বরফে রেখে ওজন বাড়িয়ে গরুর মাংস বিক্রি

গরুর মাংসের ওজন বাড়িয়ে বিক্রির অভিনব কৌশল বের করছেন ব্যবসায়ীরা। ওজন বাড়াতে বরফে রাখা হচ্ছে মাংস। এরপর সেই মাংস ক্রেতাদের কাছে বিক্রি করছেন তাঁরা। রাজধানীর হাতিরপুল কাঁচাবাজারে শুক্রবার এমন ঘটনা ধরা পড়েছে র‌্যাবের ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযানে।এ ছাড়া দাম বেশি রাখার কারণে একই বাজারের আটজন মুরগি ও চারজন মাছ ব্যবসায়ীকে জরিমানা করা হয়েছে। সব মিলিয়ে ১৬ জন মাংস ও মাছ ব্যবসায়ীর কাছ থেকে ১ লাখ ১৩ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করেছেন ভ্রাম্যমাণ আদালতের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সারওয়ার আলম।শুক্রবার সকাল সাড়ে নয়টার দিকে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের বাজার কর্মকর্তা মনিরুজ্জামানকে সঙ্গে নিয়ে হাতিরপুলের কাঁচাবাজারে এ অভিযান চালানো হয়। প্রায় আড়াই ঘণ্টার অভিযানে এই বাজার থেকে জব্দ করা হয়েছে ১০০ কেজি গরুর মাংস।

ভ্রাম্যমাণ আদালতের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সারওয়ার আলম বলেন, এই বাজারের তিন ব্যবসায়ী বরফ-ভর্তি কর্কশিটের বক্সের ভেতর গরুর মাংস রাখতেন। বরফে রাখা হলে মাংস শক্ত হয় ও ওজন বৃদ্ধি পায়। এভাবে চার-পাঁচ দিন মাংস রেখে দেওয়া হতো। এই মাংস আবার সদ্য জবাই করা গরুর মাংসের সঙ্গে মিশিয়ে দিতেন। এভাবে সিটি করপোরেশনের নির্ধারিত মূল্য ৪২০ টাকায় বিক্রি করে বেশি লাভ করতেন এই তিন মাংস ব্যবসায়ী।তবে বরফে না রাখলেও সিটি করপোরেশনের নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে ৩০ টাকা বেশি রেখে ৬০০ টাকায় প্রতি কেজি খাসির মাংস বিক্রি করছিলেন হাতিরপুল বাজারের এক ব্যবসায়ী।

অন্যদিকে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের তালিকার চেয়ে ১২৫ টাকা বেশি মূল্যে ৫০০ টাকা প্রতি কেজি দেশি মুরগি, পাকিস্তানি কক জাতের মুরগি ২৬০ টাকা বদলে ৩০০ টাকায় বিক্রি করছিলেন বাজারের আট ব্যবসায়ী। এ ছাড়ারুুই মাছের মূল্য প্রতি কেজি ৩০০ টাকা হলেও হাতিরপুল বাজারে তা বিক্রি হতো ৫৫০ টাকায়। এ জন্য এখানকার চারজন মাছ ব্যবসায়ীকে জরিমানা করা হয়।রাজধানীর হাতিরপুল বাজারে অভিযান চালিয়ে পচা, মেয়াদোত্তীর্ণ মাছ-মাংস ও অন্যান্য খাদ্যপণ্য বিক্রির দায়ে ১ লক্ষ ১৩ হাজার টাকা জরিমানা করেছে র‌্যাব।

শুক্রবার সকাল সাড়ে দশটায় ব্যাবের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সারোয়ার আলমের নেতৃত্বে র‌্যাবের একটি দল হাতিরপুল বাজারে অভিযান পরিচালনা করেন।বাজারে পচা মাছ, মাংসসহ কয়েকটি দোকানে বেশি দামে পণ্য বিক্রির অভিযোগে পৃথকভাবে ১৬ ব্যবসায়ীকে মোট ১,১৩০০০ টাকা জরিমানা করা হয়। এ সময় নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সারোয়ার আলম সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে বলেন, আমরা অভিযান চালাই, জরিমানা করি, শাস্তি দিই। কিন্তু চলে যাওয়ার পর আবারও একই কাজ করে। এর জন্য শুধুমাত্র জরিমানা করে বা শাস্তি দিয়ে বাজার নিয়ন্ত্রণ করা যাবে না। এর জন্য ব্যবসায়ীদের নৈতিকভাবে সচেতন হতে হবে।বাজার মনিটরিং ঠিকভাবে করা হচ্ছে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, অভিযানে আসার আগে আমাদের টিম এসে বাজার পরিদর্শন করে যায়। ফলে আমরা জানতে পারি কোথায় কি হচ্ছে। আমরা সেভাবেই ব্যবস্থা নিয়ে থাকি।