ফতোয়া প্রস্তুত
মসজিদ, মন্দির, গির্জা তথা সব ধর্মীয় উপাসনালয়ে হামলা এবং ইসলামের নামে গুপ্তহত্যার বিরুদ্ধে দেশের ১ লাখ ১ হাজার ৫২৪ জন শীর্ষ আলেম স্বাক্ষরিত ফতোয়া প্রকাশ করা হবে আগামী শনিবার। দেশের ইসলামি চিন্তাবিদ, মুফতি, আলেম-ওলামা এতে স্বাক্ষর করেছেন। ৩০ খণ্ডের এই ফতোয়ার মূল বিষয় থাকবে ৩৫ পৃষ্ঠাজুড়ে। এটি মানুষের মাঝে ছড়িয়ে দিতে ১ কোটি কপি করা হবে। এতে করে ১৬ কোটি মানুষের মাঝে জঙ্গিবাদবিরোধী বার্তা পৌঁছে যাবে।

শনিবার (১৮ জুন) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে এক সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে এই ফতোয়া প্রকাশ করা হবে।বৃহস্পতিবার রাতে রাজধানীর খিলগাঁও চৌধুরীপাড়া ঝিল মসজিদ সংলগ্ন ইকরা বাংলাদেশ ইসলামি গবেষণা পরিষদ কার্যালয়ে দৈনিকবার্তার সঙ্গে আলাপকালে এ তথ্য জানান এর উদ্যোক্তা বাংলাদেশ জমিয়তুল উলামার চেয়ারম্যান ও ঐতিহাসিক শোলাকিয়ার ইমাম মাওলানা ফরিদউদ্দীন মাসঊদ।

তিনি বলেন, ‘সর্বসম্মতভাবে গৃহীত ওই ফতোয়ায় বলা হয়েছে, অমুসলিম, সংখ্যালঘু ও ধর্মনিরপেক্ষ ব্যক্তিদের হত্যা করা ইসলামে নিষিদ্ধ। আমরা এসব হত্যাকে অবৈধ ও মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ হিসেবে আখ্যায়িত করেছি।’ মাওলানা মাসঊদ জানান, গত ২৩ জানুয়ারি একটি ওলামা সম্মেলনের আহ্বান জানানো হয়েছিল। সেই দিন থেকে এ বিষয়ে কাজ শুরু করা হয়। এই ফতোয়া দেয়ার বিষয়ে স্বাক্ষর গ্রহণ শুরু হয়, ফেব্রুয়ারি মাসে স্বাক্ষর গ্রহণ সম্পন্ন হওয়ার কথা থাকলেও শেষ হয় মে মাসে।

এদিকে গত বুধবার থেকে টানা সাত দিনব্যাপী সারাদেশে জঙ্গিবিরোধী অভিযান শুরু চালিয়েছে পুলিশ। এমন সময়ে জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে ফতোয়া ঘোষণা করা হচ্ছে। এ ব্যাপারে মাওলানা মাসঊদ বলেন, এই ফতোয়ায় পরিষ্কার করে বলা হয়েছে, ‘এসব হত্যাকাণ্ড জিহাদের অংশ নয়, এটা সন্ত্রাস।’

তিনি বলেন, ‘আন্তর্জাতিক মহলে দৃষ্টি আকর্ষণের জন্য আমরা লক্ষাধিক ওলামাকে সঙ্গে নিয়ে জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে এই ফতোয়া তৈরি করেছি। বর্তমানে ক্ষুদ্র একটা গোষ্ঠী সারা পৃথিবীতে ইসলামের নামে আতঙ্ক ও সন্ত্রাস সৃষ্টি করে চলছে। এরা মুসলিম অমুসলিম নির্বিশেষে নির্বিচারে নিরপরাধ ও অসহায় নারী পুরুষ, বৃদ্ধ শিশু হত্যা করে যাচ্ছে। এমনকি মসজিদ ও ধর্মীয় উপাসনালয়ে নামাজরত বা প্রার্থনারত মানুষকেও হত্যা করছে। আত্মঘাতি বোমা মেরে নিজেকে উড়িয়ে দিয়ে তা শহিদি মৃত্যু বলে ঘোষণা দিচ্ছে।’

তিনি জানান, একমাত্র জামায়াতে ইসলামী ছাড়া সব ইসলামি দল ও সংগঠন সরাসরি সমর্থন না দিলেও বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীরা ব্যক্তিগতভাবে এই ফতোয়ায় সমর্থন দিয়েছেন। হেফাজতের মহাসচিব বাবু নগরী, ইসলামী শাসনতন্ত্র অান্দোলেনর নায়েব আমির মুফতি ফয়জুল করিম, খেলাফত আন্দোলন, হাটহাজারী মাদ্রাসা, পটিয়া মাদ্রাসা, চরমোনাই মাদ্রাসাসহ দেশের শীর্ষ আলেমরা এই ফতোয়ায় একমত হয়ে স্বাক্ষর করেছেন।