এইদিনে (২০ জুন) বেলা ৩টায় তিনি জন্মগ্রহণ করেন।তার পিতার নাম সৈয়দ আবদুল বারী এবং মায়ের নাম সৈয়দা সাবেরা খাতুন। ১৯১২ সালে তাঁর বাবা সাধকদের অনুসরণে নিরুদ্দেশ যাত্রা করেন। ফলে তার মা সাবেরা খাতুন অনেকটা নিরুপায় হয়ে বাবার বাড়ীতে এসে আশ্রয় নেন। এই কারণে সুফিয়া কামালের শৈশব কাটে নানা বাড়ীতে ।
মামাতো ভাই সৈয়দ নেহাল হোসেনের সাথে ১৯২৩ সালে সুফিয়া কামালের বিয়ে হয়। বিয়ের পর তারা বরিশাল শহরে চলে আসেন। এসময় বরিশাল থেকে সরল কুমার দত্ত সম্পাদিত ‘তরুণ’ পত্রিকার সাথে নেহাল হোসেন জড়িত হন। তার প্রচেষ্টায় এই পত্রিকার প্রথম বর্ষ তৃতীয় সংখ্যায় মিসেস এস এন হোসেন নামে সুফিয়া কামালের প্রথম লেখা ‘সৈনিক বধু’ প্রকাশিত হয়।
এসময় বাংলার অন্যতম গীতিকবি কামিনী রায় বরিশালে আসেন। সুফিয়া কামাল কবিতা লিখেন শুনে তিনি নিজে সুফিয়ার বাসায় গিয়ে তাঁকে উৎসাহিত করেন।
সুফিয়া কামাল জীবদ্দশায় অসংখ্য কবিতা, গল্প, ভ্রমণকাহিনী এবং স্মৃতি কথা লিখেছেন। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য কাব্যগ্রস্থ হচ্ছে সাঁঝের মায়া, মায়া কাজল, মন ও জীবন, শান্তি ও প্রার্থনা, উদাত্ত পৃথিবী, দিওয়ান এবং মোর জাদুদের সমাধি পরে। সোভিয়েট দিনগুলি তার ভ্রমণ কাহিনী এবং একাত্তরের ডায়েরী অন্যতম স্মৃতি কথা ।
লেখালেখির জন্য তিনি ৫০টির বেশী পুরস্কার অর্জন করেছেন। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য কয়েকটি হচ্ছে, বাংলা একাডেমী পুরষ্কার, একুশে পদক, স্বাধীনতা দিবস পদক সোভিয়েট লেনিন পদক, বেগম রোকেয়া পদক, জাতীয় কবিতা পরিষদ পুরস্কার।
মুক্তিযুদ্ধসহ বাঙ্গালীর সমস্ত প্রগতিশীল আন্দেলনে ভূমিকা পালনকারি সুফিয়া কামাল ১৯৯৯ সালের ২০ নভেম্বর বার্ধক্যজনিত কারণে মৃত্যুবরণ করেন। সম্পূর্ণ রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় ২৮ নভেম্বর তাঁর ইচ্ছানুযায়ী তাঁকে আজিমপুর কবরস্থানে সমাহিত করা হয়।